You are currently viewing বাংলা সাহিত্যের সেরা ১০৫টি উপন্যাস || বাংলা সাহিত্যের সেরা ১০৫টি বই

বাংলা সাহিত্যের সেরা ১০৫টি উপন্যাস || বাংলা সাহিত্যের সেরা ১০৫টি বই

সাহিত্যের সেরা বই কোনগুলি ? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া মুশকিল ।কিন্তু তবু জনপ্রিয়তা এবং গুনমানের বিচারে যুগে যুগে বেস্ট সেলারজাতীয় কিছু বই সুখপাঠ্য বলে সর্বজন স্বীকৃত। আমার বিচারে সেরকম কিছু বইয়ের তালিকা সংক্ষিপ্ত বিবৃতিসহ এখানে তুলে ধরা হল। সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ আপনার কাছে সেরা বই কোনটি মনে হয়েছে, সেটা কমেন্ট করে জানিয়ে দিন। আমারা সেটাকেও তালিকাবদ্ধ করতে চেষ্টা করবো। এখানে তাই আলোচিত হলঃ👉 বাংলা সাহিত্যের সেরা ১০৫টি উপন্যাস, বাংলা সাহিত্যের সেরা ১০৫টি বই, বাংলা সাহিত্যে যে ১০০ টি বই আপনাকে পড়তেই হবে, বাংলা সাহিত্যের সেরা ১০০ উপন্যাস, বাংলা সাহিত্যের সেরা ১০০ বই, বাংলা সাহিত্যে যে ১০৫টি টি বই আপনাকে পড়তেই হবে, ১০০টি ভাল বইয়ের তালিকা,

১।’কপাল কুণ্ডলা’,’বিষবৃক্ষ’ ও ‘রাজসিংহ‘ -লেখক -বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় । বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ঐতিহাসিক উপন্যাস রাজসিংহ ।

২। ‘শেষের কবিতা’ ও ‘গোরা’ লেখক- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। উপন্যাসের নায়কের নাম গোরা। মূলত গোরার পিতা ইংরেজ। সিপাহি বিদ্রোহের সময় এক ব্রাম্মন পরিবারের গোয়ালে তার জন্ম। জন্মের সময় সে মাকে হারায়। ব্রাম্মন দম্পতি তাকে মাতা-পিতার পরিচয়ে বড় করে। এই গোরা কালক্রমে বড় হিন্দু নেতা হয়ে যায় এবং ইংরেজ বিরোধী।

শেষের কবিতায় বিলেত ফেরত ব্যারিস্টার অমিত রায় প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত এবং রোমান্টিক যুবক। তর্কে প্রতিপক্ষকে হারাতে সিদ্ধহস্ত। এই অমিত একবার শিলং পাহাড়ে গেল বেড়াতে । আর সেখানেই এক মোটর-দুর্ঘটনায় পরিচয় ঘটল লাবণ্যর সাথে।

৩। ‘লৌহকপাট‘ লেখক, ‘জরাসন্ধ’ (ছদ্মনাম)। আসল নাম- চারুচন্দ্র চক্রবর্তী। বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্ব শেষ করে এক তরুণ যুবক চাকরির সন্ধানে ঘুরতে ঘুরতে শেষপর্যন্ত যে কাজটি পেলেন, সেটি হল কারা বিভাগে। ছোটখাটো একটি জেলের ডেপুটি জেলারের পদ। সম্পূর্ণ একটা নতুন জগতের সঙ্গে পরিচয় ঘটল সেখানে।
পরিচয় হল বদর মুন্সীর মত ভয়ঙ্কর ডাকাতের সঙ্গে – খুন,জখম, নারীধর্ষণ যার কাছে ছেলেখেলা। কিন্তু সেই লোকটিই একবার ডাকাতি করার সময়ে গৃহস্বামীকে কথা দিয়েছিল, শুধু টাকা-গয়নাই নেবে – নারীর সম্মান নষ্ট করবে না। কিন্তু দলের একজন সেই হুকুম মানে নি বুঝতে পেরে, নিজেই ধরা দিল সেই অপবাদের বোঝা নিজের মাথায় নিয়ে।

৪। ‘অন্তর্লীনা’ লেখক- নারায়ণ সান্যাল। গল্পের নায়ক কৃশানু মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে। বুদ্ধিদীপ্ত, কিন্তু সাধারণের দৃষ্টিতে স্মার্ট নয়, কারণ সে লাজুক, ইন্ট্রোভার্ট, নিজের মধ্যে নিজেকে গুটিয়ে রাখতে ভালবাসে।

৫। ‘খোয়াবনামা’ পূর্ববাংলার আঞ্চলিক ভাষাকে অবলম্বন করে যে কি চমৎকার উপন্যাস লেখা যায় তার সার্থক উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন আখতারুজ্জামান ইলিয়াস তার দীর্ঘ কলেবরের উপন্যাস খোয়াবনামার মাধ্যমে। আঞ্চলিক ভাষার অধিক ব্যবহার রয়েছে বইটিতে, রয়েছে কিছু খিস্তি-খেউরও। ’৪৭ এর দেশভাগ গুরুত্বপূর্ণ অংশ দখল করে আছে খোয়াবনামা।

৬। ‘শুন বরনারী’ লেখক- সুবোধ ঘোষ। হিমাদ্রিশেখর দত্ত ওরফে হোমিও হিমু। পেশায় হোমিও চিকিৎসক। যদিও কেউ তাকে ডাক্তারি করতে দেখেনা। লোকের ছেলেপেলে পড়িয়ে রোজগার চলে। আর,আসল কাজ হচ্ছে পরোপকার, মানে, অমুকের সাথে অমুক জায়গায় যেতে হবে,অমুকের মেয়েকে ট্রেনে করে হোস্টেলে দিয়ে আসা, নিয়ে আসা, অমুক কে তীর্ত্থে নিয়ে যাওয়া, এইসব। না করতে পারেনা হিমু। এমন কাজেই ডাক পড়ে তার।

৭। ‘কবি’ লেখক- তারাশঙ্কর। বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ উপন্যাসগুলোর মধ্যে এটি একটি।কবি উপন্যাসের নায়ক একজন কবি । তবে কবি বলতে আমরা সাধারনত যা বুঝি সেই কবি তিনি নন,উপন্যাসের নায়ক নিতাইচরন একজন কবিয়াল । একবার এক মেলাতে এক বিখ্যাত কবিয়াল না থাকাতে নিতাইকে মঞ্চে তুলে দেয়া হয়,তারপরে নিতাই তার প্রতিদ্বন্দ্বী কবিয়ালকে প্রায় ঘায়েল করে ফেলে শেষে তার প্রতিপক্ষ কবিয়াল নিতাইয়ের পরিবার নিয়ে অশ্লীল আক্রমণ করে কবিয়াল লড়াইয়ে জিতে যায়,কিন্তু ওই মঞ্চেই নিতাই জয় করে নেই হাজারো মানুষের মন।

৮। ‘লালসালু’ লেখক- সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ। বেশ কয়েকটি শক্তিশালী নারী চরিত্রের প্রাধান্য পেয়েছে এই উপন্যাসে,তাদের মধ্যে জমিলা অন্যতম। জমিলা অত্যন্ত সাহসী এক নারী। মজিদ নামের প্রতিকী দ্বারা ভ্রান্ত না হয়ে, মজিদের সাথে না লেগে থেকে সে পরিবর্তন চেয়েছে। ধর্মকে পুঁজি করে যারা সমাজকে শোষন করে জমিলার মৃত্যু তাদের কপালে কলংকের চিহ্ন এঁকে দেয়।

৯। ‘দৃষ্টিপাত’ লেখক-যাযাবর। ‘দৃষ্টিপাত’-এ রাজনৈতিক আলোচনার সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে ইতিহাস, স্থাপত্য, সঙ্গীত, মনুষ্যচরিত্র নিয়ে নানান আলোচনা । নিরস ভাবে নয়, গল্প ও ঘটনার সহজ প্রবাহের সঙ্গেই সেগুলি এসেছে; করেছে বইটিকে তথ্য-সম্বৃদ্ধ । ১৯৫০ সালে সমকালীন বাংলা সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ বই হিসেবে ‘দৃষ্টিপাত’ নরসিংহ দাস পুরস্কারে সন্মানিত হয় ।

১০। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ লেখক- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দুঃখের মাঝে ধৈর্য, কষ্টের মাঝে হাসি, বিপদের মাঝে কঠিন মনোবল আর নীতির প্রশ্নে মাথা নিচু না করার মানসিকতা আমি তার জীবনীর মধ্যে পেয়েছি। তাকে জীবনের অন্যতম মহামানব ভাবতে পেরে আত্মতৃপ্তিটুকু পেয়েছি।

