You are currently viewing ‘ভারতবর্ষ’ গল্প/প্রশ্নমান-৫ ||  ‘ভারতবর্ষ’-গল্পের নামকরণ

‘ভারতবর্ষ’ গল্প/প্রশ্নমান-৫ || ‘ভারতবর্ষ’-গল্পের নামকরণ

প্রশ্ন: ‘ভারতবর্ষ’-গল্পের নামকরণ কতখানি সার্থক হয়েছে তা আলোচনা করো। (৫)


উত্তর: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের লেখা ‘ভারতবর্ষ‘ গল্পটিতে ভারতবর্ষ ভিন্ন অন‍্য কোন স্থানের নাম নেই।এটি ভারতবর্ষেরই গল্প।আমাদের দেশ বহু ভাষাভাষী মানুষের দেশ-তাই কারণে অকারণে তাদের মধ‍্যে প্রায়ই বেধে যায় দাঙ্গা ও প্রাণহানী।কুসংস্কার এবং সাম্প্রদায়িকতা আমাদের দেশকে অনেকটা পিছিয়ে রেখেছে এর কারণ অশিক্ষা এবং অজ্ঞানতা। মিথ‍্যে বিভেদ সৃষ্টিকারী ধর্মিয় ভাবাবেগ মানুষকে তথা একটি জাতিকে কতখানি নীচে নামাতে পারে তা লেখক আলোচ‍্য গল্পটিতে স্বল্প পরিসরে ফুটিয়ে তুলেছেন।
গল্পটিতে আমরা দেখি – পিচের সড়ক বাঁক নিয়েছে যেখানে সেখানেই গড়ে উঠেছে ছোট্ট বাজার।আর এই বাজারে গ্ৰামের মানুষেরা অকাল দুর্যোগের দিনে ধানের প্রচন্ড ক্ষতি হবে বলে দোকানে আড্ডা দিতে দিতে আল্লা-ভগবানকে দোষারোপ করতে থাকে।এক চাষী জানায়–
মাথার উপর আর কোন শালা নেই রে -কেউ নাই।”
গল্পটির মোড় পরিবর্তিত হয়েছে একটি ভিখারি বুড়িকে কেন্দ্র করে।গ্ৰামের বটতলাতে পড়ে থাক বুড়ির দেহকে মৃত মনে করে গ্ৰামের হিন্দুরা তাকে নদীতে ফেলে দিয়ে আসে আর মুসলমানেরা চ‍্যাংদোলায় করে পুনরায় ফিরিয়ে আনে।এরপর মৃতদেহ সৎকারকে কেন্দ্র করে চারদিকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।উভয় পক্ষকে ঠেকিয়ে রাখতে চৌকিদার হিমশিম খায়।এরপর বুড়ি উঠে দাঁড়ায় এবং জনতাদের উদ্দেশ‍্যে গালিগালাজ করে।বুড়িকে প্রশ্ন করা হয় বুড়ি তুমি হিন্দু না মুসলমান উত্তরে বুড়ি জানায়-
” আমি কী তা দেখতে পাচ্ছিস নে?চোখ গেলে দোব- যা,যা পালা:।” এরপর বুড়ি শেষ রোদের আলোয় দূরের দিকে ক্রমশ আবছা হয়ে যায়।
গল্পটিতে লেখক বুড়ি চরিত্রের মধ‍্যে দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন এই দেশ হিন্দুর নয়,মুসলমানের নয়,এই দেশ সমগ্ৰ ভারতবাসীর।সেই দিক থেকে বিচার করলে আলোচ‍্য গল্পের নামকরণ ‘ভারতবর্ষ’ সার্থক ।

Leave a Reply