tags: প্রত্যয় কাকে বলে, প্রত্যয় কথাটির অর্থ, কৃৎ প্রত্যয়, তদ্ধিত প্রত্যয়, স্ত্রী-প্রত্যয় কাকে বলে, তদ্ধিত নামের কারণ, স্বার্থিক প্রত্যয়, প্রত্যয়ের কাজ, ধাত্ববয়ব প্রত্যয়, প্রাতিপাদিক কাকে, বিভক্তি ও প্রত্যয়ের পার্থক্য, প্রত্যয়ের কাজ, । কৃৎ প্রত্যয়ের ‘গুন’, ‘বৃদ্ধি’ ও ‘ইৎ’, শূন্য প্রত্যয় কাকে,
প্রশ্ন ১। প্রত্যয় কাকে বলে ? প্রত্যয় কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তরঃ যে বর্ণ বা বর্ণগুচ্ছ ধাতু বা শব্দের পরে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে প্রত্যয় বলে।
প্রত্যয় দুই প্রকার। যথাঃ ১.কৃৎ প্রত্যয় ও ২.তদ্ধিত প্রত্যয়।
প্রশ্ন ২। প্রত্যয় কথাটির অর্থ কী ? ব্যাকরণে কী অর্থে ব্যবহৃত হয় ?
উত্তরঃ ‘প্রত্যয়’ সাধারণ অর্থ হল ‘বিশ্বাস’ । ‘প্রত্যয়’ শব্দটির অভিধানিক অর্থ হল ‘প্রতীতি’ ।
প্রত্যয়ের ব্যুৎপত্তি হল- প্রতি-ই+অ । ব্যাকরণে নতুন শব্দ গঠনের একটি কৌশল হল প্রত্যয়। আর নতুন শব্দ গঠন আলোচনা প্রসঙ্গে শব্দটি ব্যবহৃত হয় ।
প্রশ্ন ৩। কৃৎ প্রত্যয় কাকে বলে ? এর এই ‘কৃৎ’ নামের কারণ কী ?
উত্তরঃ কৃৎ প্রত্যয়ের নাম:- কৃ -ইত্যাদির সঙ্গে (অর্থাৎ ধাতুর সঙ্গে) যুক্ত হয় বলে এই প্রত্যয়ের নাম কৃৎ প্রত্যয়।
প্রশ্ন ৪। তদ্ধিত প্রত্যয় কাকে বলে ? এর এই তদ্ধিত নামের কারণ কী ?
উত্তরঃ তদ্ধিত প্রত্যয়ের নাম :- তদ্ধিত শব্দের অর্থ -তার হিত বা তার কল্যাণ । কিন্তু ব্যাকরণে কৃ বা ধাতু ছাড়া অন্য কিছু (অর্থাৎ শব্দ) -কে সঙ্গে নিয়ে অর্থ গঠন করে যে প্রত্যয় তার নাম তদ্ধিত প্রত্যয় ।
অর্থাৎ তৎ( কৃ বা ধাতু বাদে , তার ) হিত ( অর্থাৎ সঙ্গে জুড়ে থাকে) বোঝাতেই এই প্রত্যয়ের নাম তদ্ধিত প্রত্যয়।
প্রশ্ন ৫। স্ত্রী-প্রত্যয় কাকে বলে ? বাংলায় ব্যবহৃত স্ত্রী-প্রত্যয়-এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উত্তরঃ ব্যাকরণে সাধারণত স্ত্রীবাচক শব্দ তৈরির ক্ষেত্রে যে সকল প্রত্যয় ক্রিয়ামূলের শেষে যুক্ত হয়, এদেরকে স্ত্রী-প্রত্যয় বলা হয়। বিদ্যাসাগরের ‘ব্যাকরণ কৌমুদী’ গ্রন্থে স্ত্রী-প্রত্যয় এর ইংরেজি সমার্থ শব্দ হিসাবে বলা হয়েছে- feminine Affix ।
বাংলা ভাষায় স্ত্রীবাচক শব্দ তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত স্ত্রী-প্রত্যয়ের দুটি উৎস পাওয়া যায়। যথা-
i) সংস্কৃত স্ত্রী-প্রত্যয় এবং ii) বাংলা স্ত্রী-প্রত্যয়।
বাংলায় ব্যবহৃত স্ত্রী-প্রত্যয়গুলি হলো-
আ (টাপ্)- সুমন> সুমনা
ই (ইন্) – নাতি> নাতিন
ঈ (ঈপ্)- কপোত > কপোতী
ঈ (ঙীপ্) – দয়াময়> দয়াময়ী
ঈ (ঙীষ)- খেচর> খেচরী
নী – ধোপা> ধোপানী
প্রশ্ন ৬। স্বার্থিক প্রত্যয় কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ স্বার্থিক প্রত্যয় : যে প্রত্যয় যোগ করলে মূল শব্দটির অর্থ (স্বার্থ) এবং প্রত্যয়ান্ত নবগঠিত শব্দটির অর্থ অপরিবর্তীত থাকে, সেই প্রত্যয়কে স্বার্থিক প্রত্যয় বলে । মূল শব্দটির স্বার্থ অর্থাৎ নিজস্ব অর্থ অটুট থাকে বলেই এর নাম স্বার্থিক প্রত্যয় । যেমন- ‘আ’ , ‘ক’ ইত্যাদি। করবে> করবেক ( শব্দটির অর্থ অপরিবর্তীত)
প্রশ্ন ৭। প্রত্যয়ের কাজ কী ?
উত্তরঃ প্রত্যয়ের কাজ :
(i) প্রত্যয় নতুন শব্দ গঠন করে । যেমন- চল্+অন্ত=চলন্ত।
(ii) প্রত্যয় পদান্তর করতে সাহায্য করে । যেমন- লবণ+ষ্ণ্য=লাবণ্য ।
(iii) প্রত্যয় শব্দের গঠন জানতে সাহায্য করে । যেমন- বি-ধা+তৃচ্=বিধাতা ।
(iv) প্রত্যয় একাধিক শব্দের একপদী করণ করতে সাহায্য করে । যেমন- বেদ জানেন যিনি = বৈদান্তিক প্রভৃতি ।
প্রশ্ন ৮। ধাত্ববয়ব প্রত্যয় কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
উত্তরঃ যে প্রত্যয় শব্দ বা ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হলেও নতুন শব্দ গঠন না করে আরেকটি নতুন ধাতু গঠন করে , তাকে ধাত্ববয়ব প্রত্যয় বলে। যেমন– কর্+আ = করা(শিক্ষক ছাত্রদের অঙ্ক করান।) , হাত+আ=হাতা ( আমার বইগুলো কে হাতালো? )
প্রশ্ন ৯। কৃদন্ত শব্দ ও তদ্ধিতান্ত শব্দ কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
উত্তরঃ কৃৎ প্রত্যয় যুক্ত হবার পর যে শব্দ তৈরি হয় তাকে কৃদন্ত শব্দ বলে। অর্থাৎ কৃৎ(প্রত্যয়) অন্তে যার । যেমন- চলন্ত (চল+অন্ত) , গন্তব্য (গম্+তব্য) ইত্যাদি।
প্রশ্ন ১০। শূন্য প্রত্যয় কাকে বলে ? এর নাম শূন্য প্রত্যয় কেন ?
