ধাতু ও তার প্রকারভেদ || ধাতু ও ক্রিয়াপদ
আমরা জানি কোনো বাক্যের প্রধান অঙ্গ হল ক্রিয়াপদ। সমাপিকা বা অসমাপিকা যে ক্রিয়াই হোক না কেন , ক্রিয়ার মূল অংশ থাকবেই – যার মধ্যে ক্রিয়ার মূল ভাবটি বজায় থাকে। অর্থাৎ ক্রিয়া-বিভক্তি বাদে যে অবিভিক্ত অর্থবহুল অংশ পাওয়া যায় তাকে ক্রিয়ামূল বা ধাতু বলে।
নীচের বাক্যগুলি দেখ –
রিমা বই পড়ে ।
রুবেল কবিতা লেখে । – এই দুটি বাক্যের সমাপিকা ক্রিয়াপদগুলি হল – ‘পড়ে’ এবং ‘লেখে’ । ক্রিয়াপদগুলি বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যাবে- পড়্+এ = পড়ে । লেখ্+এ =লেখে । এখানে বিভক্তি অংশ বাদে যে মূল অর্থযুক্ত অংশ পাওয়া যায় সে দুটি যথাক্রমে পড়্ ও লেখ্ । এই দুটিই হল ক্রিয়ামূল বা ধাতু।
অর্থাৎ- ধাতু কাকে বলে ?
ক্রিয়ার একটি মূল ও অপরিবর্তনীয় অর্থবহুল অংশ্কে বলে ধাতু। তাহলে, ধাতু কাকে বলে? — একটু বিস্তারিত করে বলা যায় :
যে ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি কাজ করার বা হওয়ার ভাব প্রকাশ করে এবং উপযুক্ত বিভক্তি প্রত্যয় ইত্যাদি গ্রহণ ক’রে ক্রিয়াপদ গঠন করে তাকে ধাতু বলে।
ধাতু চিহ্ন : ধাতু বোঝানোর জন্য ব্যাকরণে (√ ) এই রুট (Root) চিহ্নটি ধাতুর আগে বসিয়ে ধাতু বোঝানো হয়। তাই আমরা ‘√দেখ্’ লেখা দেখলে পড়ব ‘দেখ্ ধাতু’। কোনো ধাতুকে আলাদা করে লেখার সময় এই চিহ্নটি দেওয়া উচিত। তবে কেউ কেউ এই রুট চিহ্নের মাথায় আর একটি সরলরেখা দিয়ে দেন, যা ঠিক নয়। মনে রাখতে হবে: ধাতুর শেষে স্বর না থাকলে হস্ চিহ্ন দিতে হয়। যেমন: যা, খা, ঘুমা প্রভৃতি ধাতুতে হস্ হয় না, কিন্তু চল্, বল্, দেখ্ প্রভৃতি ধাতুতে অবশ্যই হস্ চিহ্ন দিতে হবে।
ধাতুর প্রকারভেদ
ধাতু কয় প্রকার ? এই প্রশ্নের উত্তর নানা জনে নানা রকম দিয়ে থাকেন। আসলে শব্দের মত ধাতুও প্রথমত তিন প্রকার : ১। একদল ধাতু বা সিদ্ধ বা মৌলিক ধাতু ২। বহুদল ধাতু বা সাধিত ধাতু এবং ৩। বহুপদ ধাতু।
১। একদল ধাতু বা সিদ্ধ বা মৌলিক ধাতুঃ
যে সব ধাতুকে ভাঙা যায় না, অর্থাৎ ভাঙলে কোনো অর্থবহ ভগ্নাংশ পাওয়া যায় না, তাদের মৌলিক বা সিদ্ধ ধাতু বলে।
