আধুনিক বাংলা কাব্য জগতে কবিতাকে চিরাচরিত আবেগ থেকে মুক্তিদানের চেষ্টা করেছিলেন কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত । বাংলা সাহিত্যে তিনি ‘দুঃখবাদী কবি ‘ হিসেবে পরিচিত। মানবপ্রেমই ছিলো তাঁর দুঃখবাদের সূতিকাগার । এই মহান মানবপ্রেমিক কবির জন্ম হয় ১৮৮৭ সালের ২৬ জুন নদীয়া জেলার শান্তিপুরে। ১৯৫৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁর দেহাবসান ঘটে।
বাংলা কাব্যে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-র অবদান , কবিপ্রতিভা ও কাব্য বৈশিষ্ট্য :-
১)যতীন্দ্রনাথের কাছে দুঃখই জীবনের চরম সত্য , সুখ তাঁর কাছে ছলনা মাত্র ।
২) শাশ্বত প্রেম ও রোমান্টিকতা তাঁর কাছে অস্তিত্বহীন, সত্য শুধু অনন্ত যন্ত্রণা।
৩) চারিদিকের বৈষম্য ও অন্যায় ইশ্বরের প্রতি তাঁকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল।
৪)প্রকৃতি ছলনাময়ী, জীবন দুঃখময়, সুখ অনিত্য ও ক্ষণিকের এই দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি জগৎ-সংসারকে দেখেছেন।
৫)কোনোরূপ ভাববাদের বশবর্তী হয়ে নয়, বরং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও বাস্তব পর্যবেক্ষণ থেকে তিনি দুঃখ ও নৈরাশ্যের চিত্র এঁকেছেন। সোপেন হাওয়ার-এর নৈরাশ্যবাদী চেনতার সঙ্গে এখানে তাঁর সাদৃশ্য।
৬)যতীন্দ্রনাথের ভাষা আবেগমুক্ত ও যুক্তিসিদ্ধ; তিনি সহজ ভাষায় বিষয়ের উপস্থাপন করেছেন।
৭) তাঁর জীবনদৃষ্টিতে মানবতাবাদ ও দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের প্রতি গভীর মমতা লক্ষণীয় ।
যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-র কাব্যগ্রন্থ সমূহ:
মরীচিকা (১৯২৩),
মরুশিখা (১৯২৭),
মরুমায়া (১৯৩০),
সায়ম্ (১৯৪০),
ত্রিযামা (১৯৪৮),
নিশান্তিকা (১৯৫৭)
কবিতা-সংকলন গ্রন্থ:
অনুপূর্বা (১৯৪৬)
সমালোচনা গ্রন্থ:
কাব্য–পরিমিতি (১৯৩১)
অনুবাদ গ্রন্থ:
ম্যাকবেথ, ওথেলো, হ্যামলেট, কুমারসম্ভব ইত্যাদি ।
আত্মজীবনী:
মাসিক বসুমতীতে (১৯৪৯)‘বিপ্রতীপ গুপ্ত’ ছদ্মনামে তিনি ‘স্মৃতিকথা’ নামে আত্মজীবনী প্রকাশ করেন।
বিখ্যাত পঙক্তি :
- ‘ফল দেখে যার নাহি কাঁদে প্রাণ ঝরা ফুলদল লাগি, তারা সভাকবি আমরা বন্ধু দুখবাদী বৈরাগী ।’ (দুঃখবাদী)
- ‘প্রেম বলে কিছু নাই-. চেতনা আমার জড়ে মিশাইলে সব সমাধান পাই। ‘(ঘুমের ঘোরে)
- ‘চেরাপুঞ্জির থেকে, একখানি মেঘ ধার দিতে পার গোবি-সাহারার বুকে ?’ ( ঘুমের ঘোরে)
প্রস্তুতির জন্য 👇 পরীক্ষাগুলি দিতে পারোঃ👇
১। সাহিত্যের ইতিহাস প্রাচীন ও মধ্যযুগ) MCQ
৪। কারক অ-কারক SAQ Practice SET
৫। শব্দভাণ্ডার MCQ Practice SET
৬। কাব্যসাহিত্যের ইতিহাস (আধুনিক যুগ) MCQ
৭। ধ্বনি ও বর্ণ MCQ practice SET
৮। মঙ্গলকাব্যের ইতিহাস SAQ SET
আরো দেখে রাখতে পারো👇👇👇
বাংলা কাব্যে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-র অবদান
বাংলা কাব্যে কবি-মাইকেল মধুসূদন দত্তর অবদান
বাংলা কাব্য-সাহিত্যে বুদ্ধদেব বসুর অবদান
বাংলা কাব্যে কবি মোহিতলাল মজুমদারের অবদান
বাংলা কাব্য-সাহিত্যে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত-র অবদান
বাংলা কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান
গীতিকবিতার ভোরের পাখি কাকে বলে হয় ? বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান আলোচনা করো ।
বাংলা কাব্য সাহিত্যে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অবদান
বাংলা কাব্যে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান
বাংলা কাব্যে বিষ্ণু দে-র অবদান আলোচনা
আধুনিক বাংলা কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের অবদান
গদ্যের বিকাশে বিদ্যাসাগরের অবদান
প্রবন্ধ সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান
প্রবন্ধ সাহিত্যে প্রমথ চৌধুরীর অবদান