উত্তরঃ ক্বিপ্ প্রত্যয় ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হলে পুরোটাই ইৎ বা লুপ্ত হয় । তাই একে শূণ্য প্রত্যয় বলা হয় । যেমন- উদ্+ভিদ্+ক্বিপ্=উদ্ভিদ ; আ-শাস্+ক্বিপ্=আশিস্ ; বি-দ্যু+ক্বিপ্=বিদ্যুৎ ইত্যাদি ।
যেহেতু এই প্রত্যয়ের পুরোটাই ইৎ বা লুপ্ত হয় তাই এর নাম শূণ্য প্রত্যয় ।
আরো দেখে রাখতে পারো 👉 শব্দভাণ্ডার এর বিস্তারিত সহজ আলোচনা
প্রশ্ন ১১। অনুসর্গ ও প্রত্যয়ের পার্থক্য লিখ।
উত্তরঃ অনুসর্গ ও প্রত্যয়ের মধ্যে পার্থক্যঃ
ক. অনুসর্গ হল বিভক্তির সঙ্গে বা পরিবর্তে কারক বোঝাতে যে সমস্ত অখন্ড শব্দ বা অব্যয় পদ।আর প্রত্যয় হল নতুন নতুন শব্দ গঠনের বিজ্ঞান সম্মত কৌশল।
খ অনুসর্গ হল স্বতন্ত্র পদ, শব্দের সঙ্গে জোড়া লাগে না,আলাদাই থাকে। প্রত্যয় হল ধাতু বা শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি শব্দ তৈরি করে,অন্যপদের সঙ্গে জোড়া লাগে না,একই পদ।
গ. ধাতু বা শব্দের প্রথমে প্রত্যয় যোগে হয়, কিন্তু অনুসর্গ শব্দের পরেও বসে আবার স্থান বিশেষে শব্দটির পূর্বেও বসতে পারে।
প্রশ্ন ১২। বিভক্তি ও প্রত্যয়ের পার্থক্য লিখ।
উত্তরঃ বিভক্তি ও প্রত্যয়ের পার্থক্য:
ক. ধাতু বা শব্দের শেষে প্রত্যয় যোগ করে নতুন শব্দ তৈরি করে। বাক্যে প্রযুক্ত হবার উপযুক্ততা লাভ করে না, কিন্তু বিভক্তি যুক্ত ধাতু বা শব্দ পদে পরিণত হয়ে বাক্যে স্থান লাভের যোগ্যতা পায়।
খ. ধাতু বা শব্দে প্রথমে প্রত্যয় যোগ হয় , পরে বিভক্তি আসে। শব্দে শব্দ বিভক্তি বা ধাতুতে ধাতু বিভক্তি যোগ করার পর কোনো প্রত্যয় যোগ করা চলে না।
গ. যেমন- নগর+ইক=নাগরিক
‘নাগরিক’ প্রত্যয় নিষ্পন্ন শব্দের সঙ্গে ‘এর’ বিভক্তি যুক্ত করে হয়’নাগরিকের’ । এই নাগরিকের পদের পরে আর প্রত্যয় যোগ করা যায় না।
প্রশ্ন ১৩। সন্ধি ও প্রত্যয়ের পার্থক্য লিখ।
উত্তরঃ সন্ধি ও প্রতয়ের পার্থক্য :
ক. পাশাপাশি দুটো শব্দের ধনিগত মিলন হল সন্ধি। আর প্রতয় হল শব্দ বা ধাতুর সঙ্গে বর্ণ বা ধ্বনি সমষ্টির যোগ করে নতুন শব্দ সৃষ্টির কৌশল।
খ. সন্ধিতে পাশাপাশি সন্নিহিত দুটি শব্দের অর্থ থাকে। যেমন-বেদ +অন্ত=বেদান্ত। আর প্রত্যয়ের ক্ষেত্রে দুটি শব্দের অর্থ নাও থাকতে পারে। যেমন- দরিদ্র+ ষ্ণ্য=দারিদ্র্য।
গ. সন্ধিতে দুটি ধ্বনি লুপ্ত হয়ে নতুন একটি ধ্বনির উদ্ভব হয়। যেমন-মহা+ঈশ=মহেশ। কিন্তু প্রত্যয়ের ক্ষেত্রে প্রত্যয় যুক্ত হলে ধাতু বা শব্দের স্বরধ্বনির কিছু পরিবর্তন ঘটে, কখনো বা নতুন শব্দের আবির্ভাবও ঘটে। যেমন-গম+ক্তি=গতি (প্রত্যয়) , গঙ্গা+ষ্নেয় =গাঙ্গেয় (প্রত্যয়)।
প্রশ্ন ১৪। প্রকৃতি কাকে বলে ? কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তরঃ *প্রকৃতি: ভাষায় যার আর বিভাজন সম্ভব নয়, সেরকম অর্থযুক্ত অবিভাজ্য মৌলিক শব্দ বা ধাতুকে বলা হয় প্রকৃতি। যেমন-মা,হাত ,খা ইত্যাদি।
চাঁদ+পানা =চাঁদপানা ‘পানা ‘প্রত্যয় ওই অংশ বাদ দিলে ‘চাঁদ’ প্রকৃতি। সহজ কথায় প্রকৃতি-প্রত্যয় নিষ্পন্ন শব্দের প্রত্যয় অংশ বাদ দিলে যা থাকে, তাই প্রকৃতি।
**শ্রেণিবিভাগ: প্রকৃতি দুই প্রকার। যথা
ক. নাম প্রকৃতি
খ. ক্রিয়া বা ধাতু প্রকৃতি।
প্রশ্ন ১৫। প্রাতিপাদিক কাকে বলে ? উদাহরন দাও।
উত্তরঃ প্রাতিপাদিক: বিভক্তি যুক্ত নয় এমন বিশেষ্য, সর্বনাম ও বিশেষণই হল প্রাতিপাদিক।
**উদাহরণ: হাস্+ই=হাসি এখানে ‘হাস্’ হল প্রাতিপাদিক ।
গাছ +উয়া=গাছুয়া এখানে ‘গাছ’ প্রাতিপাদিক।
১৬। কৃৎ প্রত্যয়ের ‘গুন’, ‘বৃদ্ধি’ ও ‘ইৎ’ কাকে বলে বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ কোনো কোনো ক্ষেত্রে কৃৎপ্রত্যয় যোগ করলে কৃৎপ্রকৃতির( বা ধাতুর) আদিস্বর পরিবর্তিত হয়। এই জাতীয় পরিবর্তনকেই বলা হয় গুণ ও বৃদ্ধি। বিষয়টি উদাহরণ দিয়ে বোঝানো হল–
১. গুণ :
ক) ‘ই বা ঈ’ স্থলে ‘এ’ হয়। যেমন : নী+আ=নেওয়া , চিন্+আ=চেনা ।