১১। ‘লোটা কম্বল’ লেখক- সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়।দুই খন্ডের বই।বইয়ের নিজের ভাষায়, “ভেঙে যাওয়া যৌথ পরিবারের পটভূমিকায় দাঁড়িয়ে নিঃসঙ্গ এক পৌঢ়, হিমালয়ের মত যাঁর ব্যক্তিত্ব, অসম্ভব যাঁর আদর্শনিষ্ঠা, আপাত কঠোর যেন প্রুশীয়ান জেনারেল অথচ ভেতরে ভেতরে কুসুম কোমল। আর সেই মানুষটির একমাত্র মাতৃহারা যুবক সন্তান, মাঝে দুই পুরুষের ব্যবধান। পূর্বপুরুষ উত্তর পুরুষে সঞ্চারিত করতে চায় জীবনের শ্রেষ্ঠ গুণ আর মূল্যবোধ। মানুষের মত মানুষ করে তুলতে চায়।….দুই পুরুষের মূল্যবোধ আর দৃষ্টিভঙ্গির ঠোকাঠুকির মধ্যে আর এক পুরুষ। তিনি বৃদ্ধ মাতামহ। আধ্যাত্মিকতার বাতিটি তুলে যিনি খুঁজে পেতে চান সেই চির-চাওয়া পরমপুরুষটিকে…”

১২। ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ লেখক- বিমল মিত্র। অসাধারণ একটি বই। প্রাক স্বাধীন ভারতের প্রেক্ষাপটে রচিত এই উপন্যাসের কাহিনী দুই খন্ডে বিস্তৃত।

১৩। ‘ন হন্যতে’ লেখক- মৈত্রেয়ী দেবী।বাংলা ভাষায় এক তুলনাহীন উপন্যাস এটি।

৪। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ লেখক- অদ্বৈত মল্লবর্মণ। এই একটি উপন্যাস লিখে লেখক খ্যাতি অর্জন করেন। এই উপন্যাসে গ্রামের দরিদ্র মালো শ্রেণীর লোকজনের দুঃখ-দুর্দশার কাহিনী ফুটিয়ে তুলেছেন। পরবর্তীকালে এই উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।

১৫। ‘পার্থিব’ ও ‘দূরবীন’ লেখক- শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। পার্থিব উপন্যাসের প্রথম লাইন হচ্ছে- “বাদামতলায় রামজীবনের পাকা ঘর উঠছে ওই ।” আর শেষ লাইন হচ্ছে- “এসো আমার সঙ্গে তুমিও কাঁদো, এসো কান্নায় একাকার হয়ে যাই। একাকার হয়ে যাই ।” বুড়ো বিষ্ণুপদর তিন ছেলে ও দুই মেয়ে । এক মেয়ে নিখোঁজ। বড়ো ছেলে কৃষ্ণজীবন একজন বিজ্ঞানী । মেজ ছেলে রামজীবন- একজন ডাকাত । আর কন্যা বীনাপানি-যাত্রাপালা অভিনয় করে এবং তার সাধু স্বামী নিমাই । অ্ন্য দিকে হেমাঙ্গ – হেমাঙ্গ খুব সৌ্খিন এক যুবক। রশ্মি রায় ।হেমাঙ্গর চাচাতো বোন চারুশীলা । চয়ন- মৃগী রোগী । কিন্তু ছাত্রদের পড়ায় ভালো । ঝুমকি-, ঝুমকির বোন অনু- মনীশ, রিয়া এবং আরও অনেক চরিত্র।

দূরবীন উপন্যাসে তিনটি প্রজন্মের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রথমজন পুর্ববঙ্গের জমিদার হেমকান্ত চৌধুরী, দ্বিতীয়জন ব্রিটিশ ভারতের বিপ্লবী এবং স্বাধীন ভারতের ডাকসাঁইটে রাজনীতিবিদ ও হেমকান্তর নয়নের মণি কৃষ্ণকান্ত চৌধুরী ও কৃষ্ণকান্তের বখে যাওয়া ছেলে ধ্রুব চৌধুরী; লোফার, হৃদয়হীন থেকে শুরু করে অনেক বিশেষনই তার সাথে যুক্ত করা যায়। উপন্যাসের ব্যাপ্তি অনেক বিশাল। তিনটি প্রজন্মের তিন ধরণের মানুষের কাহিনী বা জীবনাচরণ এখানে বিধৃত করা হয়েছে। এটি শুধু সাড়ে পাঁচশো পৃষ্ঠার একটি উপন্যাস নয়; মানুষের ভাব, প্রেম, পদস্খলন, সংগ্রাম, বিরহ, জীবন-জীবিকা, আনন্দ-বেদনার- সব কিছুর এক প্রতিচ্ছবি।

১৬। ‘কেরী সাহেবের মুন্সী’ লেখক- প্রমথনাথ বিশী। ঐতিহাসিক কাঠামোতে গঠিত অসাধারণ এক উপন্যাস। ১৯৬০ সালে “কেরী সাহেবের মুন্সী” গ্রন্থের জন্য রবীন্দ্র’ পুরস্কার পান লেখক। বই থেকে কয়েকটা লাইন তুলে দিলাম- “ এমন সময় একটা হাতী দেখে কেরী ভাবল, যাক হাতীতে আজ রক্ষা করল বাঘের হাত থেকে।
কেরী বলল, ঐ দেখ।
সকলে দেখতে পেল গজেন্দ্রগমনে প্রকান্ড এক হাতী চলেছে, কাঁধের উপরে তার মাহুত, আর পিছনে জন দুই-তিন বর্শাধারী পাইক।
কিন্তু কেরী আজ এত সহজে রক্ষা পাবে না.
মিসেস কেরী উদ্বিগ্নভাবে বলল, বাঘ শিকারে চলেছে বুঝি?
টমাস ব্যাপারটা অনুমান করতে পেরেছিল, তাই বলল , না না, এদিকে বাঘ কোথায়! আর দু-চারটে থাকলেও তারা মানুষ খায় না।
কেন, সবাই বাইবেল পড়েছে বুঝি?—পত্নীর এবম্বিধ অখ্রিস্তানোচিত উক্তিতে মর্মাহত কেরী প্রমাদ গনল।
রামরাম বসু মনে মনে বলল —বাঘগুলো এখনও বাইবেল পড়েনি, তাই রক্ষা। ”

১৭। ‘রাইফেল রোটি আওরাত’ লেখক- আনোয়ার পাশা। শহীদ বুদ্ধিজীবী আনোয়ার পাশার এই একটি বইই যুক্তিশীল যে কোন মানুষকে ৭১ এর বাংলাদেশের যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যেতে পারে।

১৮। ‘প্রথম আলো’ ‘সেই সময়’ এবং ‘পূর্ব-পশ্চিম’ লেখক- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। তিনখানা টাইম ট্রিলজি।এই তিনটি উপন্যাস শেষ করে ওঠা মাত্রই একধরণের বিষণ্ণতা জেগে ওঠে। কারন উপন্যাসের প্রতিটি চরিত্র পাঠকের মনের ভেতর একটা জায়গা তৈরি করে নেয় এর মধ্যেই। সুনীল একবার বলেছিলেন ‘প্রথম আলো’ লিখতে তাকে সারা জীবনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় স্টাডি করতে হয়েছিল।

১৯। ‘নন্দিত নরকে’ ‘শঙ্খনীল কারাগার’ এবং ‘জোৎস্না ও জননীর গল্প‘ লেখক- হুমায়ূন আহমেদ। ‘নন্দিত নরকে’বাংলা কথাশিল্পী হুমায়ুন আহমেদের প্রথম উপন্যাস।
বাকৃবিতে শিক্ষকতা করার সময়ে তিনি ‘শঙ্খনীল কারাগার ‘উপন্যাসটি লিখেছিলেন। “জোৎস্না ও জননীর গল্প” মূলত মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে উপন্যাস হলেও এতে প্রেম,ভালোবাসা সবই আছে। হুমায়ুন তার স্বভাবসুলভ গল্প বলার ভঙ্গিতে ৭১’এর সেই ভয়াল ৯ মাসের কথা বলেছেন পাঠকদের।উপন্যাসের শুরু হয়েছে নীলগঞ্জ স্কুলের আরবী শিক্ষক মাওলানা ইরতাজুদ্দীন কাশেমপূরীকে দিয়ে যিনি ঢাকায় তার ভাইয়ের সাথে দেখা করতে আসেন।… তারপর শাহেদ আর আসমানীর মমতায় পরিপূর্ণ সংসারজীবনের গভীরে যেতে যেতে পাঠকের পরিচয় ঘটবে নিজের চেনা জগতের সঙ্গে। শাহেদের বড় ভাই ইরতাজউদ্দিন কাশেমপুরির ঢাকায় আসা, রাস্তা হারিয়ে ফেলা, ভুল ঠিকানা, পরিশ্রম আর ক্লান্তিতে বিপর্যস্ত জীবন অস্থির উত্তাল মিছিল স্লোগানমুখর ঢাকায় তার বিপন্ন জীবনবোধ শুরু করিয়ে দেয় এক মহাযাত্রার।