যেমন : √চল্ , √দেখ্, √খা, √বল্ প্রভৃতি ধাতুকে ভাঙা যাচ্ছে না। জোর করে ভাঙলে কয়েকটি অর্থহীন ধ্বনি পাওয়া যাবে। অর্থপূর্ণ অংশ পাবো না। অনেক সময় মৌলিক ধাতুকে নিজের পছন্দসই জায়গায় ভাঙলে কাকতালীয় ভাবে অর্থপূর্ণ অংশ চলে আসে। কিন্তু তার সাথে আলোচ্য ধাতুটির অর্থের কোনো যোগ থাকে না এটা মনে রাখতে হবে। যেমন- √দেখ্, একটি ধাতু। যার অর্থ দেখা জাতীয় কাজ। এতাকে ভেঙ্গে ফেললে পাওয়া যাবে দে+খা । এগুলর অর্থ দেওয়া, খাওয়া বোঝালেও এরা কিন্তু দেখা কাজকে আর বোঝায় না। তাই দেখা ক্রিয়াটির ধাতু হল- √দেখ্, ‘দে’ বা ‘খা’ নয়।
২। বহুদল ধাতু বা সাধিত ধাতুঃ
সাধিত মানে ‘যাকে সাধন করা বা তৈরি করা হয়েছে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, এগুলি একাধিক অংশের সমষ্টি। সাধিত ধাতুকে ভাঙলে তার উপাদানগুলি পৃথক করা যাবে এবং তখনও তাদের অর্থ থাকবে।
যেমন: চোরে আমার মানিব্যাগটা হাতিয়েছে (হাতাইয়াছে)
হাতিয়েছে ক্রিয়ার ধাতু হ’ল : √হাতা
√হাতা ধাতুর মূলে আছে ‘হাত’ শব্দটি এবং তার সাথে যুক্ত হয়েছে ধাত্ববয়ব প্রত্যয় ‘আ’। (ধাত্ববয়ব প্রত্যয় যার সাথেই যুক্ত হোক, ধাতুই তৈরি করে।)
অর্থাৎ দেখা গেল একটি অর্থময় শব্দ ও একটি প্রত্যয় যোগে একটি ধাতু তৈরি হল। আরও বিভিন্ন উপাদানের সাথে ধাত্ববয়ব জুড়ে গিয়ে নতুন নতুন ধাতু তৈরি হয়। এই সবই সাধিত ধাতু।
সাধিত ধাতু কয় প্রকার ও কী কী ?
সাধিত ধাতু তিন প্রকারঃ
দেখে নাও👆 কিছু গুরুত্বপূর্ণ শব্দের সন্ধি
১। প্রযোজক ধাতু ২। নাম ধাতু ও ৩। ধ্বন্যাত্মক ধাতু
১। প্রযোজক ধাতু বা ণিজন্ত ধাতুঃ
মৌলিক ধাতুর সাথে ‘আ’ বা ‘ওয়া’ যুক্ত হয়ে ণিজন্ত বা প্রযোজক ধাতু গঠিত হয়। এটা এক ধরণের সাধিত ধাতু। যেমন- _/কর + আ =করা।
অর্থাৎ একটি ধাতুর সাথে ‘আ’ প্রত্যয় যোগে গঠিত যে ধাতু দ্বারা অন্যকে কাজ করানো বোঝায়, তাকে প্রযোজক ধাতু বলে।
যেমন: √দেখা (দেখানো অর্থে) , √শোনা (শোনানো অর্থে), √বলা (বলানো অর্থে) ইত্যাদি। এই ধাতুগুলিকে এখন বাক্যে প্রয়োগ করে দেখি :
মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন। (দেখাইতেছেন)
আমাকে সে একটা কবিতা শোনাল। (শোনাইল)
(* সংস্কৃতে এই ধাতুগুলি ‘ণিচ্’ প্রত্যয় যোগে গঠিত হয়। তাই এদের নাম ণিজন্ত। ণিজন্ত=ণিচ্+অন্ত। সমাস: ণিচ্ অন্তে যার : বহুব্রীহি। ণিচ্ প্রত্যয় বাংলা ভাষায় নেই। তাই বাংলা প্রযোজক ধাতুকে এই নাম দেওয়ার দরকার নেই। সংস্কৃতের অনুকরণে কেউ কেউ এই নামটি ব্যবহার করেন।)
২। নাম ধাতু
নাম শব্দ অথ্যাৎ বিশেষ্য, বিশেষণ, অব্যয় প্রভৃতি শব্দ কখনও কখনও প্রত্যয়যোগে, কখনওবা প্রত্যয় যুক্ত না হয়ে ক্রিয়ারূপে ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের ক্রিয়ার মূলকে নাম ধাতু বলে। যেমন- জুতা > জুতানো, বেত > বেতানো, হাত > হাতানো।