খ) ‘উ বা ঊ’ স্থলে ‘ও’ হয়। যেমন : ধু+আ=ধোয়া , শী+ অন =শয়ন।
গ) ‘ঋ’ স্থলে ‘অর’ হয়। যেমন : কৃ+তা=করতা>কর্তা , ধৃ+অন= ধরন।
২. বৃদ্ধি:
ক) ‘অ’ স্থলে ‘আ’ হয়। যেমন : রঘু+ অ = রাঘব।
খ) ই বা ঈ স্থলে ‘ঐ’ হয়। যেমন : বিষ্ণু+ অ = বৈষ্ণব ।
গ) উ বা ঊ স্থলে ‘ঔ’ হয়। যেমন : যুব+অন = যৌবন ।
ঘ) ঋ স্থলে ‘আর্’ হয়। যেমন : কৃ+ঘ্যণ = কার্য
ইৎ : প্রত্যয় প্রাতিপদিক বা ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সময় সবসময় সম্পূর্ণ বা অখণ্ড অবস্থায় যুক্ত হয় না; কখনো কখনো এর কিছু অংশ লোপ পায়। যুক্ত হওয়ার সময় প্রত্যয়ের কিছু অংশ লোপ পাওয়াকেই বলা হয় ‘ইৎ’।
যেমন- আ-নী+অনট্=আনয়ন ।
১৭। বিভিন্ন শ্রেণির প্রত্যয়ের উদাহরণ দাও।
সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয়
(১) তব্য : উচিত বা যোগ্য অর্থে এই প্রত্যয় হয় । যেমন- ধৃ+তব্য=ধর্তব্য, দা+তব্য=দাতব্য, স্মৃ+তব্য=স্মর্তব্য, গম্+তব্য=গন্তব্য, কৃ+তব্য=কর্তব্য, দৃশ+তব্য=দ্রষ্টব্য, বচ্+তব্য=বক্তব্য, মন্+তব্য=মন্তব্য, ভূ+তব্য=ভবিতব্য ইত্যাদি ।
(২) অনীয় : উচিত বা যোগ্য অর্থে ‘অনীয়’ প্রত্যয় হয় । যেমন-দৃশ্+অনীয়=দর্শনীয়, পা+অনীয়=পানীয়, কৃ+অনীয়=করণীয়, স্মৃ+অনীয়=স্মরনণীয়, স্পৃহ্+অনীয়=স্পৃহনীয়, গম্+অনীয়=গমনীয়, ইত্যাদি।
(৩) য(যৎ, ন্যৎ) : উচিত বা যোগ্য অর্থে যৎ>’য’ প্রত্যয়ও হয় । যেমন-লভ্+যৎ=লভ্য, দা+যৎ=দেয়, গম্+যৎ=গম্য, সহ্+যৎ=সহ্য , রম্+যৎ=রম্য ইত্যাদি ।
ঋ-কারান্ত ও ব্যঞ্জনান্ত ধাতুর পরে উচিতার্থে ন্যৎ>’য’ প্রত্যয় হয় । যেমন- ধৃ+ন্যৎ=ধার্য, বচ্+ন্যৎ=বাক্য , কৃ+ন্যৎ=কার্য ইত্যাদি ।
** মনে রাখতে হবে – কোনো শব্দ একই সঙ্গে যৎ বা ন্যৎ এবং অনীয় প্রত্যয় হয় না । যেমন- পূজা বা পূজনীয়(পূজ্যণীয় নয়) ; লক্ষ্য বা লক্ষণীয়(লক্ষ্যণীয় নয়) ।
সামনে উপসর্গ যোগে প্রত্যয় : প্র-যুজ্+জ=প্রযোজ্য; পরি-হৃ+য=পরিহার্য ; বি-চার্+য=বিচার্য , বি-বিচ্+য=বিবেচ্য , পরি-ধা+যৎ=পরিধেয় ইত্যাদি ।
(৪) মান, আন(শানচ্) : কোনো কাজের চলমানতা বোঝাতে কোথাও ‘মান’ কোথাও ‘আন’ (মূল সংস্কৃত প্রত্যয় ‘শানচ্’) হয় । যেমন – বৃৎ+(শানচ্)মান=বর্তমান ; বিদ্+মান=বিদ্যমান ; ভাস্+মানা=ভাসমান ; মৃ+মান=ম্রিয়মান ; শী+মান=শয়ান ; চল্+মান=চলমান ; বৃধ্+(শানচ্)মান=বর্ধমান ইত্যাদি ।
উপসর্গ যোগে প্রত্যয় : বি-বদ্+শানচ্=বিবদমান ; বি-লী+শানচ্=বিলীয়মান ; বি-রাজ + শানচ্ = বিরাজমান ; প্র-বহ্+শানচ্= প্রবহমান প্রভৃতি ।
(৫) তা(তৃচ্) : ধাতুর উত্তর এই প্রত্যয় যোগে বিশেষ্যপদ গঠন করা হয় । যেমন- পা+তা=পিতা , দা+(তৃচ্)তা =দাতা ; বচ্+তা=বক্তা ; শ্রু+তা=শ্রোতা ; নী+তা=নেতা ; জ্ঞা+তা=জ্ঞাতা ; গ্রহ্+তা=গ্রহীতা ; দৃশ্+তা=দ্রষ্টা ; সৃজ+তা=স্রষ্টা ইত্যাদি ।
উপসর্গ যোগে প্রত্যয় : বি-জি+তৃচ্=বিজেতা ; বি-ধা+তৃচ্=বিধাতা ; অভি-নী+তৃচ্=অভিনেতা ।
(৬) তি(ক্তি) : ধাতুর পরে এই প্রত্যয় যোগে ভাববাচক বিশেষ্য পদ গঠিত হয় । যেমন – গম্+(ক্তি)তি=গতি ; স্মৃ+তি=স্মৃতি ; ভী+ক্তি=ভীতি ; খ্যাতি=খ্যা+ক্তি ; শাস্+ক্তি=শাস্তি ; শ্রু+ক্তি=শ্রুতি ; তৃপ+ক্তি=তৃপ্তি ; দৃশ্+ক্তি=দৃষ্টি ; সৃজ+ক্তি=সৃষ্টি ; মুচ্+ক্তি=মুক্তি ইত্যাদি ।
উপসর্গ যোগে প্রত্যয় : প্র-গম্+ক্তি=প্রগতি ; বি-জ্ঞপ+ক্তি=বিজ্ঞপ্তি ; প্রতি-পদ+ক্তি=প্রতিপত্তি ; সম্-পদ +ক্তি=সম্পত্তি ইত্যাদি ।
(৭) অন(অনট্) : ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য পদ গঠনের ক্ষেত্রে এই প্রত্যয় হয় । যেমন- গম্+অনট্=গমন ;শ্রু+অনট্=শ্রবণ, নী+অনট্=নয়ন ; দৃশ্+অনট্=দর্শন ; গর্জ+অনট্=গর্জন ইত্যাদি ।
উপসর্গ যোগে প্রত্যয় : প্র-দৃশ্+অনট্=প্রদর্শন, আ-নী+অনট্=আনয়ন , অধি-ই+অনট্=অধ্য্যন ।
