You are currently viewing নাট্য সাহিত্যে উৎপল দত্তের অবদান

নাট্য সাহিত্যে উৎপল দত্তের অবদান

প্রশ্নঃ বাংলা নাটকে উৎপল দত্তের অবদান আলোচনা করো।

উত্তরঃ নবনাট্য আন্দোলনের ধারায় উৎপল দত্ত একজন স্মরণীয় নাট্যব্যক্তিত্ব । গিরিশচন্দ্রের পর বাংলা নাট্য ইতিহাসে উৎপল দত্তের মধ্যেই দেখা যায় নট , নাট্য পরিচালক ও নাট্যকার প্রতিভার অতুলনীয় সমন্বয় । ভারতীয় গণনাট্য সংঘ বাংলা নাটককে যেভাবে সমাজ পরিবর্তনের অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেছিল , বিজন ভট্টাচার্যের নাটকে যার পরিচয় আমরা পেয়েছি , তাকেই আরো অগ্রসর ও শিল্পসম্মত রূপ দান করেছিলেন উৎপল দত্ত ।

তাঁর রচিত নাটক গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল — ‘ফেরারী ফৌজ'(১৯৬১) , ‘কল্লোল'(১৯৬৫) , ‘টিনের তলোয়ার'(১৯৭১) , ‘ব্যারিকেড'(১৯৭২) , ‘তিতুমীর'(১৯৭৮) , ‘মানুষের অধিকারে’ , ‘জনতার আফিম’ , ‘এবার রাজার পালা’ , ‘ছায়ানট’ , ‘রাইফেল’ , ‘মাও সে তুং’ প্রভৃতি । 

নাটক গুলির মধ্যে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের মাধ্যমে কখনো ব্রিটিশ রাজশক্তির এবং কখনো স্বদেশীয় রাজশক্তিকে আক্রমণ করার জন্য তিনি রাজরোষে পড়েছিলেন । তাঁর রচিত নাটক গুলির আবেদন আধুনিক সময়কে স্পর্শ করেছে । তাঁর মৌলিক নাটকগুলি ইতিহাস নির্ভর , সংগ্রাম ও বিদ্রোহের আখ্যান । রাজতন্ত্র , সামন্ততন্ত্র , ধণতন্ত্র , মৌলবাদ , সাম্প্রদায়িকতা , কুসংস্কার ও অশিক্ষার বিরুদ্ধে তাঁর লেখনী শানিত অস্ত্রের মতো কাজ করেছে । তাঁর নাটক মানুষের জীবন ধারায় তান্ত্রিক বাস্তবতা তুলে ধরেছে । 

উৎপল দত্তের প্রথম নিজস্ব নাটক ‘ছায়ানট’ প্রথম অভিনীত হয়েছিল ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে । কিন্তু ‘ছায়ানট’ তেমন সাফল্য পায়নি । কিন্তু পরবর্তী নাটক ‘অঙ্গার’-ই উৎপল দত্তকে নাট্যকার ও নাট্যপরিচালক হিসাবে শক্তির পূর্ণ প্রকাশ ঘটে ।

তাঁর ‘কল্লোল’ নাটকে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে নৌ বিদ্রোহের মুক্তির লড়াই বর্ণিত হয়েছে । সতীদাহ প্রথার নিষ্ঠুর বর্বর প্রেক্ষাপটে রচিত ‘অগ্নিশয্যা’ নাটক । ‘টিনের তলোয়ার’ নাটকে নাট্যকারের বিপ্লবী চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে । ‘ব্যারিকেড’ নাটকে নাতসি নায়ক হিটলারের অভ্যুত্থান ও জনগণের উপর সন্ত্রাস বর্ণিত হয়েছে । ‘অঙ্গার’ কয়লা খনির শ্রমিকদের জীবন সংগ্রাম অবলম্বনে রচিত । 

উৎপল দত্ত বস্তুত একদিকে শ্রেণিবিভক্ত সমাজের গবেষক , অন্যদিকে তিনি শোষককে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন । শুধু নাট্য রচনা নয় , নাট্য আঙ্গিকের ক্ষেত্রে তিনি নতুন নতুন চিন্তা-চেতনা সংযোজন করেছেন । অভিনয় , মঞ্চসজ্জা , পরিচালনা সববিষয়ে তিনি অসাধারণ শিল্প নৈপুণ্যের পরিচয় দিয়েছেন ।

(বিষয় সংযুক্তিঃ নাট্য সাহিত্যে উৎপল দত্তের অবদান, বাংলা নাটকে উৎপল দত্তের অবদান আলোচনা, নবনাট্য আন্দোলনের ধারায় উৎপল দত্ত, ফেরারী ফৌজ, কল্লোল নাটক, টিনের তলোয়ার, উৎপল দত্তর নাটক, )

আরো দেখে রাখতে পারো👇👇👇

নাট্যসাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের অবদান

নাট্যসাহিত্যে গিরিশচন্দ্র ঘোষের অবদান

নাট্যসাহিত্যে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের অবদান

নাট্যসাহিত্যে দীনবন্ধু মিত্র-র অবদান

নাট্যসাহিত্যে মধুসূদন দত্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে কবি-মাইকেল মধুসূদন দত্তর অবদান

বাংলা কাব্য-সাহিত্যে বুদ্ধদেব বসুর অবদান

বাংলা কাব্যে কবি মোহিতলাল মজুমদারের অবদান

বাংলা কাব্য-সাহিত্যে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান

গীতিকবিতার ভোরের পাখি কাকে বলে হয় ? বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান আলোচনা করো ।

বাংলা কাব্য সাহিত্যে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা কাব্যে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা কাব্যে বিষ্ণু দে-র অবদান আলোচনা

আধুনিক বাংলা কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের অবদান

গদ্যের বিকাশে বিদ্যাসাগরের অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে প্রমথ চৌধুরীর অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান

কথাসাহিত্যে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

কথাসাহিত্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

কথাসাহিত্যে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

উপন্যাস সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান

বাংলা ছোটগল্পে রবীন্দ্রনাথের অবদান

বাংলা উপন্যাসে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা সাহিত্যে রাজশেখর বসু(পরশুরাম)-এর অবদান আলোচনা করো।

Leave a Reply