আজকের আলোচ্য বিষয়-বাংলা সাহিত্যে প্রাবন্ধিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকা, প্রবন্ধ সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান, বঙ্কিম প্রবন্ধগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় এখানে আলোচিত হল। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বঙ্কিমচন্দ্রের ভূমিকা-ও দেখে নিতে পারো।👇👇👇👇
প্রবন্ধ সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান:
বঙ্কিমচন্দ্র বাংলা প্রবন্ধ সাহিত্যের একজন ধ্রুপদী শিল্পী । তাঁর হাতেই প্রবন্ধ সাহিত্য গঠনবৈচিত্র্যে ও বিষয়বৈচিত্র্য এক স্বতন্ত্র ও বলিষ্ঠ ভাবে আত্মপ্রকাশ করতে আরম্ভ করে । তিনি বিবিধ প্রসঙ্গ অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা করেছেন।
তাঁর প্রবন্ধ গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল — লোকরহস্য (১৮৭৪) , বিজ্ঞানরহস্য (১৮৭৫) , কমলাকান্তের দপ্তর (১৮৭৫) , সাম্য (১৮৭৯) , প্রবন্ধপুস্তক (১৮৭৯) , কৃষ্ণচরিত (১৮৮৬) , বিবিধ প্রবন্ধ (১ম ও ২য় খণ্ড ১৮৮৭ ও ১৮৯২) , ধর্মতত্ত্ব (১৮৮৮) ইত্যাদি ।
‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে একটি পূর্ণ যুগ ধরে বাঙালি পাঠকসমাজের সাহিত্যবোধ তিনি যেমন নির্মাণ করেছেন , তেমনি মননশীল প্রবন্ধ রচনার পাশাপাশি তার উপযুক্ত পাঠকও তৈরি করেছেন । তাঁর প্রবন্ধগুলিকে পাঁচটি শ্রেণিতে বিন্যস্ত করা যেতে পারে । যেমন —
ক) জ্ঞান ও বিজ্ঞানমূলক প্রবন্ধ — বিজ্ঞান রহস্য ।
খ) ধর্ম ও দর্শন বিষয়ক প্রবন্ধ — ধর্মতত্ত্ব , কৃষ্ণচরিত , শ্রীমদ্ভাগবত গীতা ।
গ) সাহিত্য সমালোচনা মূলক প্রবন্ধ — বিবিধ প্রবন্ধ ।
ঘ) সমাজ বিষয়ক প্রবন্ধ — সাম্য, লোকশিক্ষা ।
ঙ) বিবিধ প্রবন্ধ — কমলাকান্তের দপ্তর, মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত ।
প্রাবন্ধিক বঙ্কিমচন্দ্র প্রধান গুণ মননশীলতা , যুক্তিবাদিতা , উপযোগবাদী , মানবতাবোধ ও কল্যাণচিন্তা । এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্বদেশভাবনা , আধ্যাত্মিকতা ও কবি মনের কল্পনাদৃষ্টি । তাঁর আরেকটি উল্লেখযোগ্য দক্ষতা হল বিষয়ানুসারী ভাষা নির্বাচন ও তার দক্ষতা। তাঁর প্রবন্ধ সাহিত্যের একটি বিশেষ দিক হল পৌরাণিক ঐতিহ্যকে যুক্তির মাধ্যমে বৈজ্ঞানিকবোধে সঞ্চালিত করা । তাঁর ‘কৃষ্ণচরিত’ এ বিষয়ে স্মরণীয় গ্রন্থ। তিনি সমালোচনা সাহিত্যেরও অগ্রদূত । সমালোচনাও যে সত্যিকারে সৃষ্টিমূলক সাহিত্য স্তরে উন্নীত হতে পারে তিনি প্রথম দেখিয়েছেন । তিনি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সাহিত্য গভীরভাবে অনুশীলন করেছিলেন । বিভিন্ন বিষয়ে বঙ্কিমচন্দ্রের পাণ্ডিত্য , চিন্তাশীলতা ও সাহিত্যিক মূল্যায়নে স্বকীয়তার স্বাক্ষর প্রবন্ধের সর্বত্রই লক্ষ্য করা যায় ।
আরো দেখে রাখতে পারো👇👇👇
বাংলা কাব্যে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-র অবদান
বাংলা কাব্যে কবি-মাইকেল মধুসূদন দত্তর অবদান
বাংলা কাব্য-সাহিত্যে বুদ্ধদেব বসুর অবদান
বাংলা কাব্যে কবি মোহিতলাল মজুমদারের অবদান
বাংলা কাব্য-সাহিত্যে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত-র অবদান
বাংলা কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান
গীতিকবিতার ভোরের পাখি কাকে বলে হয় ? বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান আলোচনা করো ।
বাংলা কাব্য সাহিত্যে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অবদান
বাংলা কাব্যে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান
বাংলা কাব্যে বিষ্ণু দে-র অবদান আলোচনা
আধুনিক বাংলা কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের অবদান
গদ্যের বিকাশে বিদ্যাসাগরের অবদান