২০। ‘নারী’ ও ‘ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল’ লেখক- হুমায়ুন আজাদ। শুরুতে কখনও নারীবাদ নিয়ে কাজ করেননি হুমায়ুন আজাদ। কিন্তু যখন শুরু করলেন তখন যেন বাংলা সাহিত্যের নারীবাদী ধারায় গোলাভরে গেল নতুন ফসলে। তবে তার এই প্রচেষ্টাকে তির্যক দৃষ্টিতে দেখতে ছাড়েননি অনেকেই। ‘নারী’ গ্রন্থটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে হুমায়ন আজাদ প্রথাবিরোধী লেখক হিসাবে পরিচিতি পান। পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে নারীকে কি কি রূপে দেখা হয় বইটির প্রতিটি পৃষ্টায় তা ছড়িয়ে আছে।
হুমায়ুন আজাদ মানুষকে সচেতন করার প্রয়াসী ছিলেন। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের মানুষ তার কবিতায় উঠে এসেছে। মানুষের মনোভঙ্গি, স্মৃতি, দুঃখ-কষ্ট, যাপিত জীবন ঘিরে কবির আগ্রহ। তিনি মানুষের মধ্যে খুঁজে পেতে চেয়েছেন শুভ্রতা। হুমায়ুন আজাদ বাংলাদেশের সবুজ বনভূমি, উদার মানুষ ও নিসর্গের কাছে সমর্পিত। বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সামগ্রিক অবস্থা কবি-চিত্তে আলোড়ন তোলে।তার কবিতা পাঠককে সমৃদ্ধ করে।

২১। ‘মেমসাহেব’ লেখক- নিমাই ভট্টাচার্য। নিমাই ভট্টাচার্য এখানে যেন তার নিজের জীবনেরই কাহিনি লিখছেন খানিকটা কল্পনা আর অনেকটা বাস্তবের মিশেলে। নিমাই ভট্টাচার্যের মূল জীবিকা সাংবাদিকতা।

২২। ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’ লেখক- আবু ইসহাক। ‘জোঁক’ গল্পের সার্থক গল্পকার আবু ইসহাক উল্লেখযোগ্য কিছু সাহিত্যকর্ম রেখে গেছেন বাংলা সাহিত্যে বলার অপেক্ষা রাখে না। তার প্রথম উপন্যাস ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ একটি শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি জীবনাখ্য। পূর্ব বাংলার বিস্তীর্ণ নদ-নদী জলাভূমি-কৃষি ক্ষেতের পটভূমিকায় সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, তার মধ্যে রক্তচক্ষু বের করা কতিপয় মানুষ নামের চারপায়া জানোয়ার, কিভাবে দিনের পর দিন বছর শতাব্দী যাবৎ ধর্মীয় ভণ্ডামিতে আবদ্ধ করে রেখেছে আমাদের, তার প্রতিছবি তার সাহিত্যকর্মে তার মেধা মননে আমরা প্রত্যক্ষ করি। উপন্যাসের গতিপ্রকৃতি দেখে বিশ্বাস হবে, আবু ইসহাক খুব কাছ থেকে সমাজের এই পিছিয়ে পড়া অন্ত্যজ এবং অনগ্রসর শ্রেণির বড় বেশি মমতা মাখিয়ে তার উপন্যাসে স্থান করে দিয়েছেন।

২৩। ‘আগুনপাখি’ লেখক- হাসান আজিজুল হক। জীবনসংগ্রামে লিপ্ত মানুষের কথকতা তাঁর গল্প-উপন্যাসের প্রধানতম অনুষঙ্গ। আগুনপাখি কেবল প্রথাগত চরিত্র নির্মাণ ও সংলাপ ধারণার বাইরের কোনো উপন্যাস নয় বলেই বলছি না, এর কাহিনীতে সেই অর্থে কোনো গল্প ফাঁদা নেই, বলবার মতো কোনো প্রণয় নেই, আকৃষ্ট করবার মতো ন্যূনতম কোনো যৌনতা নেই; এমন কি যে ভাষায় কাহিনীটি কথিত হয়েছে, সেই ভাষাটির সাথেও এদেশের অধিকাংশ পাঠকের বিশেষ কোনো যোগাযোগ নেই।

২৪। ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ ও ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ লেখক- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাসের লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে লিখেছিলেন জীবনের প্রথম গল্প ‘অতসী মামী’। তার লেখাটি ‘বিচিত্রা’ নামক পত্রিকাতে পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে তা ছাপা হয়েছিল। উপন্যাসের শেষে জেলে পাড়ায় থাকতে না পেরে কপিলাকে নিয়ে ময়নাদ্বীপেরর অজানা রহস্যময় দ্বীপের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায় কুবের। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসে আবহমান বাংলার সামজিক জীবনের টানপোড়নের ছবি একেছেন।

মানুষ যত উপরের দিকে উঠতে থাকে ততই বুঝি সে একা হতে থাকে?! কর্তব্যের চাপে, ব্যস্ততার কোলাহলে বুঝি বা একে একে হারিয়ে যেতে থাএক সব চেনা চেনা মুখ! শ্বাশত এই কথাই যেন “পুতুল নাচের ইতিকথা”য় বলে দিয়েছেন অমর কথাশিল্পী মানিক বন্ধ্যোপাধ্যায়। এই উপন্যাসের প্রধান নারী চরিত্র পরাণের স্ত্রী তেইশ বছরের বাঁজা মেয়ে কুসুম। প্রকৃ্তপক্ষে কুসুম এক অস্থির, বেপরোয়া,ও দূর্বোধ্য গ্রাম্য রমণী ।

২৫। ‘সাতকাহন’ ও ‘গর্ভধারিণী’ লেখক- সমরেশ মজুমদার। সাতকাহন উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র দীপা ছিলো সাহসী ও স্বতন্ত্র চরিত্রের অধিকারীনি এক নারী। যার নামের মধ্যেই নিহিত ছিলো অন্ধকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পুর্বাভাস। সাহস আর একাগ্রতা ছিলো বলেই নিজের নিষ্ঠুর অতীতকে মুছে ফেলে শুরু করেছিলো নতুন জীবন, জয় করেছিলো নিজের ভাগ্য, পড়াশুনা। কাছের মানুষ এমনকি নিজের মায়ের ঘৃণা, শত্রুতা, তাদের ভিতরকার বিভৎস লোভী চেহারাও দীপাকে পর্যুদস্ত করতে পারেনি। সে সময়ের কাঁধে মাথা ঠেকিয়েছে, কিন্তু ভেঙ্গে পড়েনি। কাছের মানুষ বলতে কেউই ছিলো না দীপার, দু-ফোঁটা চোখের জল ফেলার সময় কেউ কাঁধ বাড়িয়ে দেয়নি দীপার দিকে। সুযোগ ছিলো অনেক,চাইলেই তা হাত বাড়িয়ে নিতে পারতো দীপা। কিন্তু তা সে করেনি। সাধারনের মাঝেই দীপা অসাধারন। যার জীবনে এসে মিশেছে নানা নাটকীয়তা, আর এসব নাটকীয়তাকে ছাপিয়েই যার জীবন এগিয়ে গেছে সমান্তরালভাবে-সেই দীপা। দীপাবলি বন্দ্যোপাধ্যায়।

‘গর্ভধারিণী’র কাহিনী এই রকম- জয়িতা বড়লোক বাবা মার স্বেচ্ছাচারী আধুনিক মেয়ে। জয়িতার সাথে তথাকথিত নারী বা নারীত্বের সংজ্ঞায় মেলে না। সে ছেলেদের পোশাক পড়ে, ধূমপান করে, ছেলেদের সাথেই মিশে। তাই এটা সেটা নিয়ে জয়িতার সাথে তার বাবা মার ঝামেলা লেগেই থাকে। কিন্তু এত কিছু সত্বেও জয়িতা অনেক পুরুষেরই স্বপ্নের নায়িকা। জয়িতা স্বপ্ন দেখে সমাজকে বদলে দেবার। তিন বন্ধুকে নিয়ে নেমে পড়ে যুদ্ধে, এভাবেই সে একসময় জড়িয়ে পড়ে রাজনীতির সাথে। সমাজপতিদের কৌশলের মারপ্যাঁচ, রাজনৈতিক গ্যাঁড়াকলে পড়ে জয়িতা শহর ছাড়তে বাধ্য হয়। তারপরও থেমে থাকেনা তার যুদ্ধ। গ্রামে গিয়েও নানান জটিলতায় পরতে হয় জয়িতাকে। জীবনের সহজ সরল অংকগুলো জটিল মারপ্যাঁচে হারাতে চায় জয়িতাকে ।

