প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য || গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তরের সাজেশন, SAQ
নীচে PDF Download Link দেওয়া আছে ডাউনলোড করে নাও ।
প্রশ্নোত্তরে সাহিত্যের ইতিহাস
(প্রাচীন ও মধ্যযুগ) SAQ প্রশ্ন
অধ্যায়ঃ বাংলা ভাষা সৃষ্টির পূর্বে বাঙ্গালির সাহিত্য চর্চা
১।‘সদুক্তিকর্ণামৃত’ কে সংকলন করেন ? এখানে কাদের কবিতা স্থান পেয়েছে ?
উত্তরঃ লক্ষ্মণ সেনের মহামান্ডলিক বটুদাসের পুত্র শ্রীধর দাস ‘সদুক্তিকর্নামৃত’ (১২০৬) সংকলন করেন।
কাদের কবিতা রয়েছে :
এখানে কালিদাস, ভামহের মতো বিখ্যাত কবির পাশাপাশি সেযুগের বিখ্যাত বাঙালি কবিদের কবিতা স্থান পেয়েছে -এরা হলেন লক্ষ্মণ সেন, কেশব সেন, উমাপতি ধর, জয়দেব, ধোয়ী, শরণ, গোবর্ধন আচার্য, বেতাল, কবিরাজ, ব্যাস প্রমুখ।
২। ‘কবীন্দ্রবচন সমুচচয়’ এর প্রকৃত নাম কী ? এখানে কী জাতীয় কবিতা রয়েছে ? এবং কাঁদের কবিতা স্থান পেয়েছে ?
উত্তরঃ ‘কবীন্দ্রবচন সমুচচয়’ এর প্রকৃত নাম : ‘কবীন্দ্রবচন সমুচচয় ‘ এর প্রকৃত নাম ‘সুভাষিত রত্নকোষ’।
কী জাতীয় কবিতা: এই গ্রন্থে রয়েছে রাধাকৃষ্ণলীলা বিষয়ক আদি রসাত্মক বহু কবিতা।
কাদের কবিতা রয়েছে :এই গ্রন্থে যেসব বাঙালি কবির কবিতা সংকলিত হয়েছে তাঁরা হলেন – বন্দ্য তথাগত, মধুশীল, শ্রীধর নন্দী, রতিপাল প্রমুখ।
৩। ‘প্রাকৃতপৈঙ্গল’ কার রচনা ? এই কাব্যে কাঁদের জীবনকথা রয়েছে ?
উত্তরঃ ‘প্রাকৃতপৈঙ্গল’এর রচয়িতা : প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় বাঙালির লেখা সাহিত্য নিদর্শন রূপে উল্লেখ করা যায় পিঙ্গলাচার্য রচিত ‘প্রাকৃতপৈঙ্গল’ গ্রন্থের কথা।
কাদের জীবনকথা রয়েছে : এই কাব্যে রাধাকৃষ্ণ প্রসঙ্গ, শিব প্রসঙ্গ, কৃষিনির্ভর বাঙালির মধ্যবিত্ত জীবনকথা ও তাঁদের জীবনচরণের ছবি ফুটে উঠেছে।
৪। অপভ্রংশ ভাষায় রচিত দুটি সাহিত্যিক নিদর্শনের নাম উল্লেখ করো। মাগধী অপভ্রংশ থেকে বাংলা ছাড়াও আর কোন কোন ভাষার জন্ম হয়েছে ?
উত্তরঃ অপভ্রংশ ভাষায় রচিত সাহিত্যিক নিদর্শন: অপভ্রংশ ভাষায় রচিত উৎকৃষ্ট সাহিত্য নিদর্শন হল -কবিবর হালের ‘গাঁথাসপ্তশতী(গাহাসত্তসই )’, পিঙ্গলাচার্যের ‘প্রাকৃতপৈঙ্গল’, কৃষ্ণাচার্যের ‘দোহাকোষ’ প্রভৃতি।
বাংলা ছাড়াও অন্য ভাষার জন্ম:মাগধী অপভ্রংশ থেকে বাংলা ছাড়াও কতকগুলি আধুনিক ভারতীয় ভাষার জন্ম হয়েছে।
যেমন – অসমীয়া, মৈথিলী, ওড়িয়া প্রভৃতি।
অধ্যায়ঃ চর্যাপদ / প্রাচীন যুগ
১। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী সম্পাদিত বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ প্রকাশিত চর্যাপদের সংকলনটির নাম কি ? এটি কবে প্রকাশিত হয় ?
উত্তর: হরপ্রসাদ শাস্ত্রী সম্পাদিত বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ প্রকাশিত চর্যাপদের সংকলনটির নাম হল— ‘হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষার বৌদ্ধ গান ও দোহা’।
## এটি বাংলা ১৩২৩ সনে (১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে) প্রকাশিত হয়।
২। চর্যাপদের ভাষাকে ‘সন্ধ্যাভাষা’ বলা হয় কেন ?
উত্তর: চর্যাপদের পদগুলি একটু দুর্বোধ্য রহস্যময় ভাষায় রচিত। যার নাম ‘সন্ধ্যাভাষা’ যার অর্থ সম্যক ধ্যানের ( সম-ধৈ ধাতু) দ্বারা বুঝতে হয় অথবা যার অর্থ যে ভাষা রহস্যময় এবং যা বুঝতে বিলম্ব হয়, তা ‘সন্ধ্যাভাষা’ নামে পরিচিত ।
৩। চর্যাগীতি তে কতজন পদকর্তার নাম পাওয়া যায় ? কয়েকজনের নাম উল্লেখ করো।
উত্তরঃ চর্যাগীতি তে ২৪ জন পদকর্তার নাম পাওয়া যায় । কয়েকজন পদকর্তার নাম হল — সিদ্ধাচার্য লুইপাদ, ভুসুকপাদ, কাহ্নপাদ , সরহপাদ, শান্তিপাদ ও শবরপাদ প্রমুখ।
৪। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কোথা থেকে কী নামে চর্যাপদের পুঁথি প্রকাশ করেন ?
উত্তরঃ হরপ্রসাদ শাস্ত্রী চর্যাপদ এর পুথি ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার ”বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ” থেকে হাজার বছরের পুরানো বাংলা ভাষায় বৌদ্ধগণ ও দোহা নামে প্রকাশ করেন।
৫। ‘চর্যাপদ’-এর কবিদের কি নামে অভিহিত করা হয় ? ‘চর্যাপদ’-এর আদি সিদ্ধাচার্য কে ছিলেন ?
উত্তরঃ ‘চর্যাপদ’– এর কবিদের সিদ্ধাচার্য নামে অভিহিত করা হয়।
চর্যাপদের আদি সিদ্ধাচার্য ছিলেন লুইপাদ।
৬। ‘চর্যাপদ’ কোন ছন্দে লেখা ? অন্য কোন ভাষায় এই ছন্দ প্রচলিত ছিল ?
উত্তরঃ ‘চর্যাপদ’ ষোড়শ মাত্রিক পাদাকুলক ছন্দে লেখা।
প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় এই ছন্দ প্রচলিত ছিল।
৭। ‘চর্যাপদ‘ -এর পদের সংখ্যা কত ? হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কৃত পুঁথিতে কতগুলি পদ পাওয়া যায় ?
উত্তরঃ ‘চর্যাপদ’– এর পদের সংখ্যা মোট ৫০টি ( তিব্বতি অনুবাদ অনুসারে ৫১টি), তবে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কৃত পুঁথিতে ৪৬টি সম্পূর্ণ পদ এবং ১টি খন্ডিত পদ পাওয়া গেছে।
অধ্যায়ঃ তুর্কি আক্রমণ
বাংলাদেশে তুর্কি আক্রমন ও তার প্রভাব:–
১। বাংলাদেশে তুর্কি আক্রমনের পরবর্তী দুশো বছরকে কেন “অন্ধকার যুগ” বলা হয় ?
উত্তরঃ এই সময় কোনো সাহিত্য রচিত হয়নি বা হলেও তা পাওয়া যায়নি, তাই তুর্কি আক্রমণের ফলে বাংলাদেশে এক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়, অনেক ঐতিহাসিক যাকে ‘মাৎস্যন্যায়’ এর সঙ্গে তুলনা করেছেন। ফলত একদিকে যেমন ওই সময় সুস্থ বাংলা সাহিত্য রচিত হয়নি। অন্যদিকে কোনো সাংস্কৃতিক পরিবেশও ছিল না। তাই এই সময়কে ঐতিহাসিকেরা অন্ধকার যুগ বলেছেন।
২।বাংলাদেশে তুর্কি বিজয়ের দু’টি কুফল লেখ।
উত্তরঃ বাংলাদেশে তুর্কি বিজয়ের দু’টি কুফলগুলি হলঃ
(ক) প্রায় ১৫০ বছর ধরে কোনো নতুন সাহিত্য তৈরি হয়নি বা পাওয়া যায়নি।
(খ) হিন্দুদের জোর করে ধর্মান্তরিত করানো হয়।
৩। হুসেনশাহ কত খ্রিস্টাব্দে বাংলার নবাব হন ? বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে তাঁর কৃতিত্ব লেখ।
উত্তরঃ হুসেন শাহ ১৪৯৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলার নবাব হন।
বাংলা সাহিত্যে ও সংস্কৃতিতে হুশেনসাহর কৃতিত্ব:-
(ক) বাংলার নবাব পদে হুসেন শাহ অধিষ্ঠাতা হলে বাংলাদেশে আবার শান্তি ফিরে আসে। (খ)যারা প্রাণ ও ধর্ম ভয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র নেপালে তাদের পুঁথি নিয়ে পালিয়ে যান তারা ফিরে আসেন এবং নতুন করে সাহিত্য লেখা শুরু হয়।
(গ) অনেক প্রাচীন পুঁথি ধীরে ধীরে খুঁজে পাওয়া যায়।
(ঘ) নতুন করে ধর্মগ্ৰন্থ লেখা হয় যাতে ধর্মান্তরিতদের বা অন্য ধর্মের মানুষকে আবারও হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনা হয়।
৪।বাংলাদেশে তুর্কি বিজয়ের সামাজিক ফলশ্রুতি লেখ।
উত্তরঃ তুর্কি বিজয়ের সামাজিক ফলশ্রুতি:–
(ক) তুর্কি বিজয়ের ফলে সেন বংশের ধ্বংস হয়।
(খ) হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিপন্ন হয়ে পড়ে।
(গ) এক ভয়াবহ মাৎস্যন্যায় শুরু হয়।
(ঘ) আর্য ও অনার্য শ্রেণির মধ্যে মেলবন্ধন গড়ে ওঠে।
অধ্যায়ঃ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন / আদি মধ্যযুগ
১। ” শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন “ কাব্যটি কে কবে কোথা থেকে আবিষ্কার করেন ? কাব্যটি কত সালে মুদ্রিত হয় ?
উত্তর : কে কবে কোথা থেকে আবিষ্কার করেন: শ্রী বসন্ত রঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে বাঁকুড়া জেলার ক্যাকিল্যা গ্ৰামের অধিবাসী দেবেন্দ্র নাথ মুখোপাধ্যায়ের গোয়াল ঘর থেকে বাংলায় লেখা রাধাকৃষ্ণ-লীলা বিষয়ক প্রথম আখ্যান কাব্যটির পু্ঁথি আবিষ্কার করেন।
** মুদ্রিত হয়: ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে “শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন” কাব্যটি মুদ্রিত হয়।
২। আদি মধ্য যুগের বাংলা সাহিত্যের প্রথম নিদর্শনের নাম কী ? গ্ৰন্থটির পু্ঁথি পরিচয় দিন ?
