You are currently viewing  নাট্য সাহিত্যে গিরিশচন্দ্র ঘোষের অবদান

 নাট্য সাহিত্যে গিরিশচন্দ্র ঘোষের অবদান

 নাট্য সাহিত্যে গিরিশচন্দ্র ঘোষের অবদান আলোচনা করো।

বাংলা নাটক তথা নাট্যমঞ্চের ইতিহাসে নট – নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষের অবদান অসামান্য । গিরিশচন্দ্র কেবলমাত্র নাট্যকার ছিলেন না , নট , নির্দেশক , সংগঠক তথা গোটা একটা যুগের ধারক ছিলেন । প্রথম জীবনে তিনি অভিনেতা হিসেবে রঙ্গমঞ্চে প্রবেশ করেন । 

গিরিশচন্দ্রের রচিত নাটক গুলিকে বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায় । যেমন — 

ক) গীতিনাট্য – ‘আগমনী'(১৮৭৭) , ‘অকালবোধ'(১৮৭৭) , ‘দোললীলা’ প্রভৃতি । এগুলি রচিত হয়েছিল তাৎক্ষণিক বিষয় অবলম্বনে , ফলে যাত্রাপথে একটা দীর্ঘ স্বাক্ষর রাখতে এগুলির দ্বারা কোন মতেই সম্ভব ছিল না ।

খ) পৌরাণিক নাটক – ‘অভিমন্যুবধ'(১৮৮১) , ‘রাবণবধ'(১৮৮১) , ‘নল-দময়ন্তী’ (১৮৮৩) , ‘জনা'(১৮৯৪) প্রভৃতি । এই সমস্ত নাটকের মধ্যে পুরাণের বিষয় বাস্তব জীবনের সুখ-দুঃখ আশা কামনার সঙ্গে একেবারে স্বাভাবিক ভাবেই মিশে গেছে রচনার গুণে । এই পর্যায়ের সর্বশ্রেষ্ঠ নাটক ‘জনা’র প্রধান নারী চরিত্র ‘জনা’ পুত্রের মৃত্যুতে মাতৃত্বের গভীর শোক অথচ বীর নারীর রূপেই বিলাপের ন্যায় যে সমস্ত কথাগুলি বলেছেন তা সত্যই গিরিশচন্দ্রের প্রতিভা । 

গ) ভক্তিবাদের নাটক – ‘চৈতন্যলীলা'(১৮৮৪) , ‘বিশ্বমঙ্গল'(১৮৮৮) ইত্যাদি । কেবলমাত্র ভক্তি রসকেই আশ্রয় করেই এই পর্বের নাটকগুলি রচিত ।

ঘ) ঐতিহাসিক নাটক – ‘সিরাজদ্দৌলা’ (১৯০৬) , ‘মীরকাশিম’ (১৯০৬) , ‘ছত্রপতি শিবাজী’ (১৯৮৭) , ‘অশোক’ (১৯১০) ইত্যাদি । গিরিশচন্দ্র ভারত ইতিহাস সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞানী হলেও ঐতিহাসিক নাটক রচনায় ইতিহাসকে তেমন অনুসরণ করেননি ।

ঙ) সামাজিক নাটক – ‘প্রফুল্ল’ (১৮৮৯) , ‘হারানিধি’ (১৮৯০) , ‘বলিদান (১৯০৫) , ‘শাস্তি কি শাস্তি’ (১৯০৭) , ‘মায়াবসান’ (১৮৯৮) প্রভৃতি । এই পর্বের শ্রেষ্ঠ রচনা ‘প্রফুল্ল’ নাটকে গিরিশা ছন্দের প্রতিভার পূর্ণ বিকাশ ঘটেছে ।

চ) রঙ্গব্যঙ্গাত্মক নাটক – ‘সপ্তমীতে বিসর্জন’ , ‘বেল্লিক বাজার’ , ‘বড়দিনের বখাশিস’ , ‘সভ্যতার পাণ্ডা’ , ‘য্যায়সা কি ত্যায়সা’ ইত্যাদি। এগুলিতে হাস্যরসের জন্য অনেক স্থানে অস্বাভাবিক সংলাপ ও চলিত অশ্লীল ভাষার প্রয়োগ ঘটেছে । 

ছ) অনুবাদ নাটক – তিনি মৌলিক রচনার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বিদেশি নাটক অবলম্বনে অনুবাদমূলক নাটক রচনা করেছিলেন । যেমন—শেক্সপীয়রের ‘ম্যাকবেথ’ ।

চরিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে নায়ক-নায়িকা অন্তর্দ্বন্দ্ব, জীবন সম্পর্কে গভীর প্রত্যয় তাঁর নাটকে যে ভাবে প্রকাশ পেয়েছে , তাতে তাঁকে অনায়াসে প্রথম শ্রেণির নাট্যকার হিসেবে চিহ্নিত করা যায় । তিনি নিজের হাতে বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী তৈরি করেছিলেন । বাংলা নাটকের বিবর্তনে , গতিপথ নির্মাণে , নাটকের সমৃদ্ধি ও বিকাশে , মঞ্চের পরিবর্তনে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য ।

আরো দেখে রাখতে পারো👇👇👇

নাট্যসাহিত্যে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের অবদান

নাট্যসাহিত্যে দীনবন্ধু মিত্র-র অবদান

নাট্যসাহিত্যে মধুসূদন দত্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে কবি-মাইকেল মধুসূদন দত্তর অবদান

বাংলা কাব্য-সাহিত্যে বুদ্ধদেব বসুর অবদান

বাংলা কাব্যে কবি মোহিতলাল মজুমদারের অবদান

বাংলা কাব্য-সাহিত্যে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান

গীতিকবিতার ভোরের পাখি কাকে বলে হয় ? বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান আলোচনা করো ।

বাংলা কাব্য সাহিত্যে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা কাব্যে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা কাব্যে বিষ্ণু দে-র অবদান আলোচনা

আধুনিক বাংলা কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের অবদান

গদ্যের বিকাশে বিদ্যাসাগরের অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে প্রমথ চৌধুরীর অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান

কথাসাহিত্যে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

কথাসাহিত্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

কথাসাহিত্যে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

উপন্যাস সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান

বাংলা ছোটগল্পে রবীন্দ্রনাথের অবদান

বাংলা উপন্যাসে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা সাহিত্যে রাজশেখর বসু(পরশুরাম)-এর অবদান আলোচনা করো।

Leave a Reply