২৬। ‘তিথিডোর’ লেখক- বুদ্ধদেব বসু। সত্যেন, “তিথিডোর” উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র, সাধাসিধে রাজেনবাবুর কনিষ্ঠ কন্যা স্বাতীকে কবিগুরুর শেষযাত্রায় নিয়ে যেতেই ছুটে এসেছে জোড়াসাঁকো হতে টালিগঞ্জের স্বাতীদের বাড়িতে। অনবদ্য একটি মধ্যবিত্তের কাহিনী এই উপন্যাস।

২৭। ‘দেশে বিদেশে’ লেখক- সৈয়দ মুজতবা আলী। “দেশে বিদেশে” মূলত একটি ভ্রমন কাহিনী নির্ভর রচনা। প্রকাশকাল – ১৯৪৮। সৈয়দ মুজতবা আলী’র লেখায় সাবলীল বর্ণনা থাকে, আর থাকে রসাত্মক উক্তি। তার লেখার প্রতিটি পরতে সূক্ষ্ম রসবোধের পরিচয় পাওয়া যায়। উপযুক্ত শব্দচয়ন, প্রাঞ্জল ও রসাত্মক বর্ণনা এবং আফগানিস্থানে তার বিচিত্র অভিজ্ঞতা ‘দেশে বিদেশে’ বইটি-কে পাঠকপ্রিয় করেছে। কিছুদূর এগোলেই বোঝা যায় মুজতবা’র লেখায় বাঙলার কালচার ও সাহিত্যের সাথে মিশে গিয়েছে ইউরোপীয় নানা দেশের কালচার এবং সাহিত্য, আর তাতে উপযুক্ত অনুপাতে যোগ হয়েছে অভারতীয় প্রাচ্যদেশীয় বিষয়ও।

২৮। ‘পঞ্চম পুরুষ’ লেখক- বাণী বসু। যোগাযোগটাই নাটকীয়। সেই কবেকার কলেজ জীবনের কিছু পাত্র-পাত্রীর আবার কুড়ি বছর বাদে দেখা হবে মহারাষ্ট্রে।

২৯। ‘মাধুকরী’ লেখক- বুদ্ধদেব গুহ। বইটির ছোটো একটি অংশ তুলে ধরছি, ”পৃথু ঘোষ চেয়েছিল, বড় বাঘের মতো বাচঁবে। বড় বাঘের যেমন হতে হয় না কারও উপর নির্ভরশীল না নারী, না সংসার, না গৃহ, না সমাজ সেভাবেই বাচঁবে সে, স্বরাট, স্বয়ম্ভর হয়ে। তার বন্ধু ছিল তথাকথিত সমাজের অপাংতেয়রা। পৃথু ঘোষ বিশ্বাস করত, এই পৃথিবীতে এক নতুন ধর্মের দিন সমাসন্ন। সে ধর্মে সমান মান-মর্যাদা এবং সুখ-স্বাধীনতা পাবে প্রতিটি নারী-পুরুষ।” “মাধুকরী” শুধু পৃথু ঘোষের বিচিত্র জীবন কাহিনী নয়। “মাধুকরী” এই শতকের মানুষের জীবনের যাবতীয় অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আগামী প্রজন্মের মানুষের সার্থক ভাবে বেঁচে থাকার ঠিকানা। এই কারণেই এ উপন্যাস উৎসর্গ করা হয়েছে ‘একবিংশ শতাব্দীর নারী ও পুরুষদের হাতে’।

৩০। ‘হাজার চুরাশির মা’ লেখক- মহাশ্বেতা দেবী। উপন্যাসটি একটি লাশের গল্পকে কেন্দ্র করে নির্মিত। মহাশ্বেতা দেবী একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক ও মানবাধিকার আন্দোলন কর্মী। তিনি ১৯২৬ সালে বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন । তিনি সাঁওতালসহ অন্যান্য আদিবাসীদের ওপর কাজ এবং লেখার জন্য বিখ্যাত । তাঁর লেখা শতাধিক বইয়ের মধ্যে হাজার চুরাশির মা অন্যতম।

৩১। ‘ঈশ্বর পৃথিবী ভালোবাসা’ লেখক- শিবরাম চক্রবর্তী। চাঁচোলের এক রাজ-পরিবারেই তাঁর জন্ম।

৩২। ‘উপনিবেশ’ লেখক- নারায়ন গঙ্গোপাধ্যায়। উপন্যাসটি তিন খন্ড।

৩৩। ‘অলীক মানুষ’ লেখক- সৈয়দ মুস্তফা সিরাজ। এই উপন্যাস সম্পর্কে লেখক নিজেই বলেছেন- ‘অলীক মানুষ’ উপন্যাসটা লেখার পেছনে ছিল অগ্রজ গৌরকিশোর ঘোষের প্রণোদনা।’

৩৪। ‘নিশি কুটুম্ব’ লেখক মনোজ বসু। মনোজ বসুর বই গুলর মধ্যে একটা আলাদা বন, জঙ্গলএর গান্ধ পাওয়া যায়।

৩৫। ‘উত্তর পুরুষ’ লেখক- রিজিয়া রহমান। আমাদের বাংলা সাহিত্যের প্রথম সারির এ্যাসেট। উপন্যাসের শুরুতেই বঙ্গোপসাগরকে যে উপমায় বাঁধেন লেখিকা তা পড়ে তার আঙুল ছুঁয়ে আসতে ইচ্ছে করে। সারাটা উপন্যাসে উপমার সার্থক ব্যবহার পাঠককে যেমন সম্মোহিত করে তেমনি উপন্যাসটিকে করে তুলে অনেক বেশি বাঙ্ময়।

৩৬। ‘কাবুলিওয়ালার বাঙালি বউ’ লেখক- সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ উপন্যাসটির প্রেক্ষাপট রচিত হয়েছে আফগানিস্তানে তালেবানদের সাথে রাব্বানির যুদ্ধকালীন সময়ে ধর্মের নামে কায়েম হওয়া সন্ত্রাসের রাজত্ব, মেয়েদের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে অন্ধাকারে পাঠিয়ে দেয়া, কোরআন শরীফের মনগড়া অপব্যাখ্যা, সংকীর্ণতা এবং সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে। বাস্তবতা হলো লেখিকা তাঁর ”কাবুলিওয়ালার বাঙালি বউ” উপন্যাসে নিজের জীবনের কাহিনী তুলে ধরেছেন। কাবুলিওয়ালার বাঙালি বউ” এর কাহিনীর সংক্ষিপ্ত রুপ হচ্ছে, কলকাতার ব্রাক্ষ্মন পরিবারের একটি মেয়ে বিয়ে করে আফগাস্তানের কাবুলের গজনি এলাকার এক মুসলিম যুবককে। স্বামীর সাথেই পাড়ি জমান শ্বশুর বাড়ি আফগানিস্তান। সেখানে যাওয়ার পর ওই বাঙালি বউয়ের উপলব্ধি হলো এরা শুধু ধর্মান্ধ নয়, এদের মানসিকতাও রুচিহীন। পরদেশী একজন বাঙালি নারীকে ছেলের বউ হিসাবে তারা কিভাবে গ্রহন করলো, তাদের দর্শন, তাদের দেশে নারীর মর্যাদা, পারিবারিক সম্পর্ক, দাম্পত্য জীবনসহ খুটিনাটি নানা বিষয় গল্পে গল্পে তুলে ধরা হয়েছে উপন্যাসে।