উত্তর: প্রথম নিদর্শন: আদি মধ্য যুগের প্রথম নিদর্শন হল- “শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন” কাব্য।
** পুঁথি পরিচয়:
আবিষ্কারক: শ্রী বসন্ত রঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ (১৯০৯খ্রিস্টাব্দ)।
মুদ্রন: ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দ (বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে)।
রচনাকার: বড়ু চন্ডীদাস ।
ভূমিকা লেখেন : রামেন্দ্র সুন্দর এিবেদী।
বিষয়: রাধা কৃষ্ণ লীলা।
খন্ড সংখ্যা: ১৩টি ।
পদের সংখ্যা: ৪১৮ টি ।
রাগ রাগিনী: ৩২টি ।
৩। “শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন” কাব্যের খন্ড সংখ্যা কয়টি ও সর্বশেষ খন্ডের নাম কী ? এর সবচেয়ে বড় খন্ড কোনটি ? সেটির মূল কাহিনিবৃও উল্লেখ করুন ?
উত্তর:*খন্ড সংখ্যা: “শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন ” কাব্যের খন্ড সংখ্যা ১৩টি।
**সর্বশেষ খন্ডের নাম: ‘রাধাবিরহ ‘ হল ” শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন” কাব্যের সর্বশেষ খন্ড।
*সবথেকে বড় খন্ড: “শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন” কাব্যের সবচেয়ে বড় খন্ড হল – ‘দান খন্ড’।
*দান খন্ডের কাহিনিবৃও: মথুরাগামী রাধা ও সঙ্গীদের কৃষ্ণের পথরোধ ,নদী পারাপারের বিনিময়ে কৃষ্ণ রাধার সঙ্গ প্রত্যাশা , রাধা কৃষ্ণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের চেষ্টা।
৪। বাংলা সাহিত্যে ” শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন” কাব্যের গুরুত্ব আলোচনা করুন ?
উত্তর:* বাংলা সাহিত্যে “শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন” কাব্যের গুরুত্ব:
(i) রাধা কৃষ্ণের প্রণয় কাহিনি নিয়ে বাংলা ভাষার প্রথম কাহিনি কাব্য।
(ii) বৈষ্ণব সাহিত্যের পথিকৃৎ।
(iii) গীতিরস,নাট্যগুণ,দ্বন্দ্বময় আখ্যানধর্ম ইত্যাদির প্রকাশ।
(iv)বাংলা ছন্দ বিবর্তন অর্থাৎ মিশ্রবৃত্ত ছন্দের ব্যবহার।
৫। ” শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন” এর রচয়িতা কে ? রচনাটি কাব্য না নাটক ? এই রচনার প্রধান তিনটি চরিত্রের নাম লিখুন।
উত্তর: রচয়িতা: ‘শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন’ এর রচয়িতা হল-বড়ু চন্ডীদাস।
**কাব্য না নাটক: ‘শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন’ মূলত আখ্যানকাব্য হলেও এটি “নাট-গীতি-পাঞ্চালিকা’’ ।
*চরিত্র: ‘শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন’ কাব্যের প্রধান তিনটি চরিত্র হল- রাধা , কৃষ্ণ এবং বড়াই।
৬। ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের ঐতিহাসিক গুরুত্ব উল্লেখ করুন।
উত্তরঃ আদি মধ্য যুগের বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নির্দশন হল ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’।
এই কাব্যর ঐতিহাসিক গুরুত্ব হল-
i) শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে যে লিপি ব্যবহার করা হয়েছে তা সমসাময়িক যে বাংলা লিপি তার ধারণা দেয়।
ii) শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে যে ছন্দ অলংকার ব্যবহার করা হয়েছে সেটার মাধ্যমে আমরা তৎকালীন সাহিত্যচর্চা, ছন্দ, অলংকার ব্যবহারের যে রীতি তার একটা নির্দশন পাই।
iii) শ্রীকৃষ্ণ কীর্তনে যেভাবে লৌকিক রস ,লৌকিক জীবন, মানুষের জীবন, প্রবাদপ্রবচন উঠে এসেছে এই শ্রীকৃষ্ণ কীতর্ন সমকালীন সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে।
৭। ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে কোন কোন গ্রন্থে র ছায়াপাত ঘটেছে ? এই কাব্যের মোট শ্লোক কত ?
উত্তরঃ শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে ‘শ্রীমৎভাগবত’,’ বিষ্ণুপুরাণ’, জয়দেবের ‘গীতগোবিন্দম’, কালিদাসের ‘কুমার সম্ভবম’ গ্রন্থের ছায়াপাত ঘটেছে।
এই কাব্যের মোট শ্লোক সংখ্যা ১৬১ টি।
৮। ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের রচয়িতার নাম কী ? প্রকাশকালে এই কাব্যের ভূমিকা অংশটি কে লিখেছেন ?
উত্তরঃ ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের রচয়িতার নাম বড়ু চণ্ডিদাস ।
এই কাব্যের প্রকাশকালে ভূমিকা অংশটি লিখেছেন রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী।
৯। ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যটিতে কীসের কীসের প্রভাব আছে ?
উত্তরঃ ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যটিতে ভাগবত, পুরাণ ও জয়দেবের গীতগোবিন্দের প্রভাব আছে।
১০। ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের প্রধান কাহিনি কী ?
উত্তরঃ ভূ-ভার হরণের জন্য বিষ্ণুর কৃষ্ণ রূপে এবং লক্ষ্মীর রাধা রূপে জন্মগ্রহণ এবং তাদের প্রেমলীলার কথাই এই কাব্যের প্রধান কাহিনি।
১১।‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে কয়টি রাগরাগিনীর কথা উল্লেখ আছে ? তার কয়েকটি নাম লিখুন।
উত্তরঃ ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে মোট ৩২ টি রাগরাগিনীর কথা উল্লেখ আছে। উদাহরণ— আহের, কোড়া, ধানুষী, পটমঞ্জুরী, বংগাল, বসন্ত, বিভাস, ভৈরবী, মল্লার ইত্যাদি।
১২। ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের ভাষাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যগুলি লিখুন।
উত্তরঃ ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের ভাষাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ—
ধ্বনিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য—
ক) অল্পপ্রাণ বর্ণ কোনও কোনও ক্ষেত্রে পরবর্তী ‘হ’ বর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মহাপ্রাণ বর্ণে পরিণত হয়েছে। যেমন— এখো > এক হো
খ) ‘ণ’ –কারের এবং আনুনাসিকের (ঁ) প্রয়োগ আধিক্য।
রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য—
ক) স্ত্রীলিঙ্গ পদের বিশেষণ ও স্ত্রীলিঙ্গ প্রাপ্তি এবং কর্তা অনুযায়ী ক্রিয়ার লিঙ্গ পরিবর্তন।
যেমন— বড়ায়ি চলিলী।
খ) কারকের ক্ষেত্রে যথার্থ গৌণকর্ম বা চতুর্থীর প্রয়োগ ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে রক্ষিত।
অধ্যায়ঃ অনুবাদ সাহিত্য (রামায়ণ অনুবাদ)
১। কৃত্তিবাস ওঝা কে ? তাঁর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিন।
উত্তর: বাল্মীকির রামায়ণের প্রথম ও শ্রেষ্ঠঅনুবাদক কৃত্তিবাস ওঝা । তাঁর রামায়ণ-কে ‘শ্রীরাম পাঁচালী’-ও বলা হয়। মৈথিলি ব্রাহ্মণদের অসমিয়া ভাষায় ওঝা বলা হয় । ওঝা শব্দটি এসেছে ‘উপাধ্যায়’ থেকে।
২। কৃত্তিবাসী রামায়ণ কার উদ্যোগে কোন বছর সর্বপ্রথম মুদ্রিত হয় ? উত্তর: শ্রীরামপুরের খ্রিস্টান মিশনের প্রাচ্য ভাষাবিদ উইলিয়াম কেরির উদ্যোগে ১৮০২- ০৩ খ্রিষ্টাব্দ এ সর্বপ্রথম কৃত্তিবাসী রামায়ণ শ্রীরামপুর মিশন থেকে প্রথম মুদ্রিত হয়।
৩। কৃত্তিবাস তার রামায়ণ রচনার কারণ হিসাবে কী বলেছেন ?
উত্তর: বাল্মীকি রামায়ণকে সাধারণের বোধগম্য করে তোলার উদ্দেশ্যকে কবি রামায়ণ অনুবাদের কারণ বলেছেন।
৪। কৃত্তিবাসের কাব্যের মৌলিকতা কোথায় ?
উত্তর: বেশ কিছু মৌলিক অংশ আছে। যেমন – বীরবাহুর যুদ্ধ, তরণী সেনের কাহিনি মহিরাবণ এর কথা,রামের অকালবোধন ,হনুমান কতৃর্ক রাবণের মৃত্যুবাণ হরণ, মৃত্যু পথযাত্রী রাবণের কাছে রামচন্দ্রের শিক্ষা , সীতার রাবণ মূর্তি অঙ্কন ও রামের সন্দেহ , লব কুশের যুদ্ধ প্রভৃতি। কৃত্তিবাসের সৃষ্টি পরবর্তী কালে দাসরথী রায় তাঁর গানে এবং গিরিশচন্দ্র ঘোষ তার নাটকে ঘটনাক্রম গ্রহণ করেন।
৫। বাংলা সাহিত্যে অনুবাদ কাব্য রচনা কোন সময় থেকে শুরু হয় ? অনুবাদ কাব্যের প্রধান ধারা কয়টি ও কী কী ?
উত্তরঃ বাংলা সাহিত্যে অনুবাদ কাব্য রচনা মধ্যযুগের সময় থেকে শুরু হয়।
অনুবাদ কাব্যের প্রধান ধারা তিনটি। যথা-
রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবত।
৬। রামায়ণ অনুবাদ সাহিত্যের চারজন কবি ও তাদের কাব্যের নাম লিখুন।
উত্তরঃরামায়ণ অনুবাদ সাহিত্যের চারজন কবি ও তাদের কাব্যের নামঃ
i) কৃত্তিবাস ওঝা পঞ্চদশ শতাব্দীর কবি। তাঁর কাব্যের নাম “শ্রীরাম পাঁচালী”।
ii) অদ্ভূত আচার্য ষোড়শ শতাব্দীর কবি। তাঁর কাব্যের নাম “অদ্ভুত রামায়ণ”।
iii) মাধব কন্দলী ষোড়শ শতাব্দীর কবি। তাঁর কাব্যের নাম “শ্রীরাম পাঁচালী”।
iv) শঙ্কর কবিচন্দ্র অষ্টাদশ শতাব্দীর কবি। তাঁর কাব্যের নাম “রামলীলা বা শ্রীরামমঙ্গল”।
৭। কৃত্তিবাসকে কোন কবি ‘এ বঙ্গের অলংকার’ বলেছেন ? রামায়ণের একজন মহিলা অনুবাদকের নাম ও তাঁর কাব্যের নাম লিখুন ?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর “চতুর্দশপদী কবিতাবলী”-তে কৃত্তিবাসকে এ বঙ্গের অলংকার বলেছেন।
রামায়ণের একজন মহিলা অনুবাদকের নাম হল চন্দ্রাবতী। তাঁর কাব্যের নাম “রামায়ণ”।
৮। রামায়নের শ্রেষ্ঠ অনুবাদক কে ? তাঁর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিন ?