(৮) ত(ক্ত) : অতীতকালে কার্য সম্পন্ন হয়েছে বোঝাতে এই প্রত্যয় হয় । যেমন –ভী+ক্ত=ভীত, গম্+ক্ত=গত ; দৃশ্+ক্ত=দৃষ্ট ; সৃজ্+ক্ত=সৃষ্ট ; ভজ্+ক্ত=ভক্ত ; ভুজ্+ক্ত=ভুক্ত ; লভ্+ক্ত=লব্ধ ইত্যাদি ।
উপসর্গ যোগে প্রত্যয় : প্র-গম্+ক্ত=প্রগত ;সম্-কৃ+ক্ত= সংস্কৃত, বি-গম্+ক্ত=বিগত ইত্যাদি ।
(৯) ইষ্ণু: স্বভাব বা ধর্ম অর্থ বোঝাতে এই প্রত্যয় হয় । যেমন –সহ্+ইষ্ণু=সহিষ্ণু ; চল্+ইষ্ণু=চলিষ্ণু ; ক্ষি+ইষ্ণু=ক্ষয়িষ্ণু, বৃধ+ইষ্ণু=বর্ধিষ্ণু ইত্যাদি ।
(১০) অক্(ণক্) :সাধারণত বিশেষ্যপদ গঠিত হয় এই প্রত্যয় যোগে । যেমন – দৃশ্+অক্=দর্শক, পচ্+অক্ = পাচক ; পঠ্+অক্=পাঠক ; গৈ+অক্=গায়ক ; দা+অক্=দায়ক ; হন্+অক্=ঘাতক ; ধৃ+অক্=ধারক । শস্+অক্=শাসক ; কৃষ্+অক্+কৃষক ইত্যাদি ।
উপসর্গ যোগে প্রত্যয় : বি-ধা+অক্=বিধায়ক ; প্র-দৃশ্+অক্=প্রদর্শক ইত্যাদি।
(১১) সন্ : ‘ইচ্ছা’ অর্থে সন্ প্রত্যয় যুক্ত হয় । তবে ‘সন্’ ‘ইৎ’ হয়ে তারপর ‘অ’ এবং ‘আ’ প্রত্যয় যোগে বিশেষ্য পদ হয় । যেমন-জ্ঞা+সন্+অ+আ=জিজ্ঞাসা, পা+সন্+অ+আ=পিপাসা ; মুচ্+সন্+অ+আ=মুমুক্ষা ; জি+সন্+অ+আ=জিগীষা ; শ্রু+সন্+অ+আ=শ্রুশ্রূষা ; হন্+সন্+অ+আ=জিখাংসা ; লভ্+সন্+অ+আ= লিপ্সা ; ভুজ্+সন্+অ+আ=বুভুক্ষা ; কৃ+সন্+অ+আ=চিকীর্ষা ; জ্ঞা+সন্+উ=জিজ্ঞাসু ; পিপাসু=পা+সন্+উ ; ভুজ্+সন্+উ=বুভুক্ষু ইত্যাদি।
(১২) ‘ইন্’ : এই প্রত্যয় যোগে পুংলিঙ্গে প্রথমবার একবচনে ‘ঈ’ হয় । যেমন–জি+ইন্=জয়ী ; ভুজ্+ইন্=ভোগী ; ত্যজ্+ইন=ত্যাগী ; মন্ত্র+ইন্=মন্ত্রী ।
উপসর্গ যোগে প্রত্যয় : অনু-গম্+ইন্=অনুগামী ; প্রতি-বদ্+ইন্=প্রতিবাদী ইত্যাদি।
(১৩) অ(ঘঞ্) : ধাতুর পরে এই প্রত্যয় যোগে প্রধানতঃ ভাববাচক বিশেষ্য পদ গঠিত হয় । যেমন –ত্যজ+ঘঞ্=ত্যাগ, পচ+(ঘঞ্)অ=পাক, শচ্+ঘঞ্=শোক, ভুজ্+ঘঞ্=ভোগ , ভজ্+ঘঞ=ভাগ, যুজ্+ঘঞ্=যোগ্য , লভ্+ঘঞ্=লাভ , পঠ্+ঘঞ=পাঠ ইত্যাদি ।
উপসর্গ যোগে প্রত্যয় : প্র-বস্+ঘঞ্=প্রবাস ; সম্+যুজ্+ঘঞ্=সংযোগ ইত্যাদি ।
(১৪) শতৃ : শতৃ প্রত্যয় যুক্ত হলে শব্দের উচ্চারণ হবে ‘অৎ’ । বাংলায় শতৃ প্রত্যয়যুক্ত শব্দ কম ব্যবহৃত হয়। যেমন-জাগৃ+শতৃ=জাগ্রৎ, জীব্+শতৃ=জীবৎ , মহ্+শতৃ=মহৎ , চল্+শতৃ=চলৎ ইত্যাদি ।
(১৫) আলু : আলু প্রত্যয় স্বভাব অর্থে ব্যবহৃত হয় । এই প্রত্যয়যুক্ত শব্দগুলি সাধারণ বিশেষণ । যেমন- দয়্+আলু=দয়ালু ; নি-দ্রা+আলু=নিদ্রালু ইত্যাদি ।
(১৬) ক্বিপ্ : ক্বিপ্ প্রত্যয় ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হলে পুরোটাই ইৎ বা লুপ্ত হয় । তাই একে শূণ্য প্রত্যয় বলা হয় । যেমন- উদ্+ভিদ্+ক্বিপ্=উদ্ভিদ ; আ-শাস্+ক্বিপ্=আশিস্ ; বি-দ্যু+ক্বিপ্=বিদ্যুৎ ইত্যাদি ।
(১৭) ন্যৎ, যৎ, ক্যপ্ : উচিত বা যোগ্য অর্থে এই তিনটি প্রত্যয় ব্যবহৃত হয় । এই প্রত্যয়ের ‘য’ বাদে বাকি অংশগুলি ইৎ হয়। তিনটি প্রত্যয়েরই কেবল ‘য’ অংশটুকু যুক্ত হয় । যেমন- পঠ্+ন্যৎ=পাঠ্য , সহ্+ন্যৎ=সহ্য , ভুজ্+ন্যত=ভুজ্য , লভ্+যৎ=লভ্য , শাস্+ক্যপ্=শিষ্য, বিদ্+ক্যপ্+আ=বিদ্যা , ভৃ+ক্যপ্=ভৃত্য , কৃ+ন্যৎ=কার্য ; পা+যত=পেয় ; পচ্+ন্যত=পাচ্য , হন্+ক্যপ্+আ=হত্যা ইত্যাদি।
*** মনে রাখতে হবে বাংলায় এই তিনটি প্রত্যয়কেই ‘য’ রূপে ধরা হয় ।
বাংলা কৃৎ প্রত্যয় বা খঁটি বাংলা কৃৎ প্রত্যয়
(১) অ : এই প্রত্যয় যোগে বাংলা ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য বা বিশেষণ পদ হয় । যেমন- কাট্+অ=কাট ; কট্মট্+অ=কটমট(কটমট ভাষা,কটমট দৃষ্টি) ; ছাঁট্+অ=ছাঁট ; কাঁদ্+অ=কাঁদ ইত্যাদি
(২) আ : এই প্রত্যয় যোগে বাংলা প্রযোজক ধাতু বানানো হয় । যেমন-পড়্+আ(পড়ানো) , কর্+আ=করা(করানো) , দেখ্+আ= দেখা( দেখানো) ইত্যাদি।
(৩) আই : ভাববাচক বিশেষ্য বোঝাতে এই প্রত্যয় হয় । যেমন- ঝাড়্+আই=ঝাড়াই ; বাছ্+আই= বাছাই ; যাচ্+আই=যাচাই ; খোদ্+আই=খোদাই ; লড়্+আই=লড়াই ইত্যাদি ।
(৪) আও : এই প্রত্যয়যোগে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্যপদ গঠিত হয় । যেমন- ঘির্+আও=ঘেরাও ; ফল্+আও=ফলাও ; ঢাল্+আও=ঢালাও ; চড়্+আও=চড়াও ; লগ্+আও=লাগাও ; পাকড়্+আও=পাকড়াও ।