৩৭। ‘পথের পাঁচালি’ লেখক- বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। উপন্যাসের গল্প এ রকম- “গ্রাম্য গরীব একটি পরিবারের সুখ দুঃখের মাঝে দুটি চঞ্চল শিশুর বেড়ে ওঠা । নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সন্তান অপু ও দুর্গা । বাবা হরিহর রায়, মা সর্বজয়া, আর অপু-দূর্গার বৃদ্ধা ফুফু ইন্দিরা ঠাকুরকে নিয়ে পরিবারটির সদস্য সংখ্যা পাঁচ । হরিহরের পেশা পুরোহীতগিরি করা । সামান্য আয় । কোন রকমে সংসার চলে । টানাটানির সংসারে বিধবা বোন ইন্দিরা ঠাকুর বাড়তি বোঝা । হরিহর কিছু না বললেও স্ত্রী সর্বজয়ার সাথে প্রায়ই ছোটখাট ঝগড়া হয়ে যায় । অপু বড় বোন দুর্গার সাথে বনে বাঁদাড়ে ঘুরে বেড়ায় । মিষ্টিওয়ালা, বায়োস্কোপ, আর ট্রেনের পিছনে ছুটতে ছুটতেই দিন কেটে যায় । সংসার, দরিদ্রতা কোন কিছুরই চিন্তা নেই ওদের । এদিকে অপু, দুর্গা খেলতে গিয়ে হঠাৎ একদিন বনের মধ্যে বৃদ্ধা ইন্দির ঠাকুরণকে মৃত আবিস্কার করে। মর্মান্তিক দৃশ্য । বৃষ্টিতে ভিজে জ্বরে আক্রান্ত হয় দুর্গা । চিকিৎসার অভাবে বাড়তে থাকে জ্বর। গভীর রাত । বাইরে প্রচন্ড ঝড়-বাতাস । ঘরদোর উড়িয়ে নেয়ার পালা । সেই রাতেই দুর্গা মারা যায় । হরিহর ফিরে আসে তারও কিছুদিন পর । সবার জন্য অনেক কিছু কিনে এনেছে । শাড়ি হাতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে সর্বজয়া ।বুঝতে বাকি থাকে না হরিহরের । পাথরের মত নিশ্চল হয়ে যায় । ছবির সবচেয়ে মর্মান্তিক দৃশ্য অবলোকন করে দর্শক । এত কষ্ট! এত সংগ্রাম! তবু পিছু ছাড়ে না দারিদ্র । সব ছেড়েছুড়ে হরিহর স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গরুর গাড়িতে চড়ে অজানার উদ্দেশ্যে ……..।

৩৮। ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি’ লেখক- নীলিমা ইব্রাহিম। খুব সহজ ভাষায় সাতটি মেয়ের বীরত্বের কাহিনী এতে লেখা আছে। জীবন যুদ্ধে যারা শত কষ্টের মাঝেও হেরে যায় নি শুধু তাদের গল্প দিয়েই বইটি সাজিয়েছেন লেখিকা। আমরা যারা সহজে হতাশ হই, হাল ছেড়ে দেই, নৈরাশ্যের অন্ধকারে হারিয়ে যেয়ে মুক্তি খুঁজি তারা যেনো যুদ্ধ করার, লড়ার মনোবল রাখি।

৩৯। ‘পুত্র পিতাকে’ লেখক- চানক্য সেন। ‘পুত্র পিতাকে’ উপন্যাসে পুত্র পিতাকে লিখে, ‘তোমরা আমাদের সরিয়ে দাও, দূরে রেখে দাও, তোমাদের বড়দের দুনিয়ার বাইরে, কেননা সে নিষিদ্ধ দুনিয়া মিথ্যা, অর্থ-মিথ্যা, চাতুরি-চালাকি, পারস্পরিক প্রবঞ্চনা প্রতারণার ধনদৌলত ভরা তোমাদের দুনিয়া আমদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে তোমরা কী চেষ্টাই না করো। অথচ, বাবা, তোমরা জান না যে আমরা তোমাদের অনেক কিছুই জেনে ফেলি, দেখে ফেলি, শুনে ফেলি। আমাদের হিসাব গোড়া থেকেই গোলমাল হয়ে যায়’ ।

৪০। ‘দোজখনামা’ লেখক-রবিশংকর বল। রবিশংকর এর জন্ম ১৯৬২। বিজ্ঞানের স্নাতক। একটা বাংলা দৈনিকের সাংবাদিক। বাংলা ভাষার প্রথম সারির কথা সাহিত্যিক। ২০১১ সালে “দোজখনামা” উপন্যাসের জন্য বঙ্কিম স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছেন।

৪১। ‘চতুষ্পাঠী’ ও ‘হলদে গোলাপ’ লেখক-স্বপ্নময় চক্রবর্তী। প্রথম উপন্যাস ‘চতুষ্পাঠী’ প্রকাশিত হয় আনন্দবাজার পূজা সংখ্যায় (১৯৯২) । প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিশিষ্ট লেখকররূপে চিন্হিত হয়েছিলেন।

সমাজের শরীর ও শরীরের সমাজতত্ত্ব নিয়ে এক দুঃসাহসিক উপন্যাস এই ‘হলদে গোলাপ’। ২০১২-১৩ সাল জুড়ে প্রয়াত ঋতুপর্ণ ঘোষ সম্পাদিত রোববার-এ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশকালে পাঠকসমাজ আলোড়িত হয়-যা খুব কম উপন্যাসের ক্ষেত্রেই ঘটে। কাহিনি বয়ানে মানুষের লিঙ্গ পরিচয়ের সমস্যা তুলে আনতে গিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রমে খুঁড়েছেন ইতিহাস, নৃ-বিজ্ঞান, সমাজতত্ত্ব, শারীর বিজ্ঞান, মনস্তত্ত্ব। জিনেটিকস, মিথ-পুরাণ । এক বিশিষ্ট সমালোচক বলেছিলেন ‘স্বপ্নময়ের গল্প আমাদের শেকড় খোঁজার কোদাল।” ওই উক্তিটির কথা মনে পড়বে উপন্যাসটি পড়তে পড়তে। এই উপন্যাসটি আসলে এক সংকট-সঙ্কুল মানুষের অনুভূতিগুলি চিত্রিত হয়েছে আশ্চর্য মায়াময় দক্ষতায়। কাহিনির পরতে পরতে মিশে আছে বৈজ্ঞানিক তথ্যাবলি।
শুধু বাংলা সাহিত্যে কেন, সমগ্র ভারতীয় সাহিত্যে এর আগে এভাবে কোনও উপন্যাস লেখা হয়নি। আশা করি পাঠকের ভাল লাগবে।

৪২। ‘বিষাদবৃক্ষ’ লেখক- মিহির সেনগুপ্ত। উপন্যাসটিতে হিন্দু মুসলিম সমস্যাটাই শুধু আসেনি, এসেছে দেশ ভাগ, তার ইতিহাস, তৎকালীন রাজনৈতিক সামাজিক মনস্তত্ব, জীবনসংগ্রাম, পাশাপাশি স্বপ্ন দ্রষ্টা কিছূ মানুষের উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা, মোট কথা, একটি ভুখন্ডের ইতিহাস।

৪৩। ‘অলৌকিক নয়,লৌকিক’ লেখক- প্রবীর ঘোষ।বইগুলো পড়লে ৯৯% অলৌকিক বিশ্বাস দূর হয়ে যাবে ।বিজ্ঞান সচেতনতা বৃদ্ধিতে এই বইয়ের তুলনা বাংলা সাহিত্যে বিরল।

৪৪। ‘গল্পমালা’ লেখক- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। গ্রহ-নক্ষত্রের কথা, পশুপাখি ও গাছপালার কথা, জ্ঞান-বিজ্ঞানের কথা, রামায়ণ-মহাভারত ও পুরাণের গল্প, দেশ-বিদেশের নতুন ও পুরোনো কাহিনি, ইতিহাস ও ভূগোল, ছড়া-কবিতা-গান ইত্যাদি রচনা করেছেন। নিজের বইয়ের ছবি নিজেই আঁকতেন।

৪৫। ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’, ‘সুবর্নলতা’ ও ‘বকুল কথা’ লেখক- আশাপূর্না দেবী। প্রথম প্রতিশ্রুতি বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি লেখিকা আশাপূর্ণা দেবীর একটি বিখ্যাত উপন্যাস। এই উপন্যাসের জন্য তিনি ভারতের সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মান জ্ঞানপীঠ পুরস্কার লাভ করেন । পরবর্তী কালে এই উপন্যাসটি অবলম্বনে একটি বাংলা সিনেমাও তৈরি হয় । এটি একটি উপন্যাস ত্রয়ীর প্রথম উপন্যাস । পরবর্তী দুটি উপন্যাসের নাম হল সুবর্ণলতা এবং বকুলকথা।

সত্যবতী – সুবর্ণলতা – বকুল : তিন প্রজন্ম। সত্যবতীর অগ্নিসম বিদ্রোহিনী রূপ থেকে যাত্রা শুরু করে সুবর্ণলতার চাপা আকাঙ্ক্ষার পথ ধরে বকুলের সময়ে সনাতনী যুগের অবসান প্রাঙ্গনে এসে সমাপ্ত আশাপূর্ণা দেবীর এই ট্রিলজি উপন্যাস।

৪৬। ‘ফেলুদা সমগ্র’ লেখক- সত্যজিৎ রায়। ফেলুদা সত্যজিৎ রায় সৃষ্ট বাংলা সাহিত্যের একটি জনপ্রিয় কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র। ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বর মাসের সন্দেশ পত্রিকায় ফেলুদা সিরিজের প্রথম গল্প “ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি” প্রকাশিত হয়। ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত এই সিরিজের মোট ৩৫টি সম্পূর্ণ ও চারটি অসম্পূর্ণ গল্প ও উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। ফেলুদার প্রধান সহকারী তাঁর খুড়তুতো ভাই তপেশরঞ্জন মিত্র ওরফে তোপসে ও লেখক লালমোহন গাঙ্গুলি (ছদ্মনাম জটায়ু)।