উত্তরঃ রামায়নের শ্রেষ্ঠ অনুবাদক হলেন কৃত্তিবাস ওঝা।
কৃত্তিবাস নদীয়া জেলার ফুলিয়া গ্রামে শ্রীপঞ্চমী তিথিতে আদিত্যবারে(রবিবার) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম বনমালী এবং মাতার নাম মালিনী।
অধ্যায়ঃ অনুবাদ সাহিত্য (ভাগবত অনুবাদ)
১। মালাধর বসুর কাব্যের নাম কী ? তাঁর কাব্য আর কী কী নামে পরিচিত ?
উত্তরঃমালাধর বসুর কাব্যের নাম ‘শ্রীকৃষ্ণবিজয়’।
তাঁর কাব্যের অন্যান নাম : ‘গোবিন্দবিজয়’ বা ‘গোবিন্দমকঙ্গল’।
২। ভাগবতের প্রথম বাংলা অনুবাদ কে ? তাঁর উপাধি কী ?
উত্তরঃ ভাগবতের প্রথম বাংলা অনুবাদ : ভাগবতের প্রথম বাংলা অনুবাদ হলেন মালাধর বসু।
তাঁর উপাধি হল গুণরাজ খান।
৩। মালাধর বসু ভাগবতের কোন্ অংশের অনুবাদ করেন ? তাঁর কাব্যের পর্যায়গুলি কী কী ?
উত্তর: মালাধর বসু ভাগবতের দশম ও একাদশ স্কন্ধের অনুবাদ করেন।
তাঁর কাব্যের পর্যায় : তাঁর কাব্যের তিনটি পর্যায় – বৃন্দাবনলীলা, মথুরালীলা ও দ্বারকালীলা।
৪। ভাগবতের অনুবাদ ধারাটি স্তিমিত হয়ে পড়ার কারণগুলি কী কী ?
উত্তর: ভাগবতের অনুবাদ জনপ্রিয় না হওয়ার কারণ: ভাগবতের অনুবাদ জনপ্রিয় না হওয়ার কারণগুলি সম্পর্কে বলা যায় –
ক। বৈচিত্র্যের অভাব : ভাগবত মূলত কৃষ্ণাশ্রয়ী কাব্য। কৃষ্ণের মহিমা প্রচার করাই এ কাব্যের উদ্দেশ্য। ভাগবত ১২টি অধ্যায় বিশিষ্ট এক বিশাল কাব্য হলেও এতে বৈচিত্র্যের অভাব পরিলক্ষিত হয়।
খ। ভাগবতের কথা বাঙালি জীবন সংস্কারে পরিণত না হওয়া : বৈষ্ণব ভক্তিবাদের উৎস ও ভাবাদর্শের দার্শনিক অশ্রয়রূপে ভাগবতের প্রভাব বাঙালি সমাজে বিস্তৃতি লাভ করে। কিন্তু রামায়ণ – মহাভারতের
মতো ভাগবত কথা বাঙালির জীবন সংস্কারে পরিণত হয়নি।
গ। তত্ত্বকথার প্রাধান্য : রামায়ণ – মহাভারতের সরল আখ্যান জনসাধারণের মনোরঞ্জনে সক্ষম হয়েছে। ভাগবতে কাহিনির আবেদন গৌণ, তত্ত্বের আবেদন মুখ্য বলে ভাগবত প্রধানত পণ্ডিত সমাজের অনুশীলনের বিষয় হয়েছে।
ঘ। প্রতিভাশালী কবির অভাব : ভাগবতের শাখায় প্রতিভাশালী কবির আবির্ভাব ঘটেনি। ফলে ভাগবতের অনুবাদ রামায়ণ – মহাভারতের তুনলায় কম জনপ্রিয় ছিল।
৫। ‘শ্রীকৃষ্ণবিজয় ‘ কী জাতীয় রচনা ? রচয়িতার নামসহ গ্রন্থটির পরিচয় দিন ।
উত্তরঃ ‘শ্রীকৃষ্ণবিজয়’ কী জাতীয় রচনা:-
শ্রীকৃষ্ণবিজয় অনুবাদধর্মী রচনা।
‘শ্রীকৃষ্ণবিজয়’ গ্রন্থটির সংক্ষিপ্ত পরিচয়:-
কাব্যনামঃ শ্রীকৃষ্ণবিজয়
রচয়িতা:-মালাধর বসু
রচনাকাল:-১৪৭৩-৮০খ্রিস্টাব্দ
কাব্যের পৃষ্ঠপোষক:-রুকনুদ্দিনবরবক শাহ।
কাব্যের অন্য নাম:-গোবিন্দবিজয় বা গোবিন্দমঙ্গল
উদ্দেশ্য:-“লোক নিস্তারিতে গাই পাঁচালি রচিয়া ” -অশিক্ষিত বা সাধারণ মানুষকে
কৃষ্ণকথা শোনার জন্য মালাধর বসু পাঁচালি রচনা করেন।
৬।মালাধর বসু ভাগবতের কোন কোন অংশ অনুবাদ করেন ? অনাধিক এিশটি শব্দে তাঁর কৃতিত্ব শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় দিন।
উত্তরঃ মালাধর বসু ভাগবতের কোন কোন অংশ অনুবাদ করেন:-মালাধর বসু ভাগবতের দশম ও একাদশ স্কন্দ অনুবাদ করেন।
মালাধরের কৃতিত্ব বা শ্রেষ্ঠত্বঃ
i) তুর্কি আক্রমনের পর মানুষের মনে কৃষ্ণ চরিত্র আশা জাগায়।
ii) ভাগবতের কঠিন অংশ বাদ দিয়ে সহজ-সব়ল স্কন্দ দুটি অনুবাদ ।
iii) কৃষ্ণ ও যশোদা সম্পর্কের মধ্যে বাঙালিয়ানার ছাপ ।
iv) “নন্দেব় নন্দন কৃষ্ণ মোর প্রাননাথ” -উক্তিটি চৈতন্যদেবেব় প্রিয়।
V) “অহিংসা পরম ধর্ম”-এই তত্ত্বের প্রতিষ্ঠা।
৭। মধ্যযুগের সরাসরি রচনা কাল জ্ঞাপক প্রথম ভনিতা কোনটি ? এটি কার রচনা ? এতে রচনাকাল কত সাল পাওয়া যায় ?
উত্তরঃ মধ্যযুগের সরাসরি রচনা কাল জ্ঞাপক প্রথম ভনিতা:-মধ্যযুগের সরাসরি রচনা কাল জ্ঞাপক প্রথম ভনিতা হল-
“তেরশ পঁচানই শকে গ্রন্থ আরম্ভন।
চতুর্দশ দুইশকে হৈল সমাপন।।”
এটি কার রচনা: এই রচনাকল জ্ঞাপক ভনিতাটির রচয়িতা মালাধর বসু।
এর থেকে রচনাকাল যে সাল পাওয়া যায়ঃ –
তেরশ পঁচানই শক=১৩৯৫ শকাব্দ।
চতুর্দশ দুই শক=১৪০২ শকাব্দ।
১৩৯৫+৭৮=১৪৭৩ খ্রিস্টাব্দ।
১৪০২+৭৮=১৪৮০ খ্রিস্টাব্দ।
অর্থাৎ ১৪৭০-১৪৮০ খ্রিস্টাব্দ।
অধ্যায়ঃ অনুবাদ সাহিত্য (মহাভারত অনুবাদ)
১। বাংলা মহাভারতের শ্রেষ্ঠ অনুবাদক কে ? তার শ্রেষ্ঠত্বের কারণ কী ?
উত্তরঃ শ্রেষ্ঠ অনুবাদকঃ বাংলা মহাভারতের শ্রেষ্ঠ অনুবাদক কাশীরাম দাস।
কাশীরাম দাসের শ্রেষ্ঠত্বের কারণঃ বাংলা মহাভারতের অনুবাদে কাশীরাম দাসের শ্রেষ্ঠত্বের কারণগুলি হলো –
(i) আক্ষরিক অনুবাদ না করে মর্মানুবাদ করা।
(ii) মহাকাব্যিক ক্ল্যাসিকাল গাম্ভীর্য ত্যাগ করে পাঁচালী নির্মাণ ।
(iii)ভাষার গাম্ভীর্য নির্মাণ ।
(iv)ঘটনা ও চরিত্রের বাঙালিয়ানা।
(v)সহজ- সরল ভাষায় কাহিনি বর্ণন।
২।কাশীরাম দাসের পৈতৃক উপাধি কী ? তাঁর মহাভারতের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি লিখুন।
উত্তরঃ পৈতৃক উপাধিঃ কাশীরাম দাসের পৈতৃক উপাধি ছিল – দেব।
কাব্য বৈশিষ্ট্যঃ কাশীরাম দাসের মহাভারতের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হলো –
(i) উপমা ও অলংকার সমৃদ্ধ গাম্ভীর্যপূর্ণ কাব্য ।
(ii)কঠিন তত্ত্বকথা বর্জন ।
(iii)চরিত্রচিত্রণে বাঙালিয়ানার প্রভাব।
(iv) আক্ষরিক অনুবাদ না করে ভাবানুবাদ বা মর্মানুবাদ করা।
৩। কাশীরামের মহাভারতের নাম কী ? তিনি মহাভারতের কোন্ কোন্ অংশ অনুবাদ করেন ? এ সম্পর্কে প্রচলিত উক্তিটি লিখুন।
মহাভারতের নামঃ কাশীরামের মহাভারতের নাম “ভারত পাঁচালী “।
কোন্ কোন্ অংশ অনুবাদ করেনঃ কাশীরাম দাস মহাভারতের ‘আদি পর্ব ‘, ‘সভা পর্ব ‘, ‘বন পর্ব ‘, ও ‘বিরাট পর্ব’-এর কিছুটা অংশ অনুবাদ করেন।
এ সম্পর্কে প্রচলিত উক্তিঃ এসম্পর্কে প্রচলিত নন্দরামের উক্তিটি হলো –
” আাদি সভা বন বিরাটের কতদূর।
ইহা রচি কাশীদাস গেলা স্বর্গপুর।। “
৪। শ্রীকর নন্দীর কাব্যের নাম কী ? অষ্টাদশ শতকের দুজন মহাভারত অনুবাদকের নাম লিখুন । কাশীরাম দাসের বিরাট পর্ব অনুবাদের সমাপ্তির ভণিতাটি উদ্ধৃত করুন।
কাব্যের নামঃ শ্রীকর নন্দীর কাব্যের নাম “অশ্বমেধ কথা “।
দুজন মহাভারত অনুবাদকের নামঃ অষ্টাদশ শতকের দুজন মহাভারত অনুবাদকের নাম হলো –
(i) সুবুদ্ধি রায়
(ii) দুর্লভ সিংহ ।
সমাপ্তির ভণিতাঃ কাশীরাম দাসের বিরাট পর্ব অনুবাদের সমাপ্তির ভণিতাটি হলো –
” চন্দ্র বাণ পক্ষ ঋতু শক সুনিশ্চয়।
বিরাট হইল সাঙ্গ কাশীদাস কয়।। “
– অর্থাৎ ১৫২৬ শকাব্দে বিরাট পর্ব রচনার কাজ তিনি সমাপ্ত করেন।
৫। বাংলা মহাভারতের আদি অনুবাদক কে ? তার গ্রন্থটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উত্তরঃ আদি অনুবাদকঃ বাংলা মহাভারতের আদি অনুবাদক হলেন – কবীন্দ্র পরমেশ্বর।
গ্রন্থ পরিচয়ঃ কবীন্দ্র পরমেশ্বরের গ্রন্থের নাম “পাণ্ডব বিজয় “। আনুমানিক ষোড়শ শতকের প্রথম ভাগে গ্রন্থটি রচিত হয়। বাংলার শাসনকর্তা হুসেন শাহের রাজত্বকালে গ্রন্থটি রচনা করেন। আঠারোটি পর্বে রচনাটি সমাপ্ত হয়। তার কাব্যের কৃতিত্বের জন্য পরাগল খাঁ তাকে ‘কবীন্দ্র’ উপাধি দেন। তিনিই প্রথম বাংলা মহাভারতের রচয়িতা।
৬। “পঞ্চম বেদ” কোন রচনাকে বলা হয় ? ভারতের বাইরে কোথায় মহাভারতের প্রচার ছিল ?
