‘আমি দেখি’ কবিতার প্রশ্নোত্তর। উচ্চমাধ্যমিক বাংলা
“আরোগ্যের জন্যে ঐ সবুজের ভীষন দরকার।”-বক্তা কে?’ঐ সবুজ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? সবুজের দরকার কেন?(১+২+২=৫)
অথবা
“আমার দরকার শুধু গাছ দেখা।” — বক্তা কে ? তার গাছ দেখা দরকার কেন ? (১+৪=৫)
অথবা
“গাছগুলো তুলে আনো,বাগানে বসাও।” –এই মন্তব্যের পরিপ্রক্ষিতে গাছেদের সম্পর্কে কবির যে মনোভাব ব্যক্ত হয়েছে তা ‘আমি দেখি’ কবিতা অবলম্বনে আলোচনা করো । ৫
উত্তর:
শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘আমি দেখি’ কবিতার উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা হলেন-স্বয়ং কবি।
■ ‘আমি দেখি’ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে সবুজের সংস্পর্শে আসতে চেয়েছেন।নাগরিক জীবনের হতাশা, ক্লান্তি ও ধূসরতা থেকে মুক্তির জন্য কবি সবুজের দিকে অগ্ৰসর হয়েছেন।কবির যে সবুজের প্রয়োজন -তা শুষে নিতে পারে শিল্পসভ্যতার যাবতীয় অ-সুখকে তথা দূষণ কে। আরোগ্য লাভের জন্য তথা রোগ মুক্তির জন্য গাছের সবুজটুকু শরীরে যে দরকার তা বোঝাতে গিয়েই কবি ‘ঐ সবুজ’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
■ ‘আমি দেখি‘ কবিতায় কবি প্রকৃত পক্ষে বৃক্ষ বন্দনাই করেছেন।কবিতাটির সূচনাতেই কবি জানিয়েছেন— “গাছগুলো তুলে আনো,বাগানে বসাও /আমার দরকার শুধু গাছ দেখা / গাছ দেখে যাওয়া /গাছের সবুজটুকু শরীরে দরকার / আরোগ্যের জন্যে ঐ সবুজের ভীষন দরকার ” অর্থাৎ,কবি নাগরিক জীবনের ক্লান্তি,হতাশা ও একঘেয়েমি থেকে মুক্তির জন্য গাছ গুলিকে তুলে এনে শহরের বাগানে বসাতে বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন-‘শহরের অসুখ’ থেকে মুক্তির জন্য,আরোগ্য লাভের জন্য সবুজের একান্ত প্রয়োজন।কবি জানেন একমাত্র সবুজের সংস্পর্শেই সেই অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাই গাছের সবুজটুকু যে তাঁর শরীরে দরকার তা বলতে তিনি দ্বিধা বোধ করেননি। বহুদিন জঙ্গলে যাওয়া হয়নি বলে,শহরে থাকার ফলে কবি দেখেছেন নগর সভ্যতা কীভাবে একটু একটু করে সবুজকে গ্ৰাস করে ফেলেছে।তাই কবি বলেছেন— “তাই বলি,গাছ তুলে আনো / বাগানে বসাও আমি দেখি।” অর্থাৎ, কবি গাছগুলিকে তুলে এনে শহরের বাগানে বসাতে বলেছেন।কেননা কবির চোখ সবুজ চায়,আর দেহ চায় সবুজ বাগানের সান্নিধ্য।সমগ্ৰ কবিতাতেই সবুজের প্রতি আকাঙ্খা ব্যক্ত হয়েছে।আসলে উন্মুক্ত প্রকৃতির বুকে নিজেকে মেলে ধরতে না পেরেই কবির মনে হয়েছে বাগানে গাছ বসানো প্রয়োজন।এই প্রয়োজন তাঁর চেতনাকে সজীব রাখার জন্য,শারীরিক ও মানসিক আরোগ্য লাভের জন্য।