৪৭। ‘কুবের সাধু খাঁর বিষয় আশয়’ লেখক- শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়। ‘এ হাউস ফর মি. বিশ্বাস’ এবং ‘কুবেরের বিষয় আশয়’ উপন্যাস দুটির কাঠামোও প্রায় একই রকম। উপন্যাস দুটির ঘটনা একটানা বর্ণিত হয়নি। বরং দুটি উপন্যাসেই চরিত্রগুলো, নায়ককে সামনে রেখে নানা পর্ববিভক্ত হয়ে মূল কাহিনীকে টেনে নিয়ে গেছে।

৪৮। ‘বসুধারা’ লেখক-তিলোত্তমা মজুমদার। লেখক ‘বসুধারা’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার। এই উপন্যাসে পশ্চিমবঙ্গে নকশাল আন্দোলনের পরবর্তী সময়ের ছবি দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। আমি বিশ্বাস করি, পাঠকের মননকে সমৃদ্ধি দান করবে এই বই।

৪৯। ‘দুচাকায় দুনিয়া’ লেখক- বিমল মুখার্জী। ভূ-পর্যটক বিমল মুখার্জীর সাইকেলে চড়ে বিশ্ব-ভ্রমণের অমর আখ্যান। ২৩ বছরের ভারতীয় এক তরুন ১৯২৬ সালে একটা সাইকেল আর সামান্য কিছু টাকা নিয়ে পৃথিবী ভ্রমণে বেড়িয়ে পরেন। পুরো বিশ্ব ভ্রমণ করে ভারত ফিরে আসেন ১৯৩৭ সালে। পথে কত রহস্য কত রোমাঞ্চ, এমনকি তরুন হিটলারের সাথে দেখা পর্যন্ত।

৫০। ‘কলকাতার কাছেই’, ‘পৌষ ফাগুনের পালা’ এবং ‘উপকন্ঠ’ লেখক- গজেন্দ্র কুমার মিত্র।আসলে এটি ত্রিপিটক উপন্যাস, খাস ইংরেজিতে যাকে বলে ‘ট্রিলজি’।উনবিংশ শতাবিংশ শতাব্দীর শেষ ও বিংশ শতাব্দীর শুরু -এই রকম সময়ের পটভূমিতে এই ট্রিলজি কাহিনীর সূত্রপাত। কুলীন ব্রাহ্মণের বিধবা পত্নী রাসমণি ও তার তিনি কন্যার জীবন নিয়ে এই উপন্যাস-ত্রয়ীর কাহিনী শুরু। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে মধ্যমা শ্যামাকে কেন্দ্র করে কাহিনী আবর্তিত হয়েছে, তবু রাসমণির তিন কন্যার ক্রমবর্ধমান পরিবারের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখার নরনারী বিভিন্ন ঘটনাসূত্রে কাহিনীতে অসাধারণ বৈচিত্রের সৃষ্টি করেছে এবং শেষ পর্যন্ত কাহিনীর অখন্ডতা লাভ করেছে। সংস্কারে সংস্কৃতিতে উন্নত অথবা নিদারুণ দারিদ্র ক্লিষ্ট মধ্যবিত্ত সমাজের এই সব মানুষের ব্যক্তিগত ক্ষুদ্র স্বার্থ-সংকীর্ণতা, আশা-নিরাশা, ছোট বড়, সুখ দুঃখ. বিপদ আপদ সবকিছুর মধ্যদিয়েও তাদের অপরাজেয় জীবনাকোঙ্ক্ষার এবং জীবনযুদ্ধের এক নিটোল অনবদ্য কাহিনী শুনিয়েছেন লেখক ।

৫১। ‘অসাধু সিদ্ধার্থ’ লেখক- জগদীশ গুপ্ত। উপন্যাসের নটবর দলছুট চরিত্র। সে ‘লঘু-গুরুর’ বিশ্বম্ভর কিংবা পরিতোষের মতো ‘স্বভাবসিদ্ধ ইতর’ বা ‘কোমরবাঁধা শয়তান’ নয়; শয়তানিতে তার দক্ষতা প্রশ্নাতীত, কিন্তু উপন্যাসের আখ্যানে এটি অতীত, তার মানুষ আর প্রেমিক হয়ে ওঠার সাধনাটুকুই তার সপ্রাণ বর্তমান। এই বর্তমানটুকু মনে রাখলে তার বাইরের এবং ভেতরের মানুষটিকে চেনা যায় সহজেই। তার পরিণতির বেদনাটুকুও বোঝা যায়।
জগদীশ গুপ্তের উপন্যাসে সব সময়ই দ্রুত ঘটে যায় সব ঘটনা।

৫২। ‘কুহেলিকা’ ও ‘মুত্যুক্ষুধা’ লেখক- কাজী নজরুল ইসলাম। “কুহেলিকা” নজরুলের শ্রেষ্ট একটি সৃষ্টি। কুহেলিকা’র মূল চরিত্র “জাহাঙ্গির” পার্শ্ব চরিত্র আরো আছে।উপন্যাসের প্রথমাংশ কৃষ্ণনগরে এবং শেষাংশ কলকাতায় রচিত। কৃষ্ণনগরে অবস্থানকালে নিদারুণ দুঃখ-কষ্ট এবং দুঃসাধ্য কৃচ্ছ্রসাধন ছিল নজরুলের নিত্য জীবনযাত্রার অঙ্গ। তাই দারিদ্রের চিত্র, সাম্য ও বিপ্লবীচেতনা এ উপন্যাসের রূপকল্পের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত।

৫৩। ‘যে গল্পের শেষ নেই’ লেখক- দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। “যে গল্পের শেষ নেই” বইটি ১৯৫১ সালে প্রকাশিত হয়। প্রাক মানুষ, মানুষ, পরিবার, সমজ, রাষ্ট্র, বিশ্ব রাজনীতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিস্তর মোটা মোটা বই লেখা হয়েছে, রয়েছে অতি মূল্যবান রেফারেন্স বই কিংবা এনসাইক্লোপেডিয়া। কিন্তু এই বইটিতে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে তুলে ধরা হয়েছে শুন্য থেকে শুরু করে মানুষের উদ্ভব এবং আজকের সমাজ ব্যবস্থা পর্যন্তসকল বৈশিষ্টকে। এই বইটিতে দ্বান্দ্বিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশকে স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। একেবারে গল্পের মত করে শুধুই মানুষের কথা বইটির প্রতিটি পাতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। হোক না তা বহু বছরের আগের কথা, কথাগুলো তো আজও সত্য।

৫৪। ‘ভোলগা থেকে গঙ্গা’ লেখক- রাহুল সাংকৃত্যায়ন। ‘ভোল্গা থেকে গঙ্গা’ গ্রন্থখানি ২০টি ছোটো গল্পের সমাহার। এই ছোটো ছোটো গল্প বা কাহিনীগুলো নিছক কল্পনা প্রসূত নয়, সমাজবিকাশের বিভিন্ন পর্যায়ের দিকে লক্ষ্য রেখে গল্পগুলো ধারাবাহিক ভাবে রচিত হয়েছে। ইতিহাস আর সমাজবিজ্ঞান এর মূলতত্ত্বকে সর্বত্রই মেনে চলা হয়েছে। প্রায় ৬০০০ খৃষ্টপূর্বাব্দে ভোলগা নদীর তীরে যে মানবগোষ্ঠী পরিবার স্থাপন করেছিলো, তাদেরই আবাস ও জীবন নিয়ে রচিত হয়েছে প্রথম গল্পটির দৃশ্যপট। ক্রমে সেই মানুষ মধ্য ভলগাতটে অগ্রসর হয়ে মধ্য এশিয়া অতিক্রম করেছিলো। উত্তর কুরু, তাজিকিস্তান পেরিয়ে একসময় সমগ্র গান্ধার এলাকা জুড়ে বসতি স্থাপন করেছিলো এই আর্যরা। ইতিহাসের এই ধারায় বিংশ শতাব্দীতে পৌছে সমাপ্ত হয়েছে গ্রন্থটির আখ্যান। এই ধারাবাহিকতা নিয়েই রচিত হয়েছে প্রতিটি গল্পের দৃশ্যপট।

৫৫। ‘নারী, সৃষ্টি ও বিজ্ঞান’ লেখক- পূরবী বসু। পূরবী বসুর দুটি পরিচয়- কথাশিল্পী এবং পুষ্টিবিজ্ঞানী। উভয়ক্ষেত্রে তাঁর পরিচিতের পরিধি সুবিস্তৃত। বিজ্ঞানজগতে পূরবী বসু একটি সম্মানিত নাম, বাংলাসাহিত্যে তাঁর কলমের খ্যাতি সর্বত্র। তাঁর প্রতিভার এই দ্বিমুখী ধারা এই গ্রন্থটির মধ্যে এক অপূর্ব মোহনায় মিশেছে।