উত্তরঃ “পঞ্চম বেদ” বলা হয় মহাভারতকে ।
** ভারতের বাইরে মহাভারতের প্রচার ছিল কম্বোডিয়া ও জাভায় ।
৭। মহাভারতের অনুবাদকদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় কে ? তার বংশ পরিচয় দিন ?
উত্তরঃ মহাভারতের অনুবাদকদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় হল কাশীরাম দাস ।
কাশীরাম দাসের বংশ পরিচয়:- কবির আবির্ভাব ষোড়শ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে। কাশীরাম দাসের জন্মস্থান বর্ধমানের কাটোয়ার নিকটবর্তী সিঙ্গি গ্রামে। কবির পিতার নাম হল কমলাকান্ত । কবিরা তিন ভাই কৃষ্ণরাম, গদাধর ও কাশীরাম (কবি)। তাদের বংশগত উপাধি হল দেব।
৮। কাশীদাসী মহাভারতের রচনাকাল ও কাশীদাসী মহাভারতের অভিনবত্ব কোথায় ?
উত্তরঃ কাশীদাসী মহাভারতের রচনাকাল ষোড়শ শতকের শেষ ভাগে ।
** কাশীদাসী মহাভারতের অভিনবত্ব হল – তাঁর কাব্যে সংযুক্ত হয়েছে শ্রীবৎস চিন্তার উপাখ্যান , জনা প্রবীর উপাখ্যান ইত্যাদি কাহিনী , যা মূল মহাভারতে ছিল না ।
৯। কাশীরাম দাসের পূর্বে বাংলায় মহাভারতের অনুবাদ করেছিলেন এমন দু’জনের নাম লিখুন। ঙ্কবীন্দ্র পরমেশ্বরের কাব্যের নাম কি ও কাব্যটির পরিচয় দিন ?
উত্তরঃ কাশীরাম দাসের পূর্বে বাংলায় মহাভারতের অনুবাদ করেছিলেন – কবীন্দ্র পরমেশ্বর , শ্রীকর নন্দী , বিজয় পণ্ডিত এবং সঞ্জয়।
** কবীন্দ্র পরমেশ্বরের কাব্যের নাম হল – ‘পাণ্ডববিজয়’ (১৫৩২)।
** কাব্যটি মহাভারতের ১৮ টি পর্বের অতি সংক্ষিপ্ত অনুবাদ। বাংলায় লেখা এটিই প্রথম মহাভারতের অনুবাদ বলে মনে করা হয় ।
অধ্যায়ঃ বৈষ্ণব পদ
১। বিদ্যাপতি কোন ভাষায় পদ রচনা করেন ? তাকে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অন্তর্ভুক্ত করার কারণ কী ?
উত্তর: বিদ্যাপতি কোন ভাষায় পদ রচনা করেন: বিদ্যাপতি মৈথিলী ভাষায় পদ রচনা করেন।
#বিদ্যাপতিকে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অন্তর্ভুক্ত করার কারণ:
(ক) মধ্যযুগের অন্যতম প্রধান সাহিত্যধারা বৈষ্ণবপদ। বিদ্যাপতির প্রায় পাঁচ শতাধিক পদ বাংলাদেশে প্রচলিত।
(খ) বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি চৈতন্যদেব স্বয়ং বিদ্যাপতির পদ আস্বাদন করেন।
(গ) বাংলায় বিদ্যাপতির পদগুলি ব্রজবুলি ভাষায় পাওয়া যায়। এই ভাষা আধুনিক যুগের কবিদেরও প্রভাবিত করে।
(ঘ) বিদ্যাপতিকে বাদ দিয়ে বাংলার মধ্যযুগের সাহিত্যের ইতিহাস রচনা করা সম্ভব নয়।
২.কাকে অভিনব জয়দেব বলা হয় ? কেন বলা হয় ?
উত্তর: কাকে অভিনব জয়দেব বলা হয়: বিদ্যাপতিকে অভিনব জয়দেব বলা হয়।
#কেন বলা হয়: রাজা শিবসিংহ বিদ্যাপতিকে অভিনব জয়দেব আখ্যা দেন। বিদ্যাপতি জয়দেবের “গীতগোবিন্দ” অনুসরণে বৈষ্ণবপদ রচনা করেন। তাই বিদ্যাপতিকে অভিনব জয়দেব বলা হয়।
৩.বৈষ্ণবীয় পঞ্চরস কাকে বলে ? পঞ্চরসের নামগুলি লিখুন।
উত্তর:বৈষ্ণবীয় পঞ্চরস:বৈষ্ণব শাস্ত্রে প্রিয়বস্তু হলো শ্রীকৃষ্ণ।শ্রীকৃষ্ণ যেহেতু লৌকিকতার ঊর্ধ্বে তাই তার কৃষ্ণরতিও ভিন্ন।এই কৃষ্ণরতি যখন ভক্তের মধ্যে থাকে তখন তা রসে পরিণত হয়,সেই রসকে বলা হয় ভক্তিরস।এই ভক্তিরসের পাঁচটি প্রকার আছে।পাঁচটি ভক্তিরসকে একত্রে বৈষ্ণবীয় পঞ্চরস বলে।
#পঞ্চরসের নাম:পাঁচটি রস হলো-শান্ত,দাস্য,সখ্য,বাৎসল্য ও মধুর।
৪। বিদ্যাপতির পদ “রাজকণ্ঠের মনিমালা” আর চন্ডীদাসের পদ “রুদ্রাক্ষমালা”-কে এ কথা বলেছেন ? কেন বলেছেন ?
উত্তর: কে একথা বলেছেন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একথা বলেছেন।
#কেন বলেছেন: বিদ্যাপতির পদে বাগবৈদগ্ধ, মন্ডনকলা,নাগরিক জীবনের চাকচিক্য,ভাষা ও অলংকারের ঐশ্বর্য প্রকাশিত হয়।অন্যদিকে চন্ডীদাসের পদে গ্রাম্য সরলতা, গৈরিক ও নিরাভরণ আন্তরিক আধ্যাত্মিকতার প্রকাশ দেখে রবীন্দ্রনাথ বিদ্যাপতির পদকে “রাজকণ্ঠের মনিমালা” আর চন্ডীদাসের পদকে “রুদ্রাক্ষমালা”র সঙ্গে তুলনা করেছেন।
৫। বিদ্যাপতির পদে উল্লেখিত মুসলমান রাজার নাম কী ? “বিদ্যাপতিগোষ্ঠী “ বইটি কার লেখা ? কোন ধরণের পদে বিদ্যাপতি আত্মবিশ্লেষণ করেছেন ?
উত্তরঃ বিদ্যাপতির পদে উল্লেখিত মুসলমান রাজার নাম নুসরত শাহ l
“বিদ্যাপতিগোষ্ঠী ” বইটির লেখক ডঃ সুকুমার সেন l
প্রার্থনা বিষয়ক পদে বিদ্যাপতি আত্মবিশ্লেষণ করেছেন।
৬। বিদ্যাপতির পদকে ‘cosmic imagination’ কে বলেছেন ? “বিদ্যাপতি ভক্ত নহেন কবি… গোবিন্দদাস যতবড় কবি, ততোধিক ভক্ত” কে বলেছেন ?
উত্তরঃ বিদ্যাপতির পদকে ‘cosmic imagination’ বলেছেন শ্রীকুমার বন্দোপাধ্যায় (বাংলা সাহিত্যে বিকাশের ধারা )
“বিদ্যাপতি ভক্ত নহেন কবি…” বলেছেন রবীন্দ্রনাথ l
৭। বিদ্যাপতির পদ প্রথম কে সংগ্রহ করেন ? বিদ্যাপতির আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ কোনটি ? ‘পদকল্পতরু’তে বিদ্যাপতির কটি পদ আছে ?
উত্তরঃ বিদ্যাপতির পদ প্রথম সংগ্রহ করেন জর্জ গিয়ার্সন l
বিদ্যাপতির আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ বিভাগসার ।
‘পদকল্পতরু’তে বিদ্যাপতির কটি পদ আছে আটটি ।
৮। বৈষ্ণব শব্দের উল্লেখ প্রথম কোথায় পাওয়া যায় ? বৈষ্ণব পদাবলীর নান্দীপাঠ কোন পর্যায়কে বলা হয় ?
উত্তরঃ বৈষ্ণব শব্দের উল্লেখ প্রথম কোথায় পাওয়া যায় মহাভারত এর শক্তিপদে ।
বৈষ্ণব পদাবলীর নান্দীপাঠ বলা হয় পূর্বরাগ পর্যায়কে।
৯। চন্ডিদাস যে চৈতন্যপূর্ববর্তী কবি তা কিভাবে জানা যায় ? চন্ডিদাসের শেষ্ঠত্ব কোন জাতীয় পদ রচনায় ? উদাহরণ দাও ?
উত্তরঃ চৈতন্যচরিতামৃত গ্রন্থে আছে –
“বিদ্যাপতি চন্ডিদাস শ্রীগীতগোবিন্দ /
এই তিন গীতে করায় প্রভু আনন্দ ।। ”
চন্ডিদাসের শেষ্ঠত্ব আক্ষেপানুরাগ এর পদে। যেমন-
“রাতি কইনু দিবস, দিবস কইনু রাতি /
বুঝিতে নারিনু বধূ তোমার পিরিতি।।”
১০। কাকে,কেন বৈষ্ণব গ্রন্থে ‘সরকার ঠাকুর’ বলা হয়েছে ?
উত্তর : #চৈতন্য সমকালীন পদকর্তা নরহরি সরকারকে বৈষ্ণব গ্রন্থে ‘সরকার ঠাকুর’ বলা হয়েছে।
##কারণ:- নরহরি সরকার জাতিতে বৈদ্য হলেও দীক্ষা দানে তাঁর অধিকার ছিল। তাই তিনি বৈষ্ণব গ্রন্থে ‘সরকার ঠাকুর’ বলে উল্লিখিত হয়েছেন।
১১। গোবিন্দদাসের বৃহৎ সংকলন কে,কোথা থেকে প্রকাশ করেন ?