শব্দের সাথে ‘আ’ প্রত্যয় যোগে গঠিত ধাতুকে নামধাতু বলে।
যেমন: আমার বইগুলো কে হাতিয়েছে ? (হাতাইয়াছে)।
এখানে ‘হাতাইয়াছে’ ক্রিয়াপদটির মূলে আছে ‘হাতা’ ধাতু। হাতা= হাত + আ ।
‘হাত’ শব্দের সাথে ‘আ’ ধাত্ববয়ব প্রত্যয় যোগে ‘হাতা’ ধাতুর জন্ম হয়েছে। এর অর্থ হল হাতিয়ে নেওয়া।
এরকম বেশ কিছু নামধাতু বাংলায় দেখা যায়। যেমন:
লাঠি+আ=√লাঠা (লাঠানো/ লাঠিপেটা করা)
জুতা+আ=√জুতা (জুতানো/জুতাপেটা করা)
রাঙা+আ=√রাঙা (রাঙানো/ রঙ করা)
বিষ+আ= √বিষা ( যাহারা তোমার বিষাইয়েছে বায়ু।)
৩। ধ্বন্যাত্মক ধাতুঃ
ধ্বন্যাত্মক বা অনুকার শব্দের সঙ্গে ‘আ’ প্রত্যয় যোগে গঠিত যে অংশ ধাতুরূপে ব্যবহৃত হয় , তাদের ধ্বন্যাত্মক ধাতু বলে। যেমন- ফোঁসা, হাঁপা, মচ্মচা, টল্টলা।
যেমন: ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এল। এখানে ‘ঝমঝমিয়ে’ একটি অসমাপিকা ক্রিয়া। এর ধাতু √ঝমঝমা =ঝমঝম+আ (ঝমঝমা+ইয়া=ঝমঝমাইয়া>ঝমঝমিয়ে)।
একই রকম : গুনগুনিয়ে (গুনগুনাইয়া), টনটনাচ্ছে, কড়কড়াচ্ছে (কড়কড়াইতেছে) এই ক্রিয়াগুলির ধাতুকে ধ্বন্যাত্মক ধাতু বলে।
(মনে রাখতে হবে : টনটন কর্, কড়কড় কর্ –এই ধাতুগুলি ধ্বন্যাত্মক ধাতু নয়– এগুলি সংযোগমূলক বা যুক্ত ধাতুর মধ্যে পড়বে।)
৩। বহুপদ ধাতুঃ
একাধিক পদ নিয়ে গঠিত ধাতুকে বহুপদ ধাতু বলে। যেমন- বলিয়া ফেল্ , ডুব মার্ , ছড়া কাট্ ইত্যাদি। বহুপদ ধাতু দুই প্রকার। যথা-
১।যুক্ত ধাতু বা সংযোগমূলক ধাতু ও ২। যৌগিক ধাতু।
আরও দেখে নিতে পারো 👉 বাগধারা, প্রবাদ-প্রবচন
১। যুক্ত ধাতু বা সংযোগমূলক ধাতুঃ
সাধারণত √হ, √পা, √দে, √খা, √ মার, √কাট্, √কর্ ইত্যাদি নির্দিষ্ট কয়েকটি ধাতুর পর মৌলিক ধাতু যুক্ত হয়ে এই বহুপদ ধাতু গঠিত হয় । যেমন- √সাঁতার কাট্ , ‘√রান্না কর্’ , ‘√দেখা কর্’ , ‘√ঘৃণা কর্’ ইত্যাদি। মনে রাখতে হবে এই ধাতুর পূর্বের অংশটি নামপদ বা ক্রিয়াজাত বিশেষ্য পদ হবে।
(মনে রাখতে হবেঃ এক্ষেত্রেও মনে রাখতে হবে, দুটি অংশেরই অর্থ প্রকাশিত হলে তাকে যুক্ত ক্রিয়া বলা যাবে না। যেমন ‘কাজ করি’ বললে ‘ বললে এখানে যুক্ত ধাতু নেই। কিন্তু ‘দেখা করি’ বললে যুক্ত ধাতু আছে। )
২। যৌগিক ধাতু
একটি অসমাপিকা ক্রিয়ার সাথে একটি মৌলিক ধাতুর যোগে গঠিত যে ধাতুতে অসমাপিকা অংশটির অর্থই প্রকাশিত হয়, তাকে যৌগিক ধাতু বলে। যেমন- বলে ফেল্ , দেখে যা্ ইত্যাদি।