৫) অন্ : এই প্রত্যয় যোগে খাঁটিবাচক ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য পদ গঠিত হয় । যেমন- নাচ্+অন্= নাচন ; মাত্+অন্=মাতন , কাঁদ্+অন্=কাঁদন ; ঝাড়্+অন্=ঝাড়ন ; বাঁচ+অন্=বাঁচন ; মার্+অন্=মারন ; ধর্+অন্= ধরন ; চল্+অন্=চলন ; বল্+অন্=বলন ; ঝুল্+অন্=ঝুলন ।
(৬) অন্ত : কর্তৃবাচ্যে ধাতুর উত্তর বর্তমান কালে এই প্রত্যয় হয় । যেমন- পড়্+অন্ত=পড়ন্ত ; বাড়্+অন্ত=বাড়ন্ত ; উড়্+অন্ত=উড়ন্ত ; চল্+অন্ত=চলন্ত ; ডুব্+অন্ত=ডুবন্ত ; ফল্+অন্ত=ফলন্ত ; ফুট্+অন্ত=ফুটন্ত ; ঝুল্+অন্ত =ঝুলন্ত ইত্যাদি ।
(৭) ‘তি’ : এই প্রত্যয়যোগে কখনও বিশেষ্য কখনও বিশেষণ পদ গঠিত হয় । যেমন – বস্+তি=বসতি ; কাট্+তি=কাটতি ; বাড়্+তি=বাড়তি ; ঝড়্+তি=ঝড়তি ; পড়্+তি=পড়তি ; উঠ্+তি=উঠতি ; চল্+তি =চলতি ; ফির্+তি=ফিরতি ।
(৮) আরি, উরি(রি) : এই প্রত্যয়যোগে বিশেষ্য গঠিত হয় । যেমন – ডুব্+আরি=ডুবারি ; ডুব্+উরি=ডুবুরি ; ধুন্+আরি=ধুনারি ; ধুন্+উরি=ধুনুরি ; ভিখ্+আরি=ভিখারি ; কাট্+আরি=কাটারি ; ইত্যাদি ।
(৯) আনি, উনি : এই প্রত্যয় যোগে বিশেষ্য গঠিত হয় । যেমন – নিড়া=আনি=নিড়ানি ; শুন্+আনি=শুনানি ; ছাঁক+উনি=ছাঁকুনি ; রাঁধ্+উনি=রাঁধুনি । প্রয়োগ : আগামীকাল মামলার শুনানি হবে ।
(১০) ইয়ে(ইয়া) : এই প্রত্যয়যোগে বিশেষ্য গঠিত হয় । যেমন – খা+ইয়া(ইয়ে)=খাইয়া>খাইয়ে ; গা+ইয়ে=গাইয়ে ; বাজ্+ইয়ে=বাজিয়ে ; খেল্+ইয়ে=খেলিয়ে ; বল্+ইয়ে=বলিয়ে ; কহ্+ইয়ে=কইয়ে ইত্যাদি ।
(১১) উক্ : এই প্রত্যয় টি স্বভাব নির্দেশ করে । যেমন- মিশ্+উক্=মিশুক ; খা+উক্=খাউক ; ভাব্+উক্=ভাবুক ইত্যাদি ।
আরও দেখে রাখতে পারো 👉বাগধারা- প্রবাদ-প্রবচন
(১২) উয়া(ত্ত) : এই প্রত্যয় টি স্বভাব নির্দেশ করে । যেমন – পড়্+উয়া=পড়ুয়া>পড়ো ; উড়ু+উয়া=উড়ুয়া>উড়ো ; ভুল্+উয়া=ভুলুয়া>ভুলো ; লাগ্+উয়া=লাগুয়া>লাগোয়া ।
(১৩) না : এই প্রত্যয়যোগে ক্রিয়াবাচক ও বস্তুবাচক বিশেষ্য হয় । যেমন-কাঁদ্+না=কান্না ; রাঁধ্+না=রান্না ; ঢাক্+না=ঢাকনা ; বাট্+না=বাটনা ; ঝর্+না=ঝরনা ; বাজ্+না=বাজনা ইত্যাদি ।
(১৪) অনা-প্রত্যয় : খেল্+অনা=খেলনা ; ঝর্+অনা=ঝরনা ।
(১৫) আনো-প্রত্যয় : দেখা+আনো=দেখানো , পড়া+আনো=পড়ানো ; বেতা+আনো=বেতানো ; ভুলা+আনো=ভোলানো , শোনা+আনো=শোনানো ।
(১৬) ই-প্রত্যয় : হাস্+ই=হাসি , ছুট্+ই=ছুটি , ঝুল্+ই=ঝুলি , ডুব্+ই=ডুবি , ঝাঁপ+ই=ঝাঁপি ; ফির্+ই=ফিরি(ফেরি) প্রভৃতি ।
(১৭) ইত–প্রত্যয় : ভাব্+ইত=ভাবিত ; কর্+ইত=করিত প্রভৃতি ।
(১৮) ‘ত’ প্রত্যয় : খ্যা+ত=খ্যাত , জ্ঞা+ত=জ্ঞাত ; গম্+ত=গত , প্রী+ত=প্রীত ; কৃ+ত=কৃত , মৃ+ত=মৃত ; গৈ+ত=গীত , ভী+ত=ভীত , মুচ্+ত=মুক্ত ইত্যাদি।
তদ্ধিত প্রত্যয়
সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়
(১) ষ্ণ>অ : অপত্য (সন্তান) অর্থে ও ভাবার্থে শব্দের পরে ‘ষ্ণ’ প্রত্যয় হয় । এই প্রত্যয়ের শব্দগুলো কখনো বিশেষ্য কখনো বা বিশেষণ হয় । যেমন – রঘু+ষ্ণ=রাঘব , মনু+অ=মানব , কুরু+অ=কৌরব , পান্ডু+অ=পান্ডব , বিষ্ণু+ষ্ণ= বৈষ্ণব , পুত্র+অ=পৌত্র , ভরত+অ=ভারত ইত্যাদি (বিশেষ্য), বিধি+অ=বৈধ , শিব+অ=শৈব , ঋষি+অ=আর্ষ ইত্যাদি (বিশেষণ) । ভাবার্থে : শিশু+অ=শৈশব , বন্ধু+অ=বান্ধব ইত্যাদি ।
(২) ষ্ণ্য>য : অপত্যার্থে ও ভাবার্থে দুই অর্থেই এই প্রত্যয় হয়ে থাকে । এই প্রত্যয় যুক্ত শব্দগুলোও বিশেষ্য হয় ।
যেমন- অপত্যার্থে : অদিতি+ষ্ণ্য=আদিত্য, চণক+ষ্ণ্য=চাণক্য , দিতি+ষ্ণ্য=দৈত্য ।
ভাবার্থে : সম+ষ্ণ্য=সাম্য, ত্রিলোক+ষ্ণ্য=ত্রৈলোক্য ,অনুকূল+ষ্ণ্য=আনুকূল্য ; লবণ+ষ্ণ্য=লাবন্য , বিপরীত+ষ্ণ্য=বৈপরীত্য , দূত+ষ্ণ্য=দৌত্য, দীন+ষ্ণ্য=দৈন্য ; প্রমান+ষ্ণ্য=প্রামান্য , সহায়+ষ্ণ্য=সাহায্য ; বিগদ্ধ+ষ্ণ্য=বৈগদ্ধ্য স্বতন্ত্র+ষ্ণ্য=স্বাতন্ত্র্য , পুরোহিত+ষ্ণ্য=পৌরহিত্য ; স্থাপিত+ষ্ণ্য=স্থাপত্য ; কবি+ষ্ণ্য=কাব্য ; সহিত+ষ্ণ্য=সাহিত্য ; অলস+ষ্ণ্য=আলস্য ইতাদি ।