উত্তর :-#ড.বিমানবিহারী মজুমদার মহাশয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে সংকলনটি প্রকাশ করেন,যেখানে ৮০০টি পদ আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
১২।বাংলা সাহিত্যে কোন কবিকে চন্ডীদাসের ভাবশিষ্য বলা হয় ? তাঁর সৃষ্ট রাধা চরিত্রের বৈশিষ্ট্য লিখুন।
উত্তর:- #বাংলা সাহিত্যে জ্ঞানদাসকে চন্ডীদাসের ভাবশিষ্য বলা হয়।
##জ্ঞানদাসের রাধার বৈশিষ্ট্য :-
i)তাঁর সৃষ্ট রাধা রোমান্টিক নায়িকার মতো হৃদয়ের অভিব্যক্তিকে প্রকাশ করে
ii)এই রাধার অতীতচারিতা অতুলনীয়।
iii)জ্ঞানদাসের রাধা লৌকিক থেকে লোকোত্তরের পথে যাত্রা করেছে।
১৩। ‘কড়চা’ কী ? দু’জন চৈতন্য সমকালীন পদাবলি রচয়িতার নাম লিখুন।
উত্তর : -# কড়চা:- চৈতন্যের বন্ধু,সতীর্থ ও অনুচর মুরারী গুপ্ত চৈতন্যের সমকালে বৈষ্ণব পদ রচনা করেছিলেন। সংস্কৃতে তিনি চৈতন্যজীবনী গ্রন্থ রচনা করেছিলেন, যা মুরারী গুপ্তের কড়চা নামে খ্যাত।
## দুজন চৈতন্য সমকালীন পদাবলি রচয়িতা হলেন নরহরি সরকার এবং বাসুদেব ঘোষ।
অধ্যায়ঃ চৈতন্য জীবনীকাব্য
১। চৈতন্য ভাগবত কার রচনা ? এর কয়টি খন্ড ও কয়টি পরিচ্ছেদ ?
উত্তর: চৈতন্য ভাগবত বৃন্দাবন দাসের রচনা।
চৈতন্য ভাগবতের তিনটি খন্ড। ১. আদি খন্ড- ১৫
২. মধ্য খন্ড- ২৬
৩. অন্ত খন্ড- ১0
মোট পরিচ্ছেদ – ৫১ টি ।
২। সংস্কৃত ভাষায় রচিত দুটি চৈতন্য জীবনী কাব্যের নাম ও রচয়িতার নাম সহ লিখুন।
উত্তর: সংস্কৃত ভাষায় রচিত দুটি চৈতন্য জীবনী কাব্যের নামঃ –
i) ‘চৈতন্য চরিতামৃতম’ , রচয়িতা-কবিকর্নপুর পরমানন্দ সেন।
ii) ‘চৈতন্যচন্দ্রামৃতম’, রচয়িতা- প্রবোধনন্দ সরস্বতী।
৩। এক ছত্র পদ রচনা না করেও চৈতন্যদেব বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন, এর কারণ গুলি কমবেশি চল্লিশটি মধ্যে লিখুন।
উত্তর:এক ছত্র পদ রচনা না করেও চৈতন্যদেব বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন। এর প্রধান কারণঃ
ক। তিনি এমন একজন ব্যক্তি যিনি বাংলা সাহিত্যকে প্রভাবিত করেছেন।
খ। তিনি সাহিত্য রচনা না করলেও তাকে নিয়ে অনেক সাহিত্য রচিত হয়েছে।
গ। সাহিত্য সমাজের দর্পন সেই সমাজকে তিনি পাল্টে দিয়েছেন।
ঘ। চৈতন্য পরবর্তী কালে অন্য সাহিত্য অলোচনায় প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেছেন।
৪। কাকে , কেন ‘চৈতন্যলীলার ব্যাস’ বলা হয় ?
উত্তর: প্রথম চৈতন্য জীবনীকার বৃন্দাবন দাসকে ‘চৈতন্যলীলার ব্যাস’ বলা হয়।
বলার কারণ: ব্যাসদেব যেভাবে কৃষ্ণের বাল্যলীলা ও আবির্ভাব বর্ণনা করেছেন ঠিক, একইভাবে তিনি প্রথম চৈতন্য দেবের বাল্যলীলা ও আবির্ভাব বর্ণনা করেছেন। ভাগবতের ব্যাসদেবের অনুকরণের জন্য কৃষ্ণদাস কবিরাজ ‘শ্রীচৈতন্য চরিতামৃতম ‘ গ্রন্থে আদি লীলায় বৃন্দাবনদাসকে ‘চৈতন্যলীলার ব্যাস’ বলেছেন।
১। কে সর্বপ্রথম চৈতন্য জীবনী কাব্য রচনা করেন ? তাঁর রচিত চৈতন্যজীবনী কাব্যটির নাম কী ? গ্রন্থটি কোন ভাষায় রচিত ? গ্রন্থটির সর্গ সংখ্যা উল্লেখ করুন ?
উত্তরঃ মুরারি গুপ্ত সর্বপ্রথম চৈতন্যজীবনী কাব্য রচনা করেন।
তাঁর রচিত চৈতন্যজীবনী কাব্যটির নাম –‘শ্রীশ্রীকৃষ্ণচৈতন্যচরিতামৃতম’।
আলোচ্য গ্রন্থটি সংস্কৃত ভাষায় লেখা।
গ্রন্থটির সর্গ সংখ্যা হল- আটত্রিশটি (৭৮)।
২। কে , কাকে চৈতন্য লীলার ব্যাস বলেছেন ? তাঁর রচিত চৈতন্য জীবনীগ্রন্থটির নাম কী ? গ্রন্থটির পূর্বনাম উল্লেখ করুন ?
উত্তরঃ কৃষ্ণদাস কবিরাজ বৃন্দাবন দাসকে বৈষ্ণব সমাজের ‘চৈতন্যলীলার ব্যাস’ বলে সন্মানিত করেছেন।
বৃন্দাবনদাস রচিত চৈতন্য জীবনী গ্রন্থটির নাম হল- ‘চৈতন্যভাগবত’।
গ্রন্থটির পূর্বনাম হল-‘চৈতন্যমঙ্গল’।
৩। কোন্ চৈতন্যজীবনী গ্রন্থটিকে বৈষ্ণব সমাজের বেদ বলা হয় ? গ্রন্থটির রচয়িতা কে ? কে গ্রন্থটিকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন ?
উত্তরঃ ‘শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত’ গ্রন্থটিকে বৈষ্ণব সমাজের বেদ বলা হয়।
গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন কৃষ্ণদাস কবিরাজ।
‘শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত’ গ্রন্থটিকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন Edward C. Dimock.
৪। ‘শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত’ গ্রন্থটির দুটি বৈশিষ্ট্য লিখুন। অন্যান্য চৈতন্য জীবনী গ্রন্থ থেকে উক্ত গ্রন্থটির মৌলিকতা লিখুন। ১+১
উত্তরঃ ‘শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত’ গ্রন্থটির বৈশিষ্ট্য:
(ক) ‘শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত’ গ্রন্থটি পাঠের উদ্দেশ্যে রচিত।
(খ) গ্রন্থটি শুধুমাত্র আখ্যান গ্রন্থ নয়,তত্ত্বমূলক গ্রন্থও বটে।
মৌলিকতা:
(ক)’শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত’ গ্রন্থটি শুধু জীবনীগ্রন্থ নয়, এটি সন্তজীবনী কাব্য বা Hagiography.
(খ) গ্রন্থটি কতকগুলি দার্শনিক তত্ত্বের ব্যাখ্যা আছে।যেমন- ‘অচিন্ত্য-ভেদাভেদ তত্ত্ব’, ‘সাধ্যসাধন তত্ত্ব’, ‘গোপীতত্ত্ব’, ‘কৃষ্ণতত্ত্ব’ প্রভৃতি। আর এখানেই ‘শ্রীচৈতন্যচরিতামৃত’ গ্রন্থটির মৌলিকত্ব ফুটে উঠেছে।
অধ্যায়ঃ মনসামঙ্গল
১। মধ্যযুগে মঙ্গল কাব্যধারা সৃষ্টির পিছনে প্রধান কারণগুলি কী কী ?
উত্তরঃ মধ্যযুগে মঙ্গল কাব্যধারা সৃষ্টির পিছনে প্রধান কারণগুলি হল-
i) তুর্কি আক্রমনের ফলে সৃষ্ট অরাজকতা মানুষকে দেবদেবী নির্ভর করে তোলে ।
ii) বিপন্ন আর্য ওঅনার্যে র মিলনের ফলে অনার্য দেবদেবীর পূজাও তার প্রচার শুরু হয়। iii) আগ্রহী ও প্রতিভাধর কবির অভাব।
iv) নদী ও জঙ্গলাকীর্ন বাংলাদেশে মানুষের ভয়-ভীতি।
২। মনসা মঙ্গল ধারার প্রধান তিনটি উপধারার নাম ও দুজন করে কবির নাম কাব্যের নামসহ লিখুন। উত্তরঃ মনসামঙ্গল ধারার প্রধান তিনটি উপধারা হল-
i) রাঢ়ের ধারা।
ii) পূর্ববঙ্গের ধারা।
iii) উত্তরবঙ্গ ও কামরূপের ধারা।
দুই জন করে কবি ও কাব্যের নাম:
রাঢ়ের ধারা- বিপ্রদাস পিপলাই–‘মনসামঙ্গল’ , কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ –‘মনসামঙ্গল’ ।
পূর্ববঙ্গের ধারা-নারায়নদেব-‘পদ্মাপুরাণ’ ও বিজয়গুপ্ত-‘পদ্মাপুরাণ’ ।
উত্তরবঙ্গ ও কামরূপের ধারা-তন্ত্রবিভূতি-‘মনসামঙ্গল’ ও জগজ্জীবন ঘোষাল – ‘মনসামঙ্গল’।
৩। ক্ষেমানন্দের কাব্যে কোন কবির প্রভাব আছে ? কত খ্রিষ্টাব্দে কোথা থেকে তাঁর কাব্যটি প্রথম মুদ্রিত হয় ?
উত্তরঃ ক্ষেমানন্দের কাব্যে ‘অভয়ামঙ্গল’ কাব্যের রচয়িতা মুকুন্দ চক্রবর্তী র প্রভাব আছে। কাব্যটি প্রথম মুদ্রিত হয়ঃ ১৮৪৪ খ্রিষ্টাব্দে কাব্যটি শ্রীরামপুর মিশন থেকে মুদ্রিত হয়।
৪। ভনিতাটির রচয়িতা ও রচনাকারী লিখুন।
“জলধির বামেতে ভুবন মাঝে দ্বার।
শকে রয়ে দ্বিজবংশী পুরাণ পদ্মার।। ”
উত্তরঃ মনসামঙ্গলের কবি দ্বিজবংশীদাসের ভনিতা ।
রচনাকাল-১৪১৭ শকাব্দ অর্থাৎ ১৪৯৫ খ্রিস্টাব্দ।
৫। ভণিতাটির রচয়িতা ও রচনাকাল লিখুন।
“ঋতুশশী বেদ শশী পরিমিত শক।
সুলতান হুসেন শাহ নৃপতি তিলক।। ”
উত্তরঃ মনসামঙ্গলের কবি বিজয়গুপ্তের ভনিতা।
রচনাকাল ১৪১৬ শকাব্দ অর্থাৎ ১৪৯৪ খ্রিষ্টাব্দ।
অধ্যায়ঃ চণ্ডীমঙ্গল
১.চন্ডীমঙ্গল কাব্যের আদি কবি কে ? কে কোন গ্রন্থে এই কবির প্রশংসা করেছেন ?