অর্থাৎ যৌগিক ধাতু গঠিত হবে একটি অসমাপিকা ক্রিয়া ও একটি ধাতুর যোগে এবং অর্থ প্রকাশ করবে অসমাপিকাটির।
যেমন : আমি বাঁশিটা ভেঙে ফেলেছি। (ভাঙিয়া ফেলিয়াাছি)
‘ভাঙিয়া ফেলিয়াছি’ একটাই ক্রিয়া। এর ধাতু ‘ভাঙিয়া ফেল্’। ( ‘ভাঙিয়া ফেলিয়াছি’ থেকে পরিবর্তনশীল অংশ ‘ইয়াছি’ বাদ দিলেই ধাতুটি বেরিয়ে আসছে।)
এখন দেখতেই পাচ্ছি, ‘ভেঙে ফেলেছি’ বললে ‘ভাঙা’ই বোঝায়, ‘ফেলা’ বোঝায় না।
এরকম আরও যৌগিক ধাতুর উদাহরণ :
√বসে পড়্, √শুয়ে পড়্ , √ খেয়ে নে , √দেখে ফেল্ ইত্যাদি।
(মনে রাখতে হবে : অসমাপিকা ও সমাপিকা ক্রিয়া পাশাপাশি অনেক সময়ই দেখা যায়। কিন্তু সব সময় যৌগিক ধাতু থাকবে না। দুটি মিলিয়ে শুধু অসমাপিকা (প্রথম অংশ)-টির অর্থ বোঝালে তবেই সেখানে যৌগিক ধাতু আছে বুঝতে হবে। যেমন : “খেয়ে এসো” বললে ‘খাওয়া’ এবং ‘আসা’ দুটিই বোঝানো হয়। তাই এখানে যৌগিক ধাতুর অস্তিত্ব নেই।)
আরো মনে রাখতে হবে এছারাও দুই প্রকার ধাতু।
১। পঙ্গু ধাতু বা অসম্পূর্ণ ধাতু।
মৌলিক ধাতুর মধ্যে আর এক ধরনের ধাতু আছে যাদের পঙ্গু ধাতু বা অসম্পূর্ণ ধাতু বলে। যে ধাতুকে সমস্ত কালের (অর্থাৎ অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কালের সবকটি বিভাগের) ক্রিয়াপদ রূপে ব্যবহার করা যায় না তাকে পঙ্গু ধাতু বলে।
পঙ্গু ধাতুর উদাহরণ: √বট্ , √নহ্ , √আছ্ প্রভৃতি। এই ধাতুগুলিকে শুধুমাত্র একটি কালেই ব্যবহার করা যায়। যেমন “ছেলেটি চালাক বটে।” অতীত কালে এমন বলা যায় না যে, “ছেলেটি চালাক বটিল।”
আরও দেখে নাও👉 বাক্য ও তার প্রকারভেদ/বাক্যতত্ত্ব
২। কর্মবাচ্যের ধাতু
যে ধাতু থেকে কর্মবাচ্যের ক্রিয়া গঠিত হয়, তাকে কর্মবাচ্যের ধাতু বলে।
কর্মবাচ্যে ক্রিয়ার রূপ অন্য রকম হয়। তাই কর্মবাচ্যের ধাতুটিও আলাদা ধাতু হিসাবে গণ্য হয়। মূল ধাতুর সঙ্গে ‘আ’ প্রত্যয় যোগে অথবা একটি কৃদন্ত বিশেষণের সঙ্গে একটি ধাতুর যোগে কর্মবাচ্যের ধাতু গঠিত হয়।
উদাহরণ : “বাবার কথাগুলো কঠিন শোনাচ্ছে।” এই বাক্যে ‘শোনাচ্ছে’ ক্রিয়ার ধাতু ‘শোনা’ কর্মবাচ্যের ধাতু।
সরকারের আদেশ নিয়মিত ভাবে পালিত হবে। – ‘পালিত হ’ কর্মবাচ্যের ধাতু।
চোরটি মানুষের হাতে প্রহৃত হয়েছে। — প্রহৃত হ – কর্মবাচ্যের ধাতু।
এই লেখাগুলো সব বাদ যাবে। — বাদ যা – কর্মবাচ্যের ধাতু।