** ষ্ণ্য>য প্রত্যয় যোগে সাধারণতঃ বিশেষ্য হলেও কখনো কখনো ভাবার্থে বিশেষণও হয় । যেমন- দক্ষিণ/দক্ষিণা+ষ্ণ্য> দাক্ষিণ্য, গ্রাম+ষ্ণ্য>য=গ্রাম্য , পাচ্+য=প্রাচ্য , উদচ্+য=উদীচ্য ইত্যাদি ।
*** মনে রাখতে হবে ‘ষ্ণ’ প্রত্যয় যুক্ত হলে শব্দের শেষে কোনো য-ফলা হয় না ; কিন্তু ‘ষ্ণ্য’ প্রত্যয় যুক্ত হলে শব্দের শেষে য-ফলা হয়।
(৩) ষ্ণেয়>এয় : অপত্যার্থে এই প্রত্যয় হয়ে থাকে। এই প্রত্যয় যুক্ত শব্দগুলোও বিশেষ্য হবে । যেমন- রাধা+ষ্ণেয়=রাধেয়, গঙ্গা+ষ্ণেয়=গাঙ্গেয়, বিমাতৃ+ষ্ণেয়=বৈমাত্রেয় , কুন্তী+ষ্ণেয়=কৌন্তেয় , ভগিনী+ষ্ণেয়=ভাগিনেয় ইত্যাদি । ভাবার্থে : যেমন-শ্রদ্ধা+ষ্ণেয়=শ্রদ্ধেয়, পথ+ষ্ণেয়=পাথেয় ইত্যাদি।
(৪) ষ্ণি>ই : অপত্যার্থে এই প্রত্যয় হয় । এই প্রত্যয়ান্ত শব্দগুলোও বিশেষ্য হবে । যেমন-রাবন+ষ্ণি=রাবণি, দশরথ+ষ্ণি=দাশরথি, সুমিত্রা+ষ্ণি=সৌমিত্রি ইত্যাদি ।
(৫) ষ্ণায়ন>আয়ন : অপত্য ও জাত অর্থে এই প্রত্যয় হয়ে থাকে । এই প্রত্যয়যুক্ত শব্দগুলোও বিশেষ্য হবে । যেমন- নর+ষ্ণায়ন=নারায়ণ ; দ্বীপ+ষ্ণায়ন=দ্বৈপায়ন (দ্বীপ জাত) ; দক্ষ+ষ্ণায়ন=দাক্ষায়ণ ; বৎস+ষ্ণায়ন=বাৎসায়ন ইত্যাদি ।এছাড়াও উত্তর+আয়ন=উত্তরায়ণ ; দক্ষিণ+আয়ন=দক্ষিণায়ন, রাম+আয়ন=রামায়ণ>রামকে অয়ন(আশ্রয়) করে রচিত গ্রন্থ=বহুব্রীহি । রস+আয়ন=রসায়ন ইত্যাদি ।
(৬) ষ্ণীয়>ঈয় : জাত বা যোগ্য অর্থে এই প্রত্যয় হয়ে থাকে । এই প্রত্যয়যুক্ত শব্দগুলো বিশেষণ হয়ে থাকে । যেমন-বঙ্গ+ষ্ণীয়=বঙ্গীয় ; ভারত+ষ্ণীয়=ভারতীয়, জল+ষ্ণীয়=জলীয় ; বায়ু+ষ্ণীয়=বায়বীয় ; শাস্ত্র+ষ্ণীয়=শাস্ত্রীয় ; দেশ+ষ্ণীয়=দেশীয় ইত্যাদি ।
(৭) ষ্ণিক>ইক : দক্ষ বা সম্বন্ধীয় অর্থে এই প্রত্যয় হয়ে থাকে । যেমন- ধর্ম+ষ্ণিক=ধার্মিক ; জগৎ+ষ্ণত+=জাগতিক, কায়া+ষ্ণিক=কায়িক , উপন্যাস+ষ্ণিক=ঔপন্যাসিক, অনু+ষ্ণিক=আনবিক , সমাজ+ষ্ণিক=সামাজিক , তর্ক+ষ্ণিক=তার্কিক , ন্যায়+ষ্ণিক=নৈয়ায়িক , দেহ+ষ্ণিক=দৈহিক ইত্যাদি ।
***আবার সময়ে সম্পন্ন অর্থে ষ্ণিক>ইক যুক্ত হতে পারে। যেমন- দিন+ষ্ণিক=দৈনিক ; হেমন্ত+ষ্ণিক=হৈমান্তিক ; সময়+ষ্ণিক=সাময়িক, বর্ষ+ষ্ণিক=বার্ষিক ; মাস+ষ্ণিক=মাসিক ; পক্ষ+ষ্ণিক=পাক্ষিক ; সপ্তাহ+ষ্ণিক= সাপ্তাহিক ইত্যাদি।
(৮) মতুপ্>মান্ : ‘আছে’ অর্থে বিশেষ্য পদের পরে এই প্রত্যয় যুক্ত হয় । এই প্রত্যয়যুক্ত শব্দগুলো বিশেষণ হবে । যেমন-ধী+মান্=ধীমান ; অংশু+মান্=অংশুমান ; চক্ষু+মান=চক্ষুষ্মমান ভক্তি+(মতুপ্)মান্=ভক্তিমান ; বুদ্ধি+মান=বুদ্ধিমান ; শক্তি+মান্=শুক্তিমান ; শ্রী+মান্=শ্রীমান ইত্যাদি ।
(৯) বতুপ্>বান্ : এই প্রত্যয়যুক্ত হলে উতপন্ন শব্দে ‘মতুপ্’ বা ‘মান্’ স্থলে ‘বতুপ্’ বা ‘বান্’ হয় । যেমন-স্বাস্থ্য+বান্=স্বাস্থ্যবান , গুণ+বান্=গুণবান, ভগ+ (বতুপ্)বান্=ভগবান , ধন+বান্=ধনবান , শ্রদ্ধা+বান্=শ্রদ্ধাবান্ , বল+বান্=বলবান ইত্যাদি ।
(১০) ইত : জাত বা যুক্ত অর্থে বিশেষ্য পদের পরে এই প্রত্যয় হয়ে থাকে । এই প্রত্যয়যুক্ত শব্দগুলোও বিশেষ্য হবে। যেমন- কুসুম+ইত=কুসুমিত , পীড়া+ইত=পীরীত, দুঃখ+ইত=দুঃখিত ; পুঞ্জ+ইত=পুঞ্জিত , ম্মূর্ছা+ইত=মূর্ছিত ; পুষ্প+ইত=পুষ্পিত , মুকুল+ইত=মুকুলিত , অঙ্কুর+ইত=অঙ্কুরিত , লজ্জা+ইত=লজ্জিত , ক্ষুধা+ইত=ক্ষুধিত ; কন্টক+ইত=কন্টকিত ইত্যাদি ।
(১১) ‘ইল’ : ‘আছে’ অর্থে এই প্রত্যয় হয়ে থাকে । এই প্রত্যয় যুক্ত হলে উৎপন্ন শব্দগুলোও বিশেষণ হবে। যেমন- কুট+ইল=কুটিল , জটা+ইল=জটিল , সর্প+ইল=সর্পিল, পঙ্ক+ইল=পঙ্কিল ; ফেন(ফেনা)+ইল=ফেনিল ইত্যাদি।
