You are currently viewing কাজী নজরুল ইসলাম || Kaji Najrul Islam

কাজী নজরুল ইসলাম || Kaji Najrul Islam

বাংলা কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান আলোচনা করো || ‘বিদ্রোহী কবি’ কাকে বলা হয় ? তাঁর কাব্যে কীভাবে বিদ্রোহ ফুটে উঠেছে আলোচনা করো ||

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম
# জন্ম- বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে ১৮৯৯ খ্রি: ২৪ মে ।

# ডাকনাম- দুখু মিঞা ।

# পিতা – কাজী ফকির আহমেদ ।

# মাতা– জাহেদা খাতুন ।

# স্ত্রী- প্রমীলা সেন গুপ্ত ।

# মৃত্যু- ১৯৭৬ খ্রি: ২৯ আগস্ট  ঢাকাতে কবির দেহান্তর ঘটে এবং সেখানেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়।

কাব্য বৈশিষ্ট্য:

নজরুলের কাব্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি হল-

১. নজরুলের কাব্যে বাস্তববাদী দৃষ্টি ভঙ্গীর প্রকাশ লক্ষ্য করা যায়।

২. মানবতার সুর শোনা যায়।

৩. পরাধীনতার বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য বিদ্রোহ ধ্বনিত হয়েছে।

৪. ধর্মীয় গোঁড়ামি ও সামাজিক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চর হয়েছেন।

৫.রবীন্দ্র বিদ্রোহ নজরুলের কবিতার এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

৬. সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার একান্ত প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়।

৭. নাগরিক চিন্তার প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়।

৮. ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের মাধ্যমে বাস্তজীবনের বহু ঘটনাকে কাব্যে তুলে ধরেছেন ।  

কাজী নজরুল ইসলামের কাব্য গ্রন্থ:


*নজরুলের প্রথম কবিতা “মুক্তি ” প্রকাশিত হয় ১৯১৯ খ্রি: ” বঙ্গীয় মুসলমান ” সাহিত্য পত্রিকায়।
অগ্নিবীণা (প্রথম কাব্য ১৯২২)

দোলন চাঁপা (১৯২৩)

বিষের বাঁশি (১৯২৪)

ভাঙার গান(১৯২৪)

প্রলয় শিখা(১৯২৪)

ছায়ানট(১৯২৫)

পূবের হাওয়া(১৯২৫)

চিত্তনামা(১৯২৫)

সাম্যবাদী(১৯২৬)

সর্বহারা(১৯২৬)

ফনিমনসা(১৯২৭)

সিন্ধু হিন্দোল (১৯২৭)

ঝিঙে ফুল(১৯২৮)

জিঞ্জীর(১৯২৮)

সন্ধ্যা(১৯২৯)

চক্রবাক(১৯২৯)

সাতভাই চম্পা(১৯৩৩)

নির্ঝর(১৯৩৯)

নতুনচাঁদ (১৯৩৯) 

* নজরুলের বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থ থেকে নির্বাচিত কবিতা সংকলনটির নাম “সঞ্চিতা” , সংকলনটি প্রথম ধূমকেতু পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

কাজী নজরুল ইসলামের গল্প সংকলন:

ব্যথার দান(১৯২২)

রিক্তের বেদনা(১৯২৪)

শিউলি মালা(১৯৩১)


কাজী নজরুল ইসলামের উপন্যাস:


বাঁধন হারা(১৯২৭)

কুহেলিকা(১৯২৭)

মৃত্যুক্ষুধা(১৯৩০)

জীবনের জয়যাত্রা(১৯৩৯)

নজরুল শুধু কবি হিসেবে নয়, ক্রমে তিনি গায়ক, গীতিকার ও সুরকার হিসেবেও সুপরিচিত ছিলেন।

সন্মান ও স্বীকৃতি:


* ভারত সরকার কাজী নজরুল ইসলাম কে ১৯৬০ খ্রি: “পদ্মভূষণ” উপাধিতে ভূষিত করেন।
*  ১৯৭৫ খ্রি: বাংলাদেশ সরকার তাঁকে জাতীয় কবির মর্যাদা দেন এবং তাঁকে ” একুশে পদক” দিয়ে সন্মানিত করেন।

কাজী নজরুল ইসলামের কিছু বিখ্যাত কবিতার লাইন :

১।ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান
আসি’ অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন বলিদান ?
(উৎস –‘সর্বহারা’ কাব্যের ‘কান্ডারী হুঁশিয়ার’)

২। মহা –বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,
অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ, ভূমে রণিবে না-
বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।
( ‘বিদ্রহী’ কবিতা)

৩। বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
বিশ্বে যা-কিছু এল পাপ-তাপ বেদনা অশ্রুবারি
অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী।
(উৎস- ‘নারী’ কবিতা)

৪। গাহি সাম্যের গান –
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই , নহে মহীয়ান।
( উৎস- ‘মানুষ’কবিতা)

৫। ” যেথা সবে-সম-পাপী
আপন পাপের বাটখারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি
জবাবদিহির কেন এত ঘটা যদি দেবতাই হও
টুপি পড়ে টিকি রেখে সদা বলো যেন তুমি পাপী নও
পাপী নও যদি কেন এ ভড়ং ট্রেডমার্কার ধুম
পুলিশি পোশাক পরিয়া হয়েছ পাপের আসামী গুম।
 ”
( উৎস- ‘পাপ’ কবিতা)

কাজী নজরুল ইসলামের আরো বাণী ও উক্তি পড়তে হলে এখানে ক্লিক করুন … কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত বাণী ও উক্তিসমূহ। Kazi Nazrul Islam Quotes

কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালির হৃদয়ের কবি । গানে, কবিতায়, মানবিক আবেদনে আজীবন তিনি বাঙালির সাহিত্য সংস্কৃতির আসনকে অলংকৃত করে থাকবেন ।

Leave a Reply