You are currently viewing ভারতবর্ষ গল্প/দ্বাদশ শ্রেণি

ভারতবর্ষ গল্প/দ্বাদশ শ্রেণি

প্রশ্ন “কতক্ষণ সে এই মারমুখী জনতাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারত কে জানে।”-সে বলতে এখানে কার কথা বলা হয়েছে?জনতা মারমুখী হয়ে উঠেছিল কেন ? (১+৪=৫)

অথবা “দেখতে দেখতে উত্তেজনা ছড়াল চারদিকে।”-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনার বিবরণ দাও।(৫)

উত্তর: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের লেখা ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে ‘সে’ বলতে এখানে গ্ৰামের চৌকিদারের কথা বলা হয়েছে। 

‘ভারতবর্ষ’ গল্পে আমরা দেখি পিচের সড়ক বাঁক নিয়েছে যেখানে সেখানেই গড়ে উঠেছে ছোট্ট বাজার ।আর এই বাজারে চাষা-ভুষা মানুষেরা অকাল  দুর্যোগের দিনে চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে দিতে আল্লা-ভগবানের মুন্ডুপাত করতে থাকে।এরপর গল্পের মোড় পরিবর্তিত হয় এক ভিখারি বুড়িকে কেন্দ্র করে।চায়ের দোকানে চা খাবার পর বুড়ি বটতলায় এসে সেখানে পা ছড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। পরের দিন অনেক বেলা হবার পর বুড়িকে উঠতে না দেখে চাওলা জগা অনুমান করে যে বুড়ি নির্ঘাত মারা গেছে।এরপর চৌকিদারের পরামর্শে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা বুড়িকে বাঁশের চ্যাংদোলায় করে নদীতে ফেলে দিয়ে আসে।আবার বিকেলের দিকে মুসলমানেরা বুড়িকে পুনরায় ফিরিয়ে আনে।এরপর বুড়ির মৃতদেহ সৎকারকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়।হিন্দুপক্ষ দাবী করে যে,তারা বুড়িকে ‘হরিবোল’,’শ্রীহরি’ প্রভৃতি বলতে শুনেছে।আর মুসলমান পক্ষ দাবী করে যে,তারা বুড়িকে ‘লাইলাহা ইল্লাল’বলতে কিংবা ‘কলমা’ পড়তে শুনেছে।এরপর উভয় পক্ষের মধ্যে বচসা আরো বেড়ে যায়,তর্কাতর্কি উত্তেজনা চলতে থাকে।প্রসঙ্গত লেখক জানিয়েছেন– “দেখতে দেখতে প্রচন্ড উত্তেজনা ছড়াল চারদিকে।” এরপর দোকানগুলোর ঝাপ বন্ধ হয়ে যায়,তারপরই দেখা যায় গ্ৰাম থেকে অনেক লোক দৌড়ে আসছে আর সবার হাতে রয়েছে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র।এদিকে বুড়ির চ্যাংদোলাটা ছিল পিচের উপর আর সেটাকে নিয়ে উভয় পক্ষই টানাটানি করে আর পরস্পরকে গালাগালি দেয়। এই রকম পরিস্থিতিতে মোল্লা সাহেবের উষ্কানিতে মুসলিম পক্ষ,আর ভটচাজমশায়ের উষ্কানিতে হিন্দু পক্ষ সংগ্ৰামে অবতীর্ণ হয়। আর গ্ৰামের চৌকিদার পিচ রাস্তায় লাঠি ঠুকে উভয় পক্ষকে ‘সাবধান’ ,’খবরদার‘ বলে চেঁচিয়ে ওঠে মারমুখী জনতাকে ঠেকিয়ে রাখতে চেষ্টা করে।তাই লেখক জানিয়েছেন– “কতক্ষণ সে এই মারমুখী জনতাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারত কে জানে।” এইভাবে বুড়ির মৃতদেহ সৎকারকে কেন্দ্র করে জনতা উত্তেজিত এবং মারমুখী হয়ে উঠেছিল।

Leave a Reply