উত্তরঃ চন্ডীমঙ্গল কাব্যের আদি কবি মানিক দত্ত।
# #মুকুন্দ চক্রবর্তী তার ”চন্ডীমঙ্গল” কাব্যে এই কবির গুণগান করেছেন।
২.মধ্যযুগের কোন কবি সম্পর্কে বলা হয় ‘আধুনিক যুগে জন্মালে তিনি ঔপন্যাসিক হতেন।’ কে কোন গ্রন্থে এ কথা বলেন ?
উত্তরঃ- চন্ডীমঙ্গল -এর কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী সম্পর্কে বলা হয় ‘আধুনিক যুগে জন্মালে তিনি ঔপন্যাসিক হতেন।’ ।
শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় তার ‘বঙ্গ সাহিত্যে উপন্যাসের ধারা’ গ্রন্থে এ কথা বলেছেন।
৩.মুকুন্দ চক্রবর্তীর কব্যের নাম কী ? তাঁর কাব্যের কাল জ্ঞাপনী শ্লোকটি লিখুন।
উত্তরঃ মুকুন্দ চক্রবর্তীর কব্যের নাম ‘চন্ডীমঙ্গল’ বা ‘অভয়ামঙ্গল’ বা ‘অম্বিকামঙ্গল’।
##তাঁর কাব্যের কাল জ্ঞাপনী শ্লোকটি হল –
“শাকে রস রস বেদ শশাঙ্ক গনিতা।
কত দিনে দিলা গীত হরের বনিতা।।”
৪.’চন্ডীমঙ্গল’ কাব্যধারার কয়টি কাহিনি বৃত্ত ও কী কী ?
উত্তরঃ চন্ডীমঙ্গল’ কাব্যধারার দুইটি কাহিনিবৃত্ত। যথা:-
(১) কালকেতুর উপাখ্যান।
(২) ধনপতি-লহলা-খুল্লনা উপাখ্যান।
অধ্যায়ঃ ধর্মমঙ্গল
১) ধর্মমঙ্গল কাব্যকে কে,কেন রাঢ়ের জাতীয় মহাকাব্য বলেছেন ?
উত্তর: ধর্মমঙ্গল কাব্যকে কে রাঢ়ের জাতীয় মহাকাব্য বলেছেন -ডঃসুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় ধর্ম মঙ্গলকে ‘রাঢ়ের জাতীয় মহাকাব্য ‘ বলেছেন।
কারণ-
১)রাঢ় বাংলার ইতিহাস-সমাজ- সংস্কৃতির আলেখ্য নির্মাণ।
২)লাউসেনের মতো জাতীয় বীর চরিত্র নির্মাণ।
৩)স্বর্গ ও মর্ত্যের কাহিনী বৃত্ত রচনা ।
৪)মহাকাব্যিক বিশালতা,চরিত্রের মহত্ত্ব,আদর্শ ও ধর্মের জয়, অধর্মের পরাজয় প্রভৃতি মহাকাব্যিক পরিবেশ করেছেন বলে ।
২)ধর্মমঙ্গল কাব্যের কয়টি কাহিনী বৃত্ত এবং কী কী ?
প্রতিটি কাহিনীর প্রধান চরিত্র গুলির নাম লিখুন?
উত্তর: ধর্মমঙ্গল কাব্যের কাহিনী বৃত্ত -ধর্মমঙ্গল কাব্যের দুইটি কাহিনী বৃত্ত রয়েছে।সেগুলি হল-
i)হরিশ্চন্দ্রের কাহিনী এবং
ii)লাউসেনের কাহিনী
প্রধান চরিত্র গুলির নাম- রাজা হরিশ্চন্দ্রের কাহিনীর চরিত্র:রাজা হরিশ্চন্দ্র, রানী মদনা, রাজপুত্র লুইধর।
লাউসেনের কাহিনীর চরিত্র:রঞ্জাবতী,কালুডোম, লখাই,কানাড়া,লাউসেন,মহামদ, কলিঙ্গা।
৩) ধর্মমঙ্গলের দুজন কবি এবং তাদের কাব্যের নাম লিখুন ? আধুনিক কালে কোন কবিকে ভৌতিক কবি বলা হয় ?
উত্তর:দুজন কবি এবং তাদের কাব্যের নাম- ধর্মমঙ্গলের দুজন কবি হলেন ১)রূপরাম চক্রবর্তী তাঁর কাব্যের নাম-“অনাদিমঙ্গল।” ২)মানিকরাম গাঙ্গুলি তাঁর কাব্যের নাম “শ্রীধর্মমঙ্গল।”
আধুনিক কালে কোন কবিকে ভৌতিক কবি বলা হয়-“ময়ূরভট্ট”কে আধুনিক কালে ভৌতিক কবি বলা হয়।
৪) ধর্মমঙ্গল কাব্যের শ্রেষ্ঠ কবি কে ? তাঁর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিন ?
উত্তর: শ্রেষ্ঠ কবি– ধর্মমঙ্গল কাব্যের শ্রেষ্ঠ কবি ঘনরাম চক্রবর্তী।
ঘনরাম চক্রবর্তীর সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ
কবির জন্মকাল: ১৬৬৯ খ্রী:
কবির জন্মস্থান: বর্ধমান জেলার কইয়ড় পরগনার কৃষ্ণপুর গ্রামে।
পিতা-মাতার নাম: গৌরিকান্ত এবং সীতা। তাঁর কাব্যের নাম- ‘অনাদিমঙ্গল’।
অধ্যায়ঃ শিবায়ন কাব্য বা শিব মঙ্গল
১. সপ্তদশ শতকের দুজন শিবায়ন কাব্য রচয়িতা ও তাদের কাব্যের নাম লিখুন ?
উত্তর: সপ্তদশ শতকের দুজন শিবায়ন কাব্য রচিয়তা হলেন –
i) শঙ্কর কবিচন্দ্র ও
ii) রামকৃষ্ণ রায়।
তাদের কাব্যের নাম হল –
i) শঙ্কর কবিচন্দ্র -‘ শিবমঙ্গল ‘
ii) রামকৃষ্ণ রায় -‘ শিবসঙ্গিত বা শিবায়ন ‘।
২. শিবায়ন কাব্য ধারার শ্রেষ্ঠ কবি কে ? তার কাব্যের নাম কী ? তিনি কোন শতকের কবি ? তার কাব্য কয়টি পালায় বিভক্ত ?
উত্তর: শিবায়ন কাব্য ধারার শ্রেষ্ঠ কবি – রামেশ্বর ভট্টাচার্য।
∆ তার কাব্যের নাম – ‘শিব-সংকীর্তন ‘।
∆ তিনি অষ্টাদশ শতকের কবি।
∆ তার কাব্য আটটি পালায় বিভক্ত।
৩. শিবায়ন কাব্য ধারার কবিদের মধ্যে রামেশ্বর ভট্টাচার্যের শ্রেষ্ঠত্বের কারণ কী ?
উত্তর: শিবায়ন কাব্য ধারার কবিদের মধ্যে রামেশ্বর ভট্টাচার্যের শ্রেষ্ঠ।
তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের কারণ: তার শ্রেষ্ঠত্বের কারণ গুলি হল –
i) রামেশ্বর ভট্টাচার্যের অসাধারণ কবিত্বশক্তি ও ভাষার সরসতা।
ii) তার কাব্যে যেমন বাস্তবতাবোধ রয়েছে,তেমনি রয়েছে আলংকারিক কলাকৌশল।
iii) কবি তার কাব্যে গার্হস্থ্য জীবনের বাস্তব-রস পরিবেশন করেছেন।
iv) শিব চরিত্র বর্ণনায় কবি যেমন সরস কবিচিত্তের পরিচয় দিয়েছেন,তেমনি শিব চরিত্রটিকে মৌলিকত্বের মধ্যদিয়ে বাস্তব করে তুলেছেন।
৪. শিবায়ন কাব্য ধারার অন্যান্য চারজন কবি ও তাদের কাব্যের নাম লিখুন ?
উত্তর: শিবায়ন কাব্যধারার অন্যান্য কবি ও কাব্য:
শিবায়ন কাব্যধারার অন্যান্য চারজন কবি ও তাদের কাব্যের নাম হল –
i) দ্বিজ মনিরাম – ‘বৈদ্যনাথমঙ্গল’,
ii) দ্বিজ কালিদাস – ‘কলিকাবিলাস’,
iii) লক্ষ্মণ দেব – ‘শিবের গীত’ ও
iv) দ্বিজ নিত্যানন্দ – ‘ শিবায়ন মৎস্য ধরার পালা ‘।
৫) শিবায়ন কাব্যকে কি মঙ্গল কাব্যের অন্তর্ভুক্ত করা যায় ? উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দিন ?
উত্তর: শিবায়ন কাব্যধরা নামে মঙ্গল ধারা হলেও প্রচলিত মঙ্গল কাব্যের অন্তর্ভুক্ত করা যায় না, কারণ হলো–
ক) মঙ্গল কাব্যের চারটি খন্ড থাকে।যথাক্রমে- বন্দনা, গ্রন্থ উৎপত্তির কারন, দেবখন্ড এবং নরখন্ড ।যা শিবায়ন মঙ্গলকাব্য ধারায় নেই।
খ) মঙ্গল কাব্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল পূঁজা ও মাহাত্ম প্রচারের জন্য সর্বভ্রষ্ট কোন চরিত্রের পরিচয় শিবায়ন মঙ্গল ধারায় দেখা যায় না।
গ)বিষয়গত বিচারে এটির মঙ্গল কাব্যের সাথে মিল থাকলেও আঙ্গিকগত বিচারে এটি মঙ্গল কাব্যের সাথে কোনো মিল নেই।
ঘ)মঙ্গল কাব্যে যেরকম আমরা নায়িকার বারমাস্যা, নারীগনের দরিদ্রতা, পূঁজা প্রচারের শেষে চরিত্রের স্বর্গে প্রত্যাবর্তন , ইত্যাদি গৌণ বৈশিষ্টগুলি দেখতে পাই, এগুলি শিবায়ন কাব্যে নেই।
৬)শিবায়ন কাব্যধারার আদি কবি কে? তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিন।
উত্তর: শিবায়ন কাব্যধারার আদি কবি হলেন শংকর কবিচন্দ্র।
শংকর কবিচন্দ্র পরিচয়:- সপ্তদশ শতকের শিবায়ন কাব্যের কবি শংকর কবিচন্দ্র বিষ্ণুপুরের এক ব্রাহ্মন বংশে জন্মগ্রহণ করেন।
পৃষ্টপোষকতা:-
বিষ্ণুপুররাজ গোপাল সিংহের সভাকবি শংকর কবিচন্দ্র রামায়ন, মহাভারত,ভাগবত এবং শীতলামঙ্গল কাব্য রচনা করেন।
কাব্য পরিচয়ঃ
তার লেখা শিবায়ন কাব্যের পুরো পুঁথি পাওয়া যায়নি।১৬৮০ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি সময়ে লেখা শিবায়ন কাব্যের “মাছধরা পালা” শীর্ষক একটি পালা পাওয়া গিয়েছে। এ পালাটি বাস্তবধর্মী ও চিত্তাকর্ষক দেবী পার্বতী মেছুনির বেশ ধরে শিবকে কামাবিষ্ট করলে শিবের যে আচরন প্রকাশ পেয়েছে তা গ্রাম্যরুচি সুলভ।
৭) বাংলায় শিবায়ন কাব্যধারার জনপ্রিয়তার কারণগুলি কী কী ?