(১২) ইন্>ঈ : ‘আছে’ অর্থে এই প্রত্যয় হয় । এই প্রত্যয়যুক্ত শব্দগুলো বিশেষণ হয় । যেমন – মান+ইন্=মানিন্>মানী ; ফণা+ইন্=ফণী, ধন+ইন্=ধনিন্>ধনী ; জ্ঞান+ইন্=জ্ঞানিন্>জ্ঞানী ইত্যাদি ।
(১৩) ইমন্>ইমা : ভাব বোঝাতে এই প্রত্যয় ধয়ে থাকে । এই প্রত্যয়যুক্ত শব্দগুলোও বিশেষণ হয়।
যেমন- মহৎ+ইমন্=মহিমা , মধুর+ইমন্=মধুরিমা , শ্যামল+ইমন্= শ্যামলিমা, গুরুর+ইমন্=গরিমন্>গরিমা , লঘু+ইমন্=লঘিমা , নীল+ইমন্=নীলিমা , চন্দ্র+ইমন্=চন্দ্রিমা , দীর্ঘ+ইমন্=দ্রাঘীমা , কালি+ইমন্=কালিমা ইত্যাদি ।
(১৪) ঈন্ : ‘সম্বন্ধ’ অর্থে এই প্রত্যয় হয়ে থাকে । এই প্রত্যয়যুক্ত শব্দগুলো বিশ্বষণ হয় । যেমন – কাল+ঈন্=কালীন , কন্যা+ঈন্=কানীন্ , সর্বাঙ্গ+ঈন্=সর্বাঙ্গীন, গ্রাম+ঈন্= গ্রামীন্ কুল+ঈন্=কুলীন ইত্যাদি ।
(১৫) বিন্>বী : ‘আছে’ অর্থে এই প্রত্যয় হয়ে থাকে । এই প্রত্যয়যুক্ত পদগুলো বিশেষণ হবে। যেমন- মেধা+বিণ্=মেধাবী, মায়া+বিণ্=মায়াবিণ্>মায়াবী , তেজস্+বিন্=তেজস্বিন্>তেজস্বী (স্ত্রীলিঙ্গের ক্ষেত্রে বিনী-মায়াবিনী, তেজস্বিনী হবে) ।
(১৬) ল : ‘আছে’ বোঝাতে এই প্রত্যয় ব্যবহৃত হয় । এই প্রত্যয়যুক্ত শব্দগুলো বিশেষণ হয়ে থাকে । যেমন- শীত+ল=শীতল ; হাত+ল=হাতল, মাংস+ল=মাংসল , শ্যাম+ল=শ্যামল , বৎস+ল=বৎসল ইত্যাদি ।
(১৭) আলু : স্বভাবার্থে এই প্রত্যয় ব্যবহৃত হয় । যেমন- দয়া+আলু=দয়ালু ; স্বপ্ন+আলু=স্বপ্নালু ; নিদ্রা+আলু=নিদ্রালু ; তন্দ্রা+আলু=তন্দ্রালু ; ভাব+আলু=ভাবালু । প্রয়োগ : দয়ালু হওয়া ভালো, কিন্তু স্বপ্নালু বা তন্দালু হওয়া ভালো না ।
(১৮) তন : ‘উৎপন্ন’ বা জাত বা ভাব বোঝাতে এই প্রত্যয় হয় । এই প্রত্যয়যুক্ত শব্দগুলো বিশেষণ হয়ে থাকে । যেমন- পুরা+তন=পুরাতন ; চিরম্+তন=চিরন্তন, প্রাক্+তন=প্রাক্তন , সনা+তন=সনাতন , ঊধ্ব+তন=ঊধ্বতন ইত্যাদি ।
(১৯) ত্ব : বিশেষ্য পদ গঠন করতে এই প্রত্যয় হয়ে থাকে । যেমন- দেব+ত্ব=দেবত্ব , মনুষ্য+ত্ব=মনুষ্যত্ব, কবি+ত্ব=কবিত্ব , প্রভু+ত্ব=প্রভুত্ব , পশু+ত্ব=পশুত্ব ইত্যাদি ।
(২০) তা : বিশেষণ থেকে বিশেষ্য গঠন করতে হলে এই প্রত্যয় যুক্ত হয় । যেমন –কোমল+তা=কোমলতা ; কঠোর+তা=কঠোরতা ; নম্র+তা=নম্রতা, দীন+তা=দীনতা ইত্যাদি।
*** আবার দেখা যায় কখনো কখনো বিশেষ্য থেকে আরেক প্রকার বিশেষ্য করতেও এই প্রত্যয় যুক্ত হয়ে থাকে । যেমন – উপকারিন + তা = উপকারিতা, সাধু + তা = সাধুতা, বন্ধু + তা = বন্ধুতা, জন+তা=জনতা , মানব+তা=মানবতা , প্রতিযোগী+তা= প্রতিযোগিতা , সহযোগী+তা=সহযোগিতা ইত্যাদি।
বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয় বা খাঁটি বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয়
(১) আমি/আমো : ভাব বা অনুকরণ বোঝাতে এই প্রত্যয় যুক্ত করা হয় । যেমন- গুন্ডা+আমি=গুন্ডামি , পাকা+আমি=পাকামি , দুষ্ট+আমি=দুষ্টামি , জেঠা+আমি=জেঠামি, বাঁদর+আমি=বাঁদরামি ; ন্যাকা+আমি=ন্যাকামি/ন্যাকামো , গোঁড়ামি=গোঁড়া+ আমি ; পাগল+আমি=পাগলামি ইত্যাদি ।
(২) আরি(আরী) : বৃত্তি বা কাজ অর্থে এই প্রত্যয় হয় । যেমন- মাঝ+আরি=মাঝারি , রকম+আরি= রকমারি কাঁসা+আরি=কাঁসারি , পূজা+আরী=পূজারী।পূজারি , শাঁখা+আরী=শাঁখারী>শাঁখারি ইত্যাদি ।
(৩) ইয়াঃ (এই “ইয়া” অভিশ্রুতির ফলে ‘এ’/’ও’ তে পরিণত হয়) : বৃত্তি, জাতি, স্বভাব, সম্বধ ইত্যাদি বোঝাতে এই প্রত্যয় হয়। যেমন – শহর+ইয়া=শহরিয়া>শহুরে , গাঁ+ইয়া=গাঁইয়া>গেঁয়ো, কীর্তন+ইয়া=কীর্তনিয়া , জাল+ইয়া=জালিয়া>জেলে ; মাটি+ইয়া=মাটিয়া>মেটে, কাঁদন+ইয়া=কাঁদনিয়া>কাঁদুনে ; আমোদ+ইয়া=আমোদিয়া>আমুদে , কাগজ+ইয়া=কাগজিয়া>কাগজে, মোট+ইয়া=মোটিয়া>মুটে, পাহাড়+ইয়া=পাহাড়িয়া>পাহাড়ে ; উত্তর+ইয়া=উত্তরিয়া>উত্তুরে ইত্যাদি ।
