প্রশ্নঃ ২। “এ সংসারে সব কিছুই চলে বড়ো পিসিমার নিয়মে।”–বড়ো পিসিমা কে?গল্পে তার চরিত্রের কী পরিচয় পাওয়া যায়? (১+৪=৫) (২০১৮)
অথবা
মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘ভাত’ গল্প অবলম্বনে বড়ো পিসিমা চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা কর। (৫)
উত্তর: মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ গল্পে উল্লিখিত বড়ো পিসিমা হল একটি অন্যতম চরিত্র।বড়ো পিসিমা বড়ো বাড়ির বউদের পিসি শাশুড়ি হন।পিসিমা বড়ো বাড়ির প্রয়াত বুড়ো কর্তার পৌঢ়া অবিবাহিতা কন্যা।গল্পের স্বল্প পরিসরে বড়ো পিসিমা চরিত্রের কিছু বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে—
১) দায়িত্বশীলতা: বড়ো পিসিমা সংসারের প্রতি অত্যন্ত দায়িত্বশীল চরিত্র।সাংসারিক দায়-দায়িত্বের কারণে তার বিবাহ করা হয়নি।তিনি বাড়ির হেঁসেল সামলেছেন,ভাড়াটে বাড়িতে মিস্ত্রি লাগিয়েছেন।বাবার ও পরে দাদার সেবা শুশ্রূষা করেছেন।এছাড়াও বাড়ির শিব মন্দীর ও ঠাকুরের দেখা শুনার দায়িত্ব ছিল তার।
২) কর্তৃত্ব সম্পন্ন: বড়ো পিসিমা কর্তৃত্ব পরায়ণ চরিত্র।বাড়ির সব কিছুই তার কর্তৃত্বাধীন ছিল।বাবার মৃত্যুর পর দাদা সংসারের হাল ধরলেও সংসারে তার কর্তৃত্ব পূর্বের মতোই অটুট ছিল।বাড়ির বউরা ও অন্যান্যরা সকলেই পিসিমার কথা মতো চলত।
৩) স্পষ্টবাদিতা: স্পষ্ট কথা বলা বড়ো পিসিমা চরিত্রের বিশেষ গুণ।উচ্ছবকে ভালো লাগেনি এমন মত প্রকাশ করলে পিসিমা বড়ো বউকে নানা কথা শুনিয়েছেন।
৪)সতর্ক দৃষ্টির অধিকারিনী: সংসারের প্রতিটি ক্ষেত্রে বড়ো পিসিমার সদা সতর্ক দৃষ্টি ছিল।দাদার আরোগ্যের জন্য হোমযজ্ঞ আয়োজন করেছেন।অর্থের প্রয়োজনে বাসিনীকে দিয়ে লুকিয়ে বাদার চাল বিক্রি করেছেন।তান্ত্রিক এলেও শেষ রক্ষা না হওয়ায় তাকে ডাকাতে সন্নেসী বলে দোষারোপ করতে ছাড়েননি।
৫) দারিদ্র প্রীতি: বড়ো পিসিমা ছিলেন দরদী চরিত্র।গল্পে দেখা যায় বড়ো বউ বা অন্যান্যদের অমতের বিরুদ্ধে গিয়ে উচ্ছবকে বাড়ির কাজে নিয়োগ করেছেন।
এইভাবে কর্তৃত্ব পরায়ণ,দায়িত্ববান,সতর্ক দৃষ্টির অধিকারিনী বড়ো পিসিমার চরিত্রটি দোষে,গুনে ধনী পরিবারের কত্রীর এক জীবন্ত চরিত্রে পরিণত হয়েছে।
—————————————-