You are currently viewing বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা কথা সাহিত্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদানঃ- 

শরৎ পরবর্তী বাংলা কথাসাহিত্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছিল বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে । গ্রাম বাংলার প্রকৃতি তাঁর সাহিত্যে বারবার জীবন্ত হয়ে উঠেছে । মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের ছোটখাটো সুখ-দুখ , তার লীলাচাঞ্চল্য , সুখ দুখের মাঝে আনন্দের অভিব্যক্তিকে তিনি প্রকাশ করেছেন তাঁর গল্প-উপন্যাসে । ১৩২৮ সালের মাঘ সংখ্যা প্রবাসীতে ‘উপেক্ষিতা’ গল্পের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বিভূতিভূষণের প্রথম আবির্ভাব । 

বিভূতিভূষণ যেসব উপন্যাস রচনা করেছেন সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল — ‘পথের পাঁচালী'(১৯২৯) , ‘অপরাজিত’ (১ম ও ২য় খণ্ড ১৯৩২) , ‘দৃষ্টিপ্রদীপ'(১৯৩৫) , ‘আরণ্যক'(১৯৩৮) , ‘চাঁদের পাহাড়'(১৯৩৮) ,  ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’(১৯৪০) , ‘দেবযান’(১৯৪৪) , ‘ইছামতী’(১৯৫০) , ‘অশনি সংকেত'(১৯৫৯) ইত্যাদি ।

‘পথের পাঁচালী’ তাঁর প্রথম উপন্যাস । অপু-দুর্গা-সর্বজয়া-হরিহর-ইন্দির ঠাকুরুনদের নিয়ে গড়া এই উপন্যাসের জগৎ এক মানবীয় সমগ্রতায় পূর্ণ । এই উপন্যাস গ্রামবাংলার প্রকৃতি, ছোটো ছোটো সুখ-দুঃখ ভরা প্রাত্যহিক জীবন আর একটি স্বপ্নময় ও সৌন্দর্যমুদ্ধ বালকের বিস্ময়কর কাহিনি । ‘পথের পাঁচালী’র অপুর জীবন বৃত্ত সম্পূর্ণ হয়েছে ‘অপরাজিত’ তে । 

বাস্তবের নানা অভিঘাতে বিপর্যস্ত লেখক ‘দেবযান’ – এর কল্পলোকে খুঁজে নিতে চেয়েছেন জীবনের আনন্দকে । একটি বিশেষ সময়ের পটভূমিতে গ্রামীণ জীবনের ইতিহাস রচিত হয়েছে ‘ইছামতী’ উপন্যাস । 

‘আরণ্যক’ উপন্যাসটি সম্পূর্ণ নতুন প্রকৃতির । প্রকৃতি এখানে মুখ্য, মানুষ গৌণ । সত্যচরনের দেখা এই প্রকৃতি কখনও পরি রাজ্যের মায়াময় , অপার্থিব স্বপ্ন সৌন্দর্য , কখনও প্রেতলোকের বিভীষিকায় আচ্ছন্ন ।

‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’ এ হোটেল পরিচলনার অতি জাগ্রত ব্যবসায়িক বুদ্ধির একটি সরস ও উপভোগ্য চিত্র চিত্রিত হয়েছে । ‘বিপিনের সংসার’  উপন্যাসে নরনারীর প্রেমের চিত্র উপস্থাপিত করেছেন , যা তাঁর স্বভাব বিরুদ্ধ । বিপিনের জীবনে দুই বিবাহিতা নারীর প্রভাব এই উপন্যাসে চিত্রিত হয়েছে । 

বিভূতিভূষণের রচনায় ঘটনার ঘনঘটা বা বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপ নেই , সমকালীন সময়ের সামাজিক রাজনৈতিক অস্থিরতার নিদর্শনও তেমন পাওয়া যায় না তাঁর উপন্যাসে ৷ তাঁর অধিকাংশ রচনাতেই প্রকৃতিকে মানব জীবনের সাথে একত্র , সম্পৃক্ত করে দেখিয়েছেন । কখনো বা এই প্রকৃতিকে আধ্যাত্মনুভূতির আধার রূপে চিত্রিত করেছেন । মানুষ-প্রকৃতি-ঈশ্বর তিন মিলে বিভূতিভূষণের সাহিত্যলোক গড়ে উঠেছে ।

আরো দেখে রাখতে পারো👇👇👇

বাংলা কাব্যে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে কবি-মাইকেল মধুসূদন দত্তর অবদান

বাংলা কাব্য-সাহিত্যে বুদ্ধদেব বসুর অবদান

বাংলা কাব্যে কবি মোহিতলাল মজুমদারের অবদান

বাংলা কাব্য-সাহিত্যে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান

গীতিকবিতার ভোরের পাখি কাকে বলে হয় ? বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান আলোচনা করো ।

বাংলা কাব্য সাহিত্যে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা কাব্যে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা কাব্যে বিষ্ণু দে-র অবদান আলোচনা

আধুনিক বাংলা কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের অবদান

গদ্যের বিকাশে বিদ্যাসাগরের অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে প্রমথ চৌধুরীর অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান

Leave a Reply