(৪) উয়া( এই ‘উয়া’ অভিশ্রুতির ফলে ‘ও’ হয়) : বৃত্তি, স্বভাব ইত্যাদি বিভিন্ন অর্থে এই প্রত্যয় হয় । যেমন- ভাত+উয়া=ভাতুয়া>ভেতো ; কাঠ+উয়া=কাঠুয়া>কেঠো, মাঠ+উয়া=মাঠুয়া>মেঠো , খড়+উয়া=খড়ুয়া>খোড়া , মাছ+উয়া=মাছুয়া>মেছো , পান+উয়া=পানুয়া>পেনো , জল+উয়া=জলুয়া>জলো , টাক+উয়া=টাকুয়া>টেকো , পড়+উয়া=পড়ুয়া>পড়ো , গাছ+উয়া=গাছুয়া>গেছো ইত্যাদি ।
(৫) উক : স্বভাব অর্থে এই প্রত্যয় যুক্ত হয় । যেমন- মিথ্যা+উক=মিথ্যুক ; মিশ+উক=মিশুক, লাজ+উক=লাজুক , হিংসা+উক=হিংসুক , ভাব+উক=ভাবুক , পেট+উক=পেটুক , নিন্দা+উক+=নিন্দুক ইত্যাদি ।
(৬) আরু : নিপুণ, স্বভাব অর্থে এই প্রত্যয় হয়ে থাকে । যেমন- বোমা+আরু=বোমারু ; দিশ+আরু= দিশারু ; ডুব+আরু=ডুবারু ; কিন্তু সাঁতার+উ=সাঁতারু ইত্যাদি ।
আরও দেখে রাখতে পারো 👉বাগধারা- প্রবাদ-প্রবচন
(৭) আল : পেশা বোঝাতে এই প্রত্যয় যুক্ত হয় । যেমন- কবি+আল=কবিআল> কবিয়াল, লাঠি+আল=লাঠিয়াল । ** আবার ‘আছে’ অর্থেও ‘আল’ প্রত্যয় হয় । যেমন – দাঁত+আল=দাতাল , আবার এই ‘আল’ কখনো কখনো ‘আলো’ উচ্চারিত হতে পারে । যেমন- রসালো , শাঁসালো , জোরালো ইত্যাদি ।
(৮) আলি : সম্বন্ধ ও সাদৃশ্য অর্থে এই প্রত্যয় হয় । যেমন –সোনা+আলি=সোনালি ; রূপ+আলি=রূপালি>রূপোলি, মিতা+আলি ; ঠাকুর+আলি= ঠাকুরালি ; চতুর+আলি=চতুরালি ইত্যাদি।
(৯) ই : বৃত্তি, আচরণ প্রভৃতি বোঝাতে এই প্রত্যয় হয় । যেমন- ডাক্তার+ই=ডাক্তারি ; মাস্টার+ ই=মাস্টারি , জমিদার+ই=জমিদারি ; কবিরাজ+ই=কবিরাজি , ব্যারিস্টার+ই=ব্যারিস্টারি ; পন্ডিত+ই=পন্ডিতি ; দালাল+ই=দালালি ; রাখাল+ই=রাখালি ; মজুর+ই=মজুরি ইত্যাদি ।
(১০) ঈ : বিভিন্ন অর্থে এই ‘ঈ’ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে থাকে । যেমন-
i) জীবিকা অর্থে ‘ঈ’ প্রত্যয়ঃ – ঢাক+ঈ=ঢাকী> ঢাকি , ব্যবসায়+ঈ=ব্যবসায়ী , তেল+ঈ=তেলী>তেলি , চাষ+ঈ=চাষী , দোকান+ঈ=দোকানী>দোকানি ইত্যাদি ।
ii) আছে অর্থে ‘ঈ’ প্রত্যয় : ভার+ঈ=ভারী>ভারি, দাম+ঈ=দামী>দামি ; দাগ+ঈ=দাগী>দাগি ; ইত্যাদি ।
iii) দক্ষ বা নিপুণ অর্থে ‘ঈ’ প্রত্যয়ঃ হিসাব+ঈ=হিসাবী>হিসাবি ; সেতার+ঈ=সেতারী>সেতারি , শিকার+ঈ=শিকারী>শিকারি ইত্যাদি ।
iv) দেয় বা প্রাপ্য বোঝাতে ‘ঈ’ প্রত্যয়ঃ খোরাক+ঈ=খোরাকী>খোরাকি, দর্শন+ঈ=দর্শনী>দর্শনি, প্রণাম+ঈ=প্রণামী>প্রণামি , সেলাম+ঈ=সেলামী >সেলামি ইত্যাদি ।
v) আগত বা উৎপন্ন অর্থে ‘ঈ’ প্রত্যয়ঃ কাশ্মীর+ঈ=কাশ্মীরী>কাশ্মীরি , শান্তিপুর+ঈ=শান্তিপুরী>শান্তিপুরি , বৃন্দাবন+ঈ=বৃন্দাবনী>বৃন্দাবনি , বেনারস+ঈ=বেনারসী>বেনারসি ইত্যাদি ।
vi) নির্মিত অর্থে ‘ঈ’ প্রত্যয়ঃ রেশম+ঈ=রেশমী>রেশমি ; পশম+ঈ=পশমী>পশমি ইত্যাদি ।
(ঈ) রঙ বা বর্ণ বোঝাতে ‘ঈ’ প্রত্যয়ঃ বাদাম+ঈ=বাদামী>বাদামি , গোলাপ+ঈ=গোলাপি , বেগুন+ঈ=বেগুনী ইত্যাদি ।
(১১) পানা : সাদৃশ্য বোঝাতে ‘পানা’ প্রত্যয় ব্যবহৃত হয় । যেমন- চাঁদ+পানা=চাঁদপানা , টোপর+পানা= টোপরপানা ইত্যাদি।
(১২) টিয়া( অভিশ্রুতির ফলে ‘টে’ হয়ে যায়) : স্বভাব বা অধিকারী অর্থে এই প্রত্যয় হয় । যেমন – তামা+টিয়া=তামাটিয়া>তামাটে , ঝগড়া+টিয়া=ঝগড়াটিয়া> ঝগড়াটে , বোকা+টিয়া=বোকাটিয়া>বোকাটে , ভাড়া+টিয়া=ভাড়াটিয়া>ভাড়াটে ইত্যাদি ।
(১৩) পনা : স্বভাব অর্থে এই প্রত্যয় হয়ে থাকে । যেমন- সতী+পনা=সতীপনা, বীর+পনা=বীরপনা, গিন্নি+পনা=গিন্নিপনা , হ্যাংলা+পনা=হ্যাংলাপনা , দুরন্ত+পনা=দুরন্তপনা , বেহায়া+পনা=বেহায়াপনা ইত্যাদি ।
(১৪) আই : সম্বন্ধ অর্থে এই প্রত্যয় হয়ে থাকে । যেমন- বড়ো+আই=বড়াই , চোর+আই=চোরাই ; ভোর+আই=ভোরাই, খাড়া+আই=খাড়াই্ , ঢাকা +আই=ঢাকাই , পাটনা+আই=পাটনাই , মোগল+আই=মোগলাই ইত্যাদি ।
আরও দেখে রাখবে 👇
১। বাংলা কাব্যে বিষ্ণু দে-র অবদান
২। বাংলা কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান
৪। কারক অ-কারক SAQ Practice SET
৫। শব্দভাণ্ডার MCQ Practice SET
৬। কাব্যসাহিত্যের ইতিহাস (আধুনিক যুগ) MCQ
৭। ধ্বনি ও বর্ণ MCQ practice SET