সর্বনাম পদ ও তার প্রকারভেদ || সর্বনাম পদের শ্রেণিবিভাগ এর PDF দেওয়া আছে । ডাউনলোড করে নিতে পারো 👇
সর্বনাম পদ আসলে কী ?
কথা বলার সময় বা লেখার সময় একই পদের বার বার ব্যবহার যেমন আমাদের বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে ,তেমনি ভাষার সৌন্দর্য নষ্ট করে । ভাষার মাধুর্য রক্ষার জন্য তাই একই পদের বারবার ব্যবহার কখনোই কাম্য নয় । ভাষার এই সমস্যা দূর করার জন্য বিশেষ্য পদের পরিবর্তে যে অন্যপদ ব্যবহার করা হয় তাকে সর্বনাম বলে। সর্বনাম কথাটির অর্থ হল ‘সকল নাম’। তাই আমরা বলতে পারি বিশেষ্য পদের পরিবর্তে যে পদ ব্যবহার করা হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলে। সব রকম নামের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় বলে এর নাম সর্বনাম । আচার্য সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় সর্বনামের অপর নাম দিয়েছেন – ‘প্রতিনাম’ ।
[“ সর্ব অর্থাৎ সর্বপ্রকার নামের স্থলে হয় বলিয়া ‘সর্বনাম’এই নামকরণ হইয়াছে ।” – সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় ]
উদাহরণ: আমি, আমরা, তুমি, আপনি,আপনাকে,আপনার, তুই , তোমরা, সে, তিনি, তার ,যে, কে, কী, ঐ,এই, ইহা,ইনি,উনি ইত্যাদি ।
সর্বনামের প্রকারভেদ
১) ব্যক্তিবাচক সর্বনাম বা পুরুষবাচক সর্বনাম :
ব্যক্তিবাচক বা পুরুষবাচক শব্দের পরিবর্তে যে সর্বনাম ব্যবহৃত হয়, তাকে ব্যক্তিবাচক সর্বনাম বলে। একে পুরুষবাচক সর্বনামও বলে।
পুরুষবাচক সর্বনাম তিন ধরণের হয়-
(ক) প্রথম পুরুষের সর্বনাম বা ভিন্ন পক্ষের সর্বনাম
(খ) মধ্যম পুরুষের সর্বনাম বা শ্রোতা পক্ষের সর্বনাম
(গ) উত্তম পুরুষের সর্বনাম বা বক্তা পক্ষের সর্বনাম ।
উদাহরণ : আমি, তুমি, আমরা, তোমরা, সে , তারা , ওরা ইত্যাদি।
বাক্যে প্রয়োগ – তুমি কেমন করে গান করো হে গুণী । সে কেন এখনো এল না।
২) নির্দেশক সর্বনাম :
যে সর্বনাম কোনো ব্যক্তি, বস্তু ইত্যাদি নির্দেশ করে, তাদের নির্দেশক সর্বনাম বলে।
উদাহরণ : এ,এই, ও,ওই , ইহা , উহা ,তা,তাহা,ইনি,উনি ইত্যাদি
বাক্যে প্রয়োগ: উনি সুন্দর কবিতা লেখেন। , এটা সকলের জানা বিষয় ।
নির্দেশক সর্বনাম দুই প্রকার-
(ক) সামীপ্যবাচক নির্দেশক সর্বনাম বা নৈকট্যসূচক নির্দেশক সর্বনাম ও
(খ) দূরত্ত্ববাচক নির্দেশক সর্বনাম ।
যে সর্বনাম কাছের বা নিকটের কোনো ব্যাক্তি বা বস্তুকে নির্দেশ করে তাদের সামীপ্যসূচক বা নৈকট্যসূচক নির্দেশক সর্বনাম বলে । যেমন: এ,এই,ইহা,ইনি,এরা, এটা ইত্যাদি।
যে সর্বনাম দূরের কোনো ব্যাক্তি বা বস্তুকে নির্দেশ করে তাদের দূরত্ত্ববাচক নির্দেশক সর্বনাম বলে । যেমন: ও,ঐ,উনি,ওরা,উহা , ওটা ইত্যাদি।
৩) অনির্দেশক সর্বনাম :
যে সর্বনাম কোনো ব্যক্তি,বস্তু,বা ভাবকে নির্দিষ্ট করে বোঝায় না , তাদের অনির্দেশক সর্বনাম বলে।
উদাহরণ : কেউ,কেহ,কেউ কেউ,কিছু,কিছু কিছু ,কোথাও ইত্যাদি ।
বাক্যে প্রয়োগ- কেউ কেউ এ কথা জানে না । কিছু কিছু স্থানে ভুল হতে পারে ।
৪) প্রশ্নবাচক সর্বনাম :
যে সর্বনাম দ্বারা কোনো কিছু জানতে চাওয়া হয় বা প্রশ্ন করা হয় ,তাকে প্রশ্নবাচক সর্বনাম পদ বলে ।
উদাহরণ : কে,কী,কি,কোন,কারা, ইত্যাদি ।
বাক্যে প্রয়োগ – কে বলেছে কথাটা ? তুমি কী দেখেছো ?