৫৬। ‘ঈশ্বরের বাগান’ লেখক-অতীন বন্দোপাধ্যায়। অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক। তার জন্ম ১৯৩৪ সালে বাংলাদেশের ঢাকায়। ‘ঈশ্বরের বাগান’ উপন্যাসটিতে অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বাস্তু পরিবার, তাদের দৈনন্দিন যন্ত্রণা, চারিত্রিক বৈপরীত্য ও দ্বন্দ্বময় সংঘাতের ছবি এঁকেছেন। লেখকের জাদুকরী কলমের টানে উপন্যাসটি অনন্যতার দাবি রাখে। বিদগ্ধ পাঠকমণ্ডলীর সংগ্রহশালায় এ উপন্যাস অপরিহার্য।

৫৭। ‘তিস্তাপারের বৃত্তান্ত’ লেখক– দেবেশ রায়। তিস্তাপারের বৃত্তান্ত সমাজবাস্তবতা নির্ভর এক প্রকল্পায়ণ কথাসাহিত্য, যা পরিত্রাণহীন সত্যের দর্শন থেকে নেতিদেশ ও দৈশিকতার দর্শণয়িত পথ অভিসারী। এপিকধর্মী এই উপন্যাসের ক্রমপুষ্টিকরণ যে নির্দিষ্ট টাইম এবং স্পেস থেকে উৎসারিত, তা এক আকাশের হাঁ-মুখ থেকে নেমে আসা নদীবিস্তৃতিকে পুরায়ত জনপদের ঐকান্তিক ইতিহাস বলে দায়ী করে।

৫৮। ‘উদ্ধারণপুরের ঘাট’ লেখক– অবধূত। অবধূত ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক ও তন্ত্রসাধক। তাঁর প্রকৃতনাম দুলালচন্দ্র মুখোপাধ্যায়। জন্ম কলকাতার ভবানীপুরে। পুত্র অমল মুখোপাধ্যায়ের জন্মের পর প্রথমা স্ত্রীর মৃত্যু হলে উজ্জ্বয়িনীর মহাকাল মন্দিরে সন্ন্যাস (অবধূত) গ্রহণ করেন। অবধূত ছদ্মনামে তিনি একাধিক গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।

৫৯। ‘বারো ঘর এক উঠোন’ লেখক– জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী। উপন্যাসটি পড়তে পড়তে মনে হয় বারো রকমের গল্পকে তিনি যেন বর্ণিত আখ্যানের মধ্যে অদৃশ্য সুতো দিয়ে জুড়ে দিয়েছেন। মনে হয় উপন্যাসের বর্ণিত আখ্যানের সর্বত্রই, তলে অবতলে গভীরে, ক্রমশই গল্পের সম্মোহনী ছায়া-প্রচ্ছয়া ঘনীভূত হচ্ছে। উপন্যাসের মধ্যে বারবার গল্পশিল্পের অতিরিক্ত এই সংক্রমণ, তার প্রভাব, তার আধিক্য, উপন্যাস রচনার কারুকৃতিকে অনেকাংশেই কিন্তু নষ্ট করে দিয়েছে।

৬০। ‘সাদা খাম’ লেখক– মতি নন্দী। এই গ্রন্থে ধরা পড়েছে প্রতারণা ও স্বীকারোক্তির এক আশ্চর্য সংঘাত, আর্তনাদের ভেতর রূপান্তরিত মানুষের সংবেদ; যা সংশয় ও ফলশ্রুতির ভেতরে চিরকালীন জিজ্ঞাসা ফেলে রেখে, পাঠককে অনুসন্ধানী করে তোলে।

৬১। ‘নুন চা’ লেখক– বিমল লামা। বইয়ের ফ্লাপ থেকেঃ ভৌগোলিক তরঙ্গ জমে ছিল পাহাড় হয়ে। তারই খাঁজে খাঁজে নিস্তরঙ্গ জীবনের নুনকথা। টয় ট্রেনর মতো ধারাবাঁধা নিসর্গের ভেতর দিয়ে ওঠা নামা। অপরূপ কিন্তু জীর্ণ। নিরাপদ কিন্তু অস্বাধীন। একথা বুঝতে সময় লাগেনা উরগোনের যখন লাল পতাকার পাশ দিয়ে উঠে এলো সবুজ নিশান। লাল সবুজের দ্বৈরথে তৈরি হল হলুদ শিখা। পুড়তে লাগল ঘরবাড়ি। ক্ষেত গোয়াল। স্মৃতি আর স্বপ্ন। নিসর্গের দাউ দাউ চিতা।
তবু লুকিয়ে ভালো বাসতে ছাড়ে না জুনি। জীবন বাজি রেখে ভালো বাসতে চায় উরগেনকে। জ্বলন্ত চিতার ফাঁকেই খুঁজে নিতে চায় কোনো স্নিগ্ধ কোণ। নিভৃতে শুধু ভালোবাসবে বলে। কিন্তু যেই নিভৃতের খোঁজ মেলার আগেই বুনো মোষের মতো তেড়ে আসে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলে জুনিকে। তার যোনির ভেতর ঢেলে দেয় তপ্ত গরল।
কিন্তু জুনি যেন নিজেকে অভিযোজিত করতে চায় ভালোবাসার সংশ্লেষকের মতো। ভালোবাসতে চায় বহিরাগ গরলকেও। আর সেখানেই শুরু হয় তার সমান্তরাল এক লড়াই। সবার হয়ে কিন্তু একা একা।
রাজনীতির নিশানে যখন আকাশ ঢাকে, জুনি পড়ে থাকে মাটি কামড়ে, পৃথিবীর দিকে পিঠ করে, এগোতে চায় আর এক পৃথিবীর দিকে। পৃথিবীটাকে অবাক করে, হতবাক করে।

৬২। ‘গড় শ্রীখন্ড’, ও ‘রাজনগর’ লেখক– অমিয়ভূষণ মজুমদার। অমিয়ভূষণ মজুমদারের প্রথম প্রকাশিত রচনা হল একটি নাটক। প্রথম উপন্যাস গড় শ্রীখণ্ড – ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় সঞ্জয় ভট্টাচার্য সম্পাদিত পূর্বাশা পত্রিকায় ১৩৬০ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠ সংখ্যা থেকে। গড় শ্রীখণ্ড আবহমান বাংলার উপন্যাস। ভারত স্বাধীনতার আগে-পরের সময়কালে পদ্মাপাড়ে স্থাপিত এ উপন্যাসের কাহিনী।
রাজনগর-এর কাহিনী শেষ ১৮৮৩-তে। নয়নতারাতে নয়নতারাও রাজচন্দ্রের মুহূর্তিক শারিরীক সম্পর্কের ফসল যুবক কুমারনারায়ণকে দিয়ে উপন্যাসটি শেষ করা হয়েছে। মানবমন ও সমাজের বিচিত্র অনালোকিত জগতই তাঁর আরোধ্য। বিশ্বসাহিত্যে সিরিয়াস ধারার একজন বুভুক্ষু পাঠক অমিয়ভূষণ মজুদার তাঁর মনন ও শৈলী দিয়ে সে সকল জগতকেই চিত্রায়িত করেছেন। গত পঞ্চাশ বছরের বাংলা উপন্যাসে তাঁর অমোঘ উপস্থিতি আমাদেরকে নিরন্তর প্রাগ্রসর করেছে।

৬৩। ‘ক্রান্তিকাল’ ও ‘কেয়াপাতার নৌকা‘ লেখক– প্রফুল্ল রায়। ‘”ক্রান্তিকাল” বইটি পড়লে বোঝা যাবে ভারতীয় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের স্বাধীনতার আকুতি। এই উপন্যাসটি অবলম্বনে ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক শেখর দাস “ক্রান্তিকাল” নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মান করেছেন। যেখানে রূপা গাঙ্গুলী, সৌমিত্র চট্টপাধ্যায়সহ অনেক বাঘা বাঘা অভিনেতা-অভিনেত্রী অভিনয় করেছেন।
কেয়াপাতার নৌকো’র পরবর্তী খণ্ড ‘শতধারায় বয়ে যায়’ এবং তারও পরবর্তী খণ্ড ‘উত্তাল সময়ের ইতিকথা’। তিনটি উপন্যাসই আকারে মহাকাব্যিক। অসামান্য ক্ষমতাসম্পন্ন এইঔপন্যাসিক সারা জীবন জুড়ে পুরস্কারও পেয়েছেন প্রচুর।
এই লেখকের আরেকটি বইয়ের কথা বলার লোভ সামলাতে পারছি না। তারই রচিত আরো একটি বই ঈশ্বরপুত্র। এই বইটির ঘটনাপ্রবাহ আবর্তিত হয়েছে মাইকেল সমরেশ দত্ত নামের এক বিপত্নীক মানুষকে ঘিরে। মাইকেল সমরেশ দত্ত আদর্শহীন মানুষদের মধ্যে বিরলতম চরিত্র। বহুজন হিতায় নিজেকে সপে দিয়েছে সে। বহু দুঃস্থ, সম্বলহীনের পরম আশ্রয় সে। নারী পাচার চক্রের কবল থেকে একটি সরল গ্রাম্য যুবতীকে বাচাতে গিয়ে কোন মূল্য দিতে হয় তাকে তাই নিয়ে এই আশ্চর্য আখ্যান ঈশ্বরপুত্র।