উত্তর: বাংলায় শিবায়ন কাব্যধারার জনপ্রিয়তার কারণগুলি হলো:-
ক)শিবায়ন কাব্যে শিব ও তার গার্হস্থ্য জীবন গ্রাম্য সাধারণ মানুষের মতো।
খ)পৌরাণিক শিব অপেক্ষা গ্রাম্য শিবের চরিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে।
গ)বাংলায় শিবায়ন কাব্যধারার জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ হলো – দরিদ্র ও সাধারণ মানুষের মধ্যে শিবের গ্রহন যোগ্যতা।
ঘ)এছাড়াও রয়েছে শিব চরিত্রের Flexibility ।
মঙ্গলকাব্যের গৌণ ধারা
১) মঙ্গল কাব্যের দুটি গৌণ ধারার নাম লিখুন ? এই ধারার দুজন করে কবি ও কাব্যের নাম লিখুন।
উওর-মঙ্গল কাব্যের দুটি গৌণ ধারা:-মঙ্গল কাব্যের দুটি গৌণ ধারা হলো,
ক)কৃষ্ণমঙ্গল
খ)কালিকা মঙ্গল।
**কৃষ্ণমঙ্গল ধারার দুজনকবি ও কাব্যের নাম:
১)কৃষ্ণমঙ্গলের কবি ঘনশ্যাম দাস,তার কাব্যের নাম ‘কৃষ্ণ বিলাস’।
২)কবি কৃষ্ণদাস ,তাঁর কাব্যের নাম ‘কৃষ্ণমঙ্গল’।
** কালিকা মঙ্গল ধারার দুজনকবি ও কাব্যের নাম:
১)কালিকা মঙ্গলের কবি বলরাম চক্রবর্তী, তার কাব্যের নাম ‘কালিকা মঙ্গল’।
২)কবি রামপ্রসাদ সেন,তার কাব্যের নাম ‘বিদ্যাসুন্দর’।
২) অন্নদামঙ্গল কাব্যের খন্ড কয়টি ? তাঁর কাহিনিবৃও উল্লেখ করুন।
উওর: অন্নদা মঙ্গল কাব্যের খন্ড: অন্নদা মঙ্গল কাব্য তিনটি খন্ড নিয়ে গঠিত। যথা-
:১)অন্নদা মঙ্গল ।
২)কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দর কাব্য এবং
৩)মানসিংহ।
** কাহিনিবৃও : ১ম খন্ড,,মঙ্গলকাব্যের মত অন্নদামঙ্গল খন্ডে দেবী অন্নদার মাহাত্ম্য বণিত হয়েছে।সতীর দেহত্যাগ,শিব পাবতীর বিবাহ পৌরাণিক কাহিনি খন্ডের প্রথমে বলা হয়েছে।
২য় খন্ড,,বিদ্যা সুন্দরের সঙ্গে মূল কাহিনির কোনো সম্পর্ক নেই।এখানে বধমানের রাজকন্যা বিদ্যা ও কাঞীর রাজ কুমার সুন্দর এর প্রেম কাহিনি বণিত হয়।
বিষয়ঃ নাথ সাহিত্য
১। নাথ সাহিত্য বলতে কী বোঝায় ?
উত্তরঃ বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগে শিব-উপাসক এক শ্রেণীর যোগী সম্প্রদায়ের নাথ ধর্মের কাহিনী অবলম্বনে রচিত কাব্য হল নাথ সাহিত্য।
২। নাথ সাহিত্যের উল্লেখ্যযোগ্য কবি কে কে ?
উত্তরঃ নাথ সাহিত্যের উল্লেখ্যযোগ্য কবি শেখ ফয়জুল্লাহ, ভীমসেন রায় ও শ্যামাদাস সেন।
৩। ‘‘গোরক্ষ বিজয়’’ এর রচিয়তা কে ?
উত্তরঃ ‘‘গোরক্ষ বিজয়’’ এর রচিয়তা শেখ ফয়জুল্লাহ।
৪। ময়নামতি বা গোপীচন্দ্র অবলম্বনেরচিত গান প্রথম কে সংগ্রহ করেন ?
উত্তরঃ ময়নামতি বা গোপীচন্দ্র অবলম্বনেরচিত গান প্রথম সংগ্রহ করেন জর্জ গিয়ার্সন। ১৮৭৮ সালে রংপুরথেকে সংগ্রহ করেন।
৫। ময়নামতি গোপীচন্দ্রের গান কাব্যের উল্লেখযোগ্য রচিয়তা কে কে ?
উত্তরঃ ময়নামতি গোপীচন্দ্রের গান কাব্যের উল্লেখযোগ্য রচিয়তা দুর্লভ মল্লিক, ভবানীদাস ও শুকুর আহমেদ।
৬। গোরক্ষ বিজয় এর উপজীব্য বিষয় কী ?
উত্তরঃ নাথ বিশ্বাসজাত যুগের মহিমা এবংনারী ব্যভিচারপ্রধান সমাজচিত্রের বর্ণনা গোরক্ষ বিজয় এর উপজীব্য বিষয়।
৭। শেখ ফয়জুল্লাহ রচিত গ্রন্থের সংখ্যা কয়টি ও কী কী ?
উত্তরঃ শেখ ফয়জুল্লাহ রচিত গ্রন্থের সংখ্যা ৫টি। যথা- (ক) গোরক্ষ বিজয় বা গোর্খ বিজয় (খ) গাজী বিজয় (গ) সত্যপীর (ঘ) জয়নালের চৌতিশা (ঙ) রাগনামা।
৮। “মীনচেতন’’ কে রচনা করেছেন ?
উত্তরঃ “মীনচেতন’’ রচনা করেন শ্যামাদাস সেন।
৯। “মীনচেতন’’ কে সম্পাদনা করেছেন ?
উত্তরঃ “মীনচেতন’’ সম্পাদনা করেন ডঃ নলীনিকান্ত ভট্টশালী।
অধ্যায়ঃ শাক্ত পদ
১। রামপ্রসাদ সেনের পদগুলি কেন এত জনপ্রিয় হয়েছে ?
উত্তর: রামপ্রসাদ সেনের পদগুলির জনপ্রিয়তার কারণগুলি নিম্নরূপ:– (ক) রামপ্রসাদ সেনের গানগুলি অতি সহজ সরল ভাষায় রচিত।
(খ) তাঁর পদগুলিতে রূপবর্ণনা ও সাধনাক্রম বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। (গ) রামপ্রসাদের পদে লোকসুর ও গ্ৰামীন সরলতা বেশি।
(ঘ) রামপ্রসাদ সেন সাধারণ মানুষের কর্ম ক্লিষ্ট জীবনের সহজ মাতৃ ব্যাকুলতায় ভক্তিকে রূপান্তরিত করেছিলেন।
২। দুজন মুসলমান শাক্ত পদকর্তার নাম ও একজনের একটি পদের উদাহরণ দিন।
উত্তর: দুজন মুসলমান শাক্ত পদকর্তার নাম পদকর্তার নামঃ -গোল মাহমুদ,কেয়ামত আলী খাঁ।
গোল মাহমুদের পদটি হল:–.
“উন্মত্তা,ছিন্নমস্তা এ রমনী কা’র।”।
৩। শাক্ত পদাবলীর অন্য নাম কী ও কেন ?
উত্তর: শাক্ত পদাবলীর অন্য নাম:শাক্ত পদাবলীর অন্য নাম ‘প্রসাদী সংগীত’।
কেন এই নাম:— জনপ্রিয় কবি সাধক রামপ্রসাদ সেনের জনপ্রিয়তাতে শাক্তপদ মাত্র ই প্রসাদী সংগীত নামে খ্যাত।
৪। কমলাকান্তের প্রথম জীবনে লেখা রচনাটির নাম কী ? তাঁর আগমনী পর্যায়ের একটি পদ লিখুন ?
উত্তরঃ রচনাটির নামঃ- কমলাকান্তের প্রথম জীবনে লেখা রচনাটির নাম হল –‘সাধক-রঞ্জন’ ‘।
কমলাকান্তের একটি আগমনী পদ হলঃ–
” আমি কী হেরিলাম নিশি স্বপনে।”
৫। শাক্ত কথাটির অর্থ কী ? অষ্টাদশ শতকে শাক্তপদ সৃষ্টির পিছনে কারণ গুলি কী কী ?
উত্তর: শাক্ত কথাটির অর্থ হল – শক্তির উপাসক।
অষ্টাদশ শতকে শাক্তপদ সৃষ্টির পিছনে কারণ গুলি হল নিম্নরূপ –
(ক) জমিদার ও উচ্চশ্রেনির অত্যাচার।
(খ) বর্গী আক্রমনের প্রভাব।
(গ) সামাজিক উগ্রতা ও কুসংস্কার।
(ঘ) নৈতিক অবক্ষয়।
৬। ‘মালসী’ কাকে বলে ? ‘মালসী’ শব্দের উৎস কী ?
উত্তর: মালসী :- অষ্টাদশ শতকের শাক্তপদকে মালসী বলে।
• মালসী কথার উৎস হল – মালব-শ্রী-রাগ থেকে মালসী কথার উৎপত্তি।
৭। প্রসাদি সূর কাকে বলে ? এর স্রষ্টা কে ?
উত্তর: রামপ্রসাদ সেনের সহজ সরল ভাষায় গাওয়া শাক্তপদের সুরকেই প্রসাদি সুর নাম দেওয়া হয়।
• প্রসাদি সুরের স্রষ্টা হলেন – রামপ্রসাদ সেন।
৮। আগমনী কাকে বলে ? এই পর্যায়ের পদ রচনায় শ্রেষ্ঠ কে ? তাঁর একটি আগমনী পদের উদাহরণ দিন ?
উত্তর: আগমনী :- উমার ঘরে আসা বা আগমণ বিষয়ক যে গান, তাকে আগমনী বলে।
• এই পর্যায়ের পদ রচনায় শ্রেষ্ঠ – কমলাকান্ত ভট্টাচার্য্য।
কমলাকান্তের একটি আগমনী পদ হলঃ–
“আমি কী হেরিলাম নিশি স্বপনে।”
অধ্যায়ঃ আরাকান রাজসভা
১। কোন হিন্দিকাব্য অবলম্বনে দৌলত কাজী তাঁর ‘ সতীময়না’ বা ‘লোরচন্দ্রানী’ কাব্যটি রচনা করেন ? এই কাব্যের প্রধান চরিত্রগুলির নাম লিখুন।
উত্তর: হিন্দি কবি মিয়াসাধনের ‘ মৈনা কো সত্ ‘ কাব্য অবলম্বনে দৌলত কাজী তাঁর ‘সতীময়না ‘ বা ‘লোরচন্দ্রানী ‘ কাব্যটি রচনা করেন।
এই কাব্যের প্রধান চরিত্রগুলি হল – চন্দ্রানী, লোরক, লোরকের স্ত্রী ময়নামতী ।
২। কাদের নির্দেশে সৈয়দ আলাওল তাঁর কাব্যগুলি রচনা করেন ? তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাব্য কোনটি ?