৫) আত্মবাচক সর্বনাম :
‘অন্য কারো সাহায্য ছাড়া’ এই ভাবটি বোঝাবার জন্য বিশেষ্য ও সর্বনামের সঙ্গে যে সর্বনাম ব্যবহৃত হয় তাকে আত্মবাচক সর্বনাম বলে । এই সর্বনাম নিজস্ব বা আত্মভাব প্রকাশ করে ।
উদাহরণ : স্বয়ং , নিজে , নিজ , খোদ , নিজে-নিজে , আপনি,আপনারে ইত্যাদি।
বাক্যে প্রয়োগ – রাজা স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন । সে নিজেই কাজটি করেছেন ।
৬) সাপেক্ষ সর্বনাম বা নিত্যসম্বন্ধী সর্বনাম :
যে সর্বনাম পদ দুই বা ততোধিক ব্যক্তি বা বস্তুর সংযোগ সাধন করে বা সঙ্গতি বিধান করে তাকে সাপেক্ষ সর্বনাম বলে । এই সর্বনামগুলি নিত্য সম্বন্ধযুক্ত থাকে , তার এর অপর নাম নিত্য সম্বন্ধী সর্বনাম। এদের একটি ব্যবহার করলে আর একটি ব্যবহার করতেই হয় । তাই এই সর্বনামকে সঙ্গতিবাচক বা সংযোগবাচক সর্বনামও বলে ।
উদাহরণ : যে-সে,যিনি-তিনি,যাহা-তাহা,যা-তা,যাকে-তাকে
বাক্যে প্রয়োগ – যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়। যত মত তত পথ ।
দেখে নাও বাছাই করা কিছু পদের পদান্তর ও পদান্তরের সঠিক নিয়ম
৭) সমষ্টিবাচক সর্বনাম বা সাকল্যবাচক সর্বনাম :
যে সর্বনামের দ্বারা সমষ্টিবাচক ব্যক্তি,বস্তু বা ভাবকে বোঝানো হয়, তাকে সমষ্টিবাচক সর্বনাম বা সাকল্যবাচক সর্বনাম বলে।
উদাহরণ : সব,সর্ব,সকল,সবাই,সবার,সবে ইত্যাদি ।
বাক্যে প্রয়োগ – সকলের তরে সকলে আমরা ।
৮) ব্যতিহারিক বা পারস্পরিক সর্বনাম –
যে সর্বনামের দ্বারা পারস্পরিক সম্বন্ধ বোঝানো হয়, তাকে পারস্পরিক বা ব্যতিহারিক সর্বনাম বলে।
এই সর্বনামে ‘অন্যের প্ররোচনা বা সাহায্য ব্যতীত’ এই রকম অর্থ প্রকাশিত হয় ।
উদাহরণ : নিজে-নিজে , আপনা-আপনি
বাক্যে প্রয়োগ – নিজে নিজে লেখাটি শেষ করো। আপনা আপনি সব উড়ে গেল ।
৯) অন্যাদিবাচক সর্বনাম –
যে সর্বনাম উদ্দিষ্টভিন্ন অন্য কোনো ব্যক্তি ,বস্তু বা ভাবকে নির্দেশ করে তাকে অন্যাদিবাচক সর্বনাম বলে ।
উদাহরণ : অন্য, অপর, অমুক ইত্যাদি ।
বাক্যে প্রয়োগ – তুমি নও অন্য কেউ কাজটি করেছে ।
………………………………………
সর্বনাম ও সর্বনামের শ্রেণিবিভাগ এর সম্পূর্ণ PDF টি ডাউনলোড করে নাও 👇🏿
প্রস্তুতির জন্য এই পরীক্ষাগুলি দিতে পারোঃ👇
১। সাহিত্যের ইতিহাস প্রাচীন ও মধ্যযুগ) MCQ
৪। কারক অ-কারক SAQ Practice SET
৫। শব্দভাণ্ডার MCQ Practice SET
৬। কাব্যসাহিত্যের ইতিহাস (আধুনিক যুগ) MCQ
৭। ধ্বনি ও বর্ণ MCQ practice SET
৮। মঙ্গলকাব্যের ইতিহাস SAQ SET
আরো দেখে রাখতে পারো👇👇👇
বাংলা কাব্যে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-র অবদান
বাংলা কাব্যে কবি-মাইকেল মধুসূদন দত্তর অবদান
বাংলা কাব্য-সাহিত্যে বুদ্ধদেব বসুর অবদান
বাংলা কাব্যে কবি মোহিতলাল মজুমদারের অবদান
বাংলা কাব্য-সাহিত্যে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত-র অবদান
বাংলা কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান
গীতিকবিতার ভোরের পাখি কাকে বলে হয় ? বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান আলোচনা করো ।
বাংলা কাব্য সাহিত্যে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অবদান
বাংলা কাব্যে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান
বাংলা কাব্যে বিষ্ণু দে-র অবদান আলোচনা
আধুনিক বাংলা কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের অবদান
গদ্যের বিকাশে বিদ্যাসাগরের অবদান
প্রবন্ধ সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান
প্রবন্ধ সাহিত্যে প্রমথ চৌধুরীর অবদান
প্রবন্ধ সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান
কথাসাহিত্যে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান
কথাসাহিত্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান
কথাসাহিত্যে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান
উপন্যাস সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান
বাংলা ছোটগল্পে রবীন্দ্রনাথের অবদান