নাসিক্যীভবন | স্বতোনাসিক্যীভবন | বিনাসিক্যীভবন |নাসিক্য বর্ণ | ক্ষতিপূরক দীর্ঘীভবন

নাসিক্যীভবন , স্বতোনাসিক্যীভবন, বিনাসিক্যীভবন , নাসিক্য বর্ণ, ক্ষতিপূরক দীর্ঘীভবন👇👇👇👇

নাসিক্য বর্ণ কাকে বলে ? 

ব্যঞ্জন বর্ণের তালিকার মধ্যে থাকা বর্গীয় বর্ণের পঞ্চম বর্ণগুলিকে নাসিক্য ব্যঞ্জন বলে। 

সেগুলি হলঃ ঙ ,ঞ , ণ ,ন, ম ।                               

কেন এদের নাম নাসিক্য ব্যঞ্জন ? 

কারণ এই পাঁচটি বর্ণ উচ্চারণের সময় শ্বাসবায়ুর কিছুটা নাসিকা বা নাক দিয়ে নির্গত হয় । অর্থাৎ এরা নাকে নাকে উচ্চারিত হয় বলে এদের নাম নাসিক্য বর্ণ বা নাসিক্য ব্যঞ্জন। 

 নাসিক্যীভবন কাকে বলে ? 

কোনো শব্দের অন্তর্গত নাসিক্য ব্যঞ্জন লুপ্ত হয়ে পূর্ববর্তী স্বরধ্বনিকে অনুনাসিক করে তুললে তাকে নাসিক্যীভবন বলে। 

নাসিক্যীভবনের উদাহরণ:

          চন্দ্ৰ > চাঁদ

          পঙ্ক >পাঁক 

          বংশ > বাঁশ 

          দন্ত > দাঁত

          কণ্টক > কাঁটা

          হংস > হাঁস  ইত্যাদি । 

বিশ্লেষণঃ 

এটা ব্যাখ্যা করার আগে একটা বিষয় জেনে রাখা দরকার। তা হল ক্ষতিপূরক দীর্ঘীভবন বা মাত্রাপূরক দীর্ঘীভবন । কেন না নাসিক্যীভবন ঘটলে ক্ষতিপূরক দীর্ঘীভবন বা মাত্রাপূরক দীর্ঘীভবনও একইসঙ্গে ঘটে।   

ক্ষতিপূরক দীর্ঘীভবন আসলে কী ?  

শব্দ মধ্যস্থিত কোন বর্ণ লুপ্ত হলে সেই শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য একটি দীর্ঘস্বর ‘আ’ এর আগমণ ঘটে। একেই বলে ক্ষতিপূরণমূলক দীর্ঘীভবন । 

যেমন – কর্ণ > কান 

            পদ > পা  

   এখানে একটি করে বর্ণ লুপ্ত হয়েছে বলেই ‘অ’ ধ্বনি ‘আ’ দীর্ঘস্বরে পরিণত হয়েছে। 

নাসিক্যীভবন কীভাবে ঘটেঃ 

পঙ্ক > পাঁক      – এই উদাহরণটি ভাঙলে দেখা যাবেঃ  

প্‌ + অ+ ঙ্‌  +ক্‌ + অ > প্‌ + আঁ + ক্‌ + অ  

  (দেখ এখানে ‘অ’ থেকে ‘আ’ হয়েছে। ‘অ’ হ্রস্ব স্বর, ‘আ’ দীর্ঘ স্বর),  অর্থাৎ লুপ্ত বর্ণ ‘ঙ’ এর শূন্যস্থানে ক্ষতিপূরণ করার জন্য দীর্ঘীভবন ঘটেছে এবং সেই সঙ্গে লুপ্ত ‘ঙ্‌’ -এর শূন্যস্থানে দীর্ঘস্বর ‘আ’-এর  মাথায় চন্দ্রবিন্দু বসেছে বা ‘আ’ স্বরটি অনুনাসিক স্বরে পরিণত হয়েছে। এই ঘটনাই হল নাসিক্যীভবন।   

স্বতোনাসিক্যীভবন কাকে বলে ?  

স্ব মানে নিজে । নাসিক্য ব্যঞ্জনের লোপ বা প্রভাব ছাড়াও অনেক সময় কোনো স্বরধ্বনি অনুনাসিক হয়ে যেতে পারে। ধ্বনি পরিবর্তনের এই ঘটনাকে স্বতোনাসিক্যীভবন বলে। 

যেমনঃ  হাসি > হাঁসি

– এই উদাহরণটিতে কোনো নাসিক্য ব্যঞ্জন না থাকা সত্ত্বেও একটি স্বর স্বতো বা নিজেই অনুনাসিক হয়ে গেছে। অর্থাৎ এখানে স্বতোনাসিক্যীভবন ঘটেছে।   

স্বতোনাসিক্যীভবন এর আরো উদাহরণ দেখে নাওঃ 

কাচ > কাঁচ, 

চা > চাঁ 

পেচক > পেঁচা,  

হাসপাতাল > হাঁসপাতাল, 

পুস্তিকা >পুঁথি, 

ইষ্টক > ইঁট, 

পিপীলিকা > পিঁপড়া। 

বিনাসিক্যীভবন কাকে বলে ? 

বিনাসিক্যীভবন হল নাসিক্যীভবনের বিপরীত প্রক্রিয়া । 

কোনো শব্দের অন্তর্গত নাসিক্য ব্যঞ্জন লোপ পেলেও তার কোনো প্রভাব  থাকে না, অর্থাৎ কোনো স্বরই অনুনাসিক  হয় না  তাকে বিনাসিক্যীভবন বলে।   

যেমন:  শৃঙ্খল > শিকল

 – উপরের উদাহরণটিতে দেখাঁ যাচ্ছে ‘ঙ’ নাসিক্য ব্যঞ্জনটি লোপ পেয়েছে কিন্তু তার বদলে কোনো স্বরধ্বনি  অনুনাসিক হয়নি বা এককথায় কোনো চন্দ্রবিন্দু আসে নি।    

বিনাসিক্যীভবন  এর আরো উদাহরণ দেখে নাওঃ 

  মঞ্চ    > মাচা

 কিঞ্চিৎ > কিছু ইত্যাদি।  

 …………………………………………  

প্রত্যয় আলোচনা

১। সাহিত্যের ইতিহাস প্রাচীন ও মধ্যযুগ) MCQ

২। সমাসের MCQ practice SET

৩। সমাসের SAQ practice SET

৪। কারক অ-কারক SAQ Practice SET

৫। শব্দভাণ্ডার MCQ Practice SET

৬। কাব্যসাহিত্যের ইতিহাস (আধুনিক যুগ) MCQ

৭। ধ্বনি ও বর্ণ MCQ practice SET

Leave a Reply