৬৪। ‘মহাস্থবির জাতক’ লেখক– প্রেমাঙ্কুর আতর্থী। প্রেমাঙ্কুর আতর্থীর জন্ম ১৮৯০ সালে। ‘মহাস্থবির জাতক’-এর প্রথম খণ্ডের ভূমিকায় ‘মহাস্থবির’ (প্রেমাঙ্কুর আতর্থী) লিখেছিলেন: “মানুষের জীবনের কাহিনীই সব-চাইতে বিচিত্র উপন্যাস – উপন্যাসের ঘটনা ও চরিত্রের জন্য আশা করি কারও কাছে কোনও জবাবাদিহিতে পড়তে হবে না”। চার-খণ্ডের সম্পূর্ণ বইটি লিখে ও বলে শেষ করতে ওঁর লেগেছিল কুড়ি বছর। চতুর্থ খণ্ড প্রকাশিত হয় প্রেমাঙ্কুর আতর্থীর মৃত্যুর পরে। এই খণ্ডটি লেখার সময়ে তিনি প্রায় দশ বছর শয্যাশায়ী ছিলেন। কবি উমা দেবীকে মুখে মুখে বলতেন, আর তিনি সেগুলো লিপিবদ্ধ করতেন। চতুর্থ পর্ব-এর নিবেদনে উমা দেবী লিখেছিলেন: “মহাস্থবির জাতকের প্রথম পর্ব যখন লেখা হচ্ছিল, তখন একদিন কথা প্রসঙ্গে (প্রেমাঙ্কুর আতর্থী) বলেছিলেন, যে, পঁচিশ বছর বয়স পর্যন্ত সময়ের কথাই তিনি লিপিবদ্ধ করবেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই তিনি সে ইচ্ছে ত্যাগ করেন।”

৬৫।’নীলকন্ঠ পাখির খোঁজে’ -উপন্যাস – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়-১৯৭১
৬৬। ‘অলৌকিক জলযান’-উপন্যাস -অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের -১৯৭৫
৬৭। ‘সত্যাসত্য’-উপন্যাস -অন্নদাশঙ্কর রায়-১৯৩২-১৯৪২
৬৮। ‘ক্ষীরের পুতুল ‘-প্রবন্ধ -অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর-১৮৯৬
৬৯। ‘বুড়ো আংলা’- প্রবন্ধ-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর-১৯৩৪
৭০। ‘বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী’-প্রবন্ধ -অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর -১৯২৯
৭১। ‘খুঁজতে খুঁজতে এতদুর’- কাব্য- অরুণ মিত্র-১৯৮৭
৭২। ‘রবীন্দ্রনাথ ও আধুনিকতা ‘-প্রবন্ধ- আবু সৈয়দ -১৯৬৮
৭৩।’টিনের তলোয়ার ‘-নাটক -উৎপল দত্ত-১৯৬৮
৭৪।’ অঙ্গার ‘-নাটক -উৎপল দত্ত-১৯৫৯
৭৫।’ টুনটুনির বই ‘-কাব্য- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী-১৯১০
৭৬।’ অন্তর্জলী যাত্রা’- উপন্যাস- কমল মজুমদার -১৯৫৯
৭৭।’নোটন নোটন পায়রাগুলি’- উপন্যাস- কেতকী কুশারী ডাইসন-১৯৮৩
৭৮।’ জল পড়ে পাতা নড়ে’- উপন্যাস গৌরকিশোর ঘোষ-১৯৭৮
৭৯। ‘মুখ্যমন্ত্রী ‘-উপন্যাস- চানক্য সেন-১৯৬৫
৮০।’ উন্মাদের পাঠক্রম ‘-কাব্য- জয় গোস্বামী-১৯৮৬
৮১।’ ঘুমিয়েছে ঝাউপাতা’ -কাব্য- জয় গোস্বামী-১৯৯৬
৮২।’ নির্বাচিত কলাম’- প্রবন্ধ -তসলিমা নাসরিন-১৯৯২
৮৩।’ স্বর্ণলতা’- উপন্যাস- তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়-১৮৭৪
৮৪।’ ছেঁড়া তার’- নাটক -তুলসী লাহিড়ী-১৯৫৩
৮৫।’ ঝাঁসির রানী’- উপন্যাস- মহাশ্বেতা দেবী-১৯৫৩
৮৬।’যমুনা কী তীর ‘-উপন্যাস- মহাশ্বেতা দেবী -১৯৫৮
৮৭।’অরণ্যের অধিকার’- উপন্যাস- মহাশ্বেতা দেবী-১৯৭৭
৮৮।’ বিষাদ সিন্ধু ‘-উপন্যাস- মীর মোশারফ হোসেন -১৮৮৫
৮৯।’পঞ্চতন্ত্র ‘-প্রবন্ধ -মুজতবা আলী-১৯৫২
৯০।’ চাচা কাহিনী’- প্রবন্ধ -মুজতবা আলী-১৯৫২
৯১। ‘বনপলাশীর পদাবলী’- প্রবন্ধ রমাপদ চৌধুরী-১৯৬২
৯২।’ বাড়ী বদলে যায় ‘-প্রবন্ধ -রমাপদ চৌধুরী-১৯৮৮
৯৩।’পদী পিসির বর্মীবাক্স ‘-গল্পগ্রন্থ -লীলা মজুমদার -১৯৫৩
৯৪।’চৌরঙ্গী ‘-উপন্যাস- মণিশংকর মুখোপাধ্যায় -১৯৫৩
৯৫।’তুঙ্গ ভদ্রার তীরে’ -উপন্যাস- শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় -১৯৬৫
৯৬।’ঘুণপোকা ‘-উপন্যাস- শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়-১৯৬৭
৯৭।’ মানবজমিন’- উপন্যাস -শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় -১৯৮৯
৯৮।’কিনু গোয়ালার গলি ‘-উপন্যাস -সন্তোষ কুমার ঘোষ-১৯৫০
৯৯।’ গঙ্গা’- উপন্যাস- সমরেশ বসু-১৯৫৭
১০০।’বিবর’- উপন্যাস- সমরেশ বসু- ১৯৬৫
১০১।’প্রজাপতি’- উপন্যাস- সমরেশ বসু-১৯৬৯
১০২। ‘দহন’- উপন্যাস- সুচিত্রা ভট্টাচার্য-১৯৯৫
১০২।’ সেই সময়’- উপন্যাস -সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় -১৯৮১
১০৩।’কালসন্ধ্যা ‘-কাব্যনাটক -বুদ্ধদেব বসু-১৯৬৯
১০৪। ‘তিথিডোর’- উপন্যাস- বুদ্ধদেব বসু-১৯৪৯
১০৫। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’- উপন্যাস-অদ্বৈত মল্লবর্মণ- ১৯৫৭

ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য 👇

আরো দেখে রাখতে পারো👇👇👇

বাংলা কাব্যে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে কবি-মাইকেল মধুসূদন দত্তর অবদান

বাংলা কাব্য-সাহিত্যে বুদ্ধদেব বসুর অবদান

বাংলা কাব্যে কবি মোহিতলাল মজুমদারের অবদান

বাংলা কাব্য-সাহিত্যে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান

গীতিকবিতার ভোরের পাখি কাকে বলে হয় ? বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান আলোচনা করো ।

বাংলা কাব্য সাহিত্যে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা কাব্যে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা কাব্যে বিষ্ণু দে-র অবদান আলোচনা

আধুনিক বাংলা কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের অবদান

গদ্যের বিকাশে বিদ্যাসাগরের অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে প্রমথ চৌধুরীর অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান

কথাসাহিত্যে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

কথাসাহিত্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

কথাসাহিত্যে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

উপন্যাস সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান

বাংলা ছোটগল্পে রবীন্দ্রনাথের অবদান

বাংলা উপন্যাসে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা সাহিত্যে রাজশেখর বসু(পরশুরাম)-এর অবদান আলোচনা করো।

Leave a Reply