উত্তর: আরাকানরাজ সুধর্মা ও রাজমন্ত্রী মাগন ঠাকুরের নির্দেশে সৈয়দ আলাওল তাঁর কাব্যগুলি রচনা করেন।
তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাব্য হল ‘পদ্মাবতী’ ।
৩। ‘পদ্মাবতী ‘ কার লেখা ? এটি কার, কোন গ্রন্থের অনুবাদ ? এই গ্রন্থের দুটি প্রধান চরিত্রের নাম লিখুন।
উত্তর: ‘পদ্মাবতী ‘ সৈয়দ আলাওলের লেখা।
এটি হিন্দি কবি মালিক মুহম্মদ জায়সীর লেখা ‘পদুমাবত্’ গ্রন্থের অনুবাদ।
এই গ্রন্থের দুটি প্রধান চরিত্র হল– (ক) রাণী পদ্মাবতী, (খ)আলাউদ্দিন খিলজী।
৪। মধ্যযুগে রচিত দৈবী মাহাত্ম্য বর্জিত বিশুদ্ধ মানবপ্রেমের আখ্যান কোন গ্রন্থকে বলা হয় ? গ্রন্থটি কে , কার নির্দেশে রচনা করেন ?
উত্তর: মধ্যযুগে রচিত দৈবী মাহাত্ম্য বর্জিত বিশুদ্ধ মানবপ্রেমের আখ্যান বলা হয় দৌলত কাজীর ‘লোরচন্দ্রানী ‘ বা ‘সতীময়না ‘ গ্রন্থকে।
গ্রন্থটি দৌলত কাজী আরাকানরাজের সমরসচিব আশরফ খানের নির্দেশে রচনা করেন।
অধ্যায়ঃ রায়গুনাকর ভারতচন্দ্র
১। ভারতচন্দ্রের শ্রেষ্ট কাব্য কোনটি ? তাঁর অন্যান্য চারটি গ্রন্থের নাম লিখুন।
উত্তরঃ ভারতচন্দ্রের শ্রেষ্টকাব্যঃ অন্নদামঙ্গল
অন্যান্য গ্রন্থঃ রসমঞ্জরি, সত্যপীড়ের পাঁচালী,নাগাষষ্টক ও চন্ডীনাটক ।
২। ভারতচন্দ্রেরকে কে , কেন রায়গুনাকর উপাধি দেন ?
উত্তরঃ ভারতচন্দ্রকে রায়গুনাকর উপাধি দেনঃ মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র।
কারনঃ ভারতচন্দ্র মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভাকবি ছিলেন এবং তারই আদেশে অন্নদামঙ্গল রচনা করেন। ‘অন্নদামঙ্গল’ রচনার কৃতিত্বের জন্য রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তাকে রায়গুনাকর উপাধি প্রদান করে।
৩। ‘অন্নদামঙ্গল’কে , কে কেন ‘নূতন মঙ্গল’ বলেছেন ?
উত্তরঃ ‘ অন্নদামঙ্গল’ কাব্যকে কবি ভারতচন্দ্র নিজেই ‘নূতনমঙ্গল’ বলেছেন।
নূতনমঙ্গল বলার কারণঃ
ক) দেবতা নয় কোন মানুষের নির্দেশে রচিত হয়।
খ) দেবতাদের দৈবি মাহাত্ম্য খর্ব করে মানব মাহাত্ম্যকে বড় করে তোলা।
গ) গ্রাম্যতার সঙ্গে নাগরিক জীবন বর্ণন।
ঘ) ‘যাবনি মিশাল’ অর্থাৎ আরবি-ফারসি ভাষার ব্যবহার।
৪। ভারতচন্দ্রকে যুগসন্ধির কবি বলা যায় কী ? যুক্তিসহ আলোচনা করুন।
উত্তরঃ ভারতচন্দ্রকে যুগসন্ধির কবি বলা যায় না। তাঁর মধ্যে আধুনিকতার লক্ষণ বেশি লক্ষ্য করা যায়। সেগুলি হলঃ
ক) প্রথাগত মঙ্গল নয় ‘নূতন মঙ্গল’ রচনা।
খ) রাজসভার কবি বলে নাগরিক সচেতনতা।
গ)আধুনিক যুগের মতো ব্যক্তি স্বতন্ত্রের মর্যাদা দান।
ঘ) দেবতা নয় মানুষকে বড় করে দেখা।
৫।“ভারত ভারত ক্ষেত আপনার গুণে” – কে, কাকে এ উক্তিটি করেছেন ? উক্তিটির মর্মার্থ বুঝিয়ে দিন ?
উত্তরঃ কে, কাকে উক্তিটি করেছেনঃ ঈশ্বরগুপ্ত ভারতচন্দ্র সম্পর্কে উক্তিটি করেছেন।
★★ উক্তিটির মর্মার্থঃ উক্তিটিতে রয়েছে অধিক ব্যঞ্জনা, প্রথম ভারত শব্দটির অর্থ – ভারতচন্দ্র দ্বিতীয় ভারত শব্দটির অর্থ – ভারতবর্ষ অর্থাৎ ঈশ্বরগুপ্ত ভারতচন্দ্রের “অন্নদামঙ্গল” কাব্যের কৃতিত্ব ও পাণ্ডিত্যের জন্য উক্তিটি করেছিলেন।
৬। অষ্টাদশ শতকের শ্রেষ্ঠ প্রতিভাধর কবি কে ? তাঁর কাব্যের চারটি প্রবাদ-প্রবচন উল্লেখ করুন ?
উত্তরঃ অষ্টাদশ শতকের শ্রেষ্ঠ প্রতিভাধর কবিঃ অষ্টাদশ শতকের শ্রেষ্ঠ প্রতিভাধর কবি ভারতচন্দ্র রায় গুনাকার।
★★ তাঁর কাব্যের চারটি প্রবাদ-প্রবচনঃ ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যের যে বাক্য গুলি প্রবাদ-প্রবচনের মর্যাদা পেয়েছে সেগুলি হল-
ক. ‘নীচ যদি উচ্চভাষে সুবুদ্ধি উড়ায়ে হাসে’।
খ.’ মিছা কথা সিচাঁ জল কতক্ষণ রয়’।
গ. ‘ মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন’।
ঘ. ‘ নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়’।
৭। “না রবে প্রসাদগুণ না হবে রসাল।/ অতএব কহি ভাষা যাবনি মিশাল।। / প্রাচীন পণ্ডিতগণ গিয়াছেন কয়ে।/ যে হউক, সে হউক ভাষা কাব্যরস লয়ে।।” – উক্তিটি কার ? “যাবনি মিশাল “ বলতে কী বোঝানো হয়েছে, উদাহরণ দিন ?
উত্তরঃ★ কার উক্তিঃ ‘অন্নদামঙ্গল ‘- এর কবি ভারতচন্দ্রের উক্তি।
★★যাবনি মিশাল ভাষাঃ ‘যাবনি মিশাল ‘ ভাষা বলতে আরবি-ফারসি মিশ্রিত ভাষাকে বোঝায়।
“রক্তশতদল তক্তে পাতশা অভয়া।
উজির হইল জয়া নাজির বিজয়া।।” – এখানে আরবি-ফারসি মিশ্রিত অর্থাৎ যাবনি মিশাল ভাষা লক্ষ্য করা যায়।
★★★ উদাহরণঃ উজির, নাজির, আমির-উমরা ইত্যাদি।
অধ্যায়ঃ গীতিকা / ময়মনসিংহ গীতিকা
১। ময়মনসিংহ গীতিকার কোন পালাটি শ্রেষ্ঠ এবং এটি কে রচনা করেন ?
উত্তরঃ ময়মন সিংহ গীতিকার “মহুয়া” পালা টি শ্রেষ্ঠ বলে বিবেচিত হয়। এটি একটি প্রণয় কাহিনী এবং দ্বিজ কানাই নামে এক কবি রচনা করেন।
২। ময়মনসিংহ বা পূর্ববঙ্গ গীতিকার কাহিনীগুলি কী কী ?
উত্তরঃ এর প্রথম খণ্ডের কাজল রেখা-র পালা সম্পূর্ণ রূপকথা জাতীয়। দ্বিতীয় খন্ডে সাঁওতাল হাঙ্গামার ছড়া। তৃতীয় খন্ডে আছে গোপিনী কীর্তন। চতুর্থ খন্ডে আছে চন্দ্রাবতী রামায়ণ।
৩। ময়মন সিংহ গীতিকাতে কোন শ্রেণি চরিত্রের প্রাধান্য ঘটেছে ?
উত্তরঃময়মন সিংহ গীতিকাতে নারী চরিত্র র প্রাধান্য ঘটেছে।এর নারী চরিত্র এর যে আদর্শ চিত্রিত তাতে একনিষ্ঠ প্রেম ; যার প্রভাবে জাতি-ধর্ম-সম্প্রদায় মলিন হয়ে যায় তা মহুয়া , মৈশাল বন্ধু ইত্যাদি পালায় বিকাশ-লাভ করেছে।
৪। “চন্দ্রাবতী” পালার সংগ্রাহক কে এবং কবে কার সম্প্রদনায় প্রকাশিত হয় ?
উত্তরঃ “চন্দ্রাবতী ” পালার সংগ্রাহক চন্দ্র কুমার দে মহাশয়। ১৯২৩ ক্রিস্টাব্দে দীনেশ চন্দ্র সেনের সম্প্রদনায় এটি প্রকাশিত হয়।
পিডিএফ-টি ডাউনলোড করে নাও। 👇
প্রস্তুতির জন্য 👇 পরীক্ষাগুলি দিতে পারোঃ👇
১। সাহিত্যের ইতিহাস প্রাচীন ও মধ্যযুগ) MCQ
৪। কারক অ-কারক SAQ Practice SET
৫। শব্দভাণ্ডার MCQ Practice SET
৬। কাব্যসাহিত্যের ইতিহাস (আধুনিক যুগ) MCQ
৭। ধ্বনি ও বর্ণ MCQ practice SET
৮। মঙ্গলকাব্যের ইতিহাস SAQ SET
আরো দেখে রাখতে পারো👇👇👇
বাংলা কাব্যে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-র অবদান
বাংলা কাব্যে কবি-মাইকেল মধুসূদন দত্তর অবদান
বাংলা কাব্য-সাহিত্যে বুদ্ধদেব বসুর অবদান
বাংলা কাব্যে কবি মোহিতলাল মজুমদারের অবদান
বাংলা কাব্য-সাহিত্যে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত-র অবদান
বাংলা কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান
গীতিকবিতার ভোরের পাখি কাকে বলে হয় ? বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান আলোচনা করো ।
বাংলা কাব্য সাহিত্যে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অবদান
বাংলা কাব্যে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান
বাংলা কাব্যে বিষ্ণু দে-র অবদান আলোচনা
আধুনিক বাংলা কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের অবদান
গদ্যের বিকাশে বিদ্যাসাগরের অবদান
প্রবন্ধ সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান
প্রবন্ধ সাহিত্যে প্রমথ চৌধুরীর অবদান