You are currently viewing ‘কে বাঁচায়,কে বাঁচে’ গল্প অবলম্বনে টুনুর মা চরিত্রটির ভূমিকা আলোচনা কর। (৫)

‘কে বাঁচায়,কে বাঁচে’ গল্প অবলম্বনে টুনুর মা চরিত্রটির ভূমিকা আলোচনা কর। (৫)

প্রশ্ন ‘কে বাঁচায়,কে বাঁচে’ গল্প অবলম্বনে টুনুর মা চরিত্রটির ভূমিকা আলোচনা কর। (৫)


উত্তর: মানিক বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ের লেখা ‘কে বাঁচায়,কে বাঁচে’ গল্পের প্রধান চরিত্র মৃত‍্যুঞ্জয়ের স্ত্রী হল এই টুনুর মা।টুনুর মা কে আলোচ‍্য গল্পের একটি অপ্রধান চরিত্র হিসাবে দেখানো হলেও মৃত‍্যুঞ্জয়ের স্ত্রী হিসাবে তার ভূমিকা কোন অংশে কম ছিল না।গল্পটিতে এই চরিত্রটির কোন নাম নেই।সমগ্ৰ গল্পটিতেই তিনি মৃত‍্যুঞ্জয়ের স্ত্রী তথা টুনুর মা হিসাবে পরিচিত।যখন মৃত‍্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয় হয়ে ওঠে তখন আমরা এই টুনুর মা এর সঙ্গে পরিচিত হই।টুনুর মা কেবল উদার,স্নেহময়ী,মমতাময়ী ছিল না,তিনি স্বামীকে এবংস্বামীর আদর্শকেও সম্মান করতেন।
গল্পটিতে আমরা দেখি , টুনুর মা যখন অসুস্থ এবং তার বাড়ির অবস্থা যখন শোচনীয় তখন তিনি বিছানায় পড়ে থেকেই বাড়ির ছেলে বুড়োকে তাগাদা দিয়ে স্বামীর খোঁজে বাইরে পাঠান।কেননা মৃত‍্যুঞ্জয় আজকাল ঠিকমতো বাড়িতে না এসে,অফিসে না গিয়ে শহরের আদি-অন্তহীন ফুটপাথে ঘুরে ঘুরে অনাহারী মানুষদের দেখে।তাই টুনুর মা নিখিলকে সকাতরে অনুরোধ করে যে–
“সে যেন একটু নজর রাখে মৃত‍্যুঞ্জয়ের দিকে,একটু যেন সে সঙ্গে থাকে তার।”
এর মধ‍্যে দিয়ে টুনুর মার সংসারের প্রতি যেমন দায়বদ্ধতা যেমন প্রকাশ পেয়েছে তেমনি প্রকাশ পেয়েছে স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।এইখানেই শেষ নয়,টুনুর মা নিখিলকে জানায় তিনি যদি বিছানা থেকে উঠতে পারতেন তাহলে মৃত‍্যুঞ্জয়ের সঙ্গেই ঘুরতেন।কেননা মৃত‍্যুঞ্জয়ের সঙ্গে থেকে থেকে তিনিও মৃত‍্যুঞ্জয়ের মতো হয়ে গেছেন।প্রসঙ্গত টুনুর মা নিখিলকে জানায়—
“উনি পাগল হয়ে যাচ্ছেন,আমারও মনে হচ্ছে পাগল হয়ে যাব।ছেলেমেয়েগুলির জন‍্য সত‍্যি আমার ভাবনা হয় না।কেবলি মনে পড়ে ফুটপাথের ওই লোকগুলির কথা।আমাকে দু-তিন দিন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।”
অর্থাৎ মৃত‍্যুঞ্জয়ের মতো তিনিও যে পাগল হয়ে যাবেন তা বলতে দ্বিধা করেন নি। ছেলেমেয়েদের জন‍্য ভাবনা চিন্তা না থাকলেও ফুটপাথের সেই অনাহারী লোকেদের কথা টুনুর মার কেবলি মনে পড়ে। এরপর টুনুর মা নিখিলকে জানায়-
“আচ্ছা, কিছুই কি করা যায় না।” কেননা এই সমস্ত ভাবনাতেই মৃত‍্যুঞ্জয়ের মাথা খারাপ হচ্ছে,আর দারুণ একটা হতাশা জেগেছে ওর মনে।তাই টুনুর মা জানায়--“একেবারে মুষড়ে যাচ্ছেন দিনকে দিন।”
আলোচ‍্য গল্পটিতে গল্পকার টুনুর মার চরিত্রটিকে অপ্রধান চরিত্র হিসাবে দেখালেও টুনুর মার উদার,স্নেহময়ী,মমতাময়ী রুপটিকে যেমন ফুটিয়ে তুলেছেন তেমনি স্বামীর প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা,ভালোবাসার স্বরূপটিও অঙ্কন করেছেন।
—————————————-

Leave a Reply