ধাতু চেনার একটি সহজ উপায় আছে। যে কোনো ক্রিয়ার ধাতুটি খুঁজে বের করার জন্য ঐ ক্রিয়ার কাজটি তুচ্ছ মধ্যম পুরুষের অনুজ্ঞায় ব্যবহার করতে হয়। অর্থাৎ ‘তুই’-কে কর্তা করে ঐ কাজটি করতে আদেশ/অনুরোধ করতে হয়। যেমন : রাম যাচ্ছে— তুই যা।(‘যা’ ধাতু), সে আমাকে ছবি দেখিয়েছে— তুই ছবি দেখা।(√দেখা প্রযোজক ধাতু)।
প্রশ্নোত্তরে ধাতু ও ক্রিয়াপদ | ধাতু ও ক্রিয়াপদ এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর👇👇👇
১. প্রযোজক ধাতু কীভাবে তৈরি হয়? বাক্যে প্রয়োগ করে দুটি উদাহরণ দিন ।
উ: মৌলিক ধাতুর সঙ্গে আ প্রত্যয় যোগ করে প্রযোজক ধাতু তৈরি হয়।
যেমন- দেখ্ +আ = দেখা, শুন্ +আ = শুনা ইত্যাদি।
বাক্যে প্রয়োগ: মা শিশুকে চাঁদ দেখায় । সে আমাকে পড়ায়।
২: সাধিত ধাতু কাকে বলে ? এর নাম সাধিত কেন ?
উ: মৌলিক ধাতু বা শব্দের সঙ্গে প্রত্যয়নিস্পন্ন ধাতুকে বলা হয় সাধিত ধাতু বা বহুদল ধাতু। যেমন- দেখা, চলা ইত্যাদি।
সাধিত মানে হল যাকে সাধন করা বা তৈরি করা হয়েছে। এই ধাতুগুলি যেহেতু একাধিক অংশ নিয়ে তৈরি হয়েছে তাই এর নাম সাধিত ধাতু।
৩: উদাহরণ দিয়ে যুক্ত ধাতু ও যৌগিক ধাতুর পার্থক্য লিখুন।
উ: (ক) যুক্ত ধাতুর প্রথম অংশ বিশেষ্য বা বিশেষণ পদ নিয়ে গঠিত। যৌগিক ধাতুর প্রথম অংশ অসমাপিকা ক্রিয়া নিয়ে গঠিত হয়।
(খ) যুক্ত ধাতুর উদাহরণ হল- সেলাম কর্, ছাপ মার্ ইত্যাদি। যৌগিক ধাতুর উদাহরণ হল- বসিয়া পড়্, হাঁটিয়া চল্ ইত্যাদি।
৪: বাক্যে প্রয়োগ করে উদাহরণ দিন : নাম ধাতু, ধ্বন্যাত্মক ক্রিয়া , পঙ্গু ধাতু বা অসম্পূর্ণ ধাতু, যৌগিক ক্রিয়া ।
উ: নাম ধাতু- আকাশে বিদ্যুত চমকাচ্ছে।
ধ্বন্যাত্মক ক্রিয়া – সে হনহনিয়ে হেঁটে গেল।
পঙ্গু ধাতু – আমি এখন কলকাতায় আছি।
যৌগিক ক্রিয়া – রাম তার কথা শুনে হাসিতে লাগিল।
৫: নীচের বাক্যের সমাপিকা ক্রিয়াগুলির গঠনগত শ্রেণি নির্ণয় করুন:
ক: যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু।
উ: বিষাইছে = নাম ধাতুজ ক্রিয়া
খ: খোকা তুমি এখুনি শুয়ে পড়ো।
উ: শুয়ে পড়ো= যৌগিক ক্রিয়া
গ: কাউকে ঘৃণা করো না।
উ: ঘৃণা করো= যুক্ত ক্রিয়া
ঘ: যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে।
উ: পড়বে = মৌলিক ক্রিয়া
৬: দ্বিকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে ? বাক্যে প্রয়োগ করে দুটি দ্বিকর্মক ক্রিয়ার উদাহরণ দিন।
উ: বাক্যে উপস্থিত সমাপিকা ক্রিয়ার দুটি কর্মপদ ( মুখ্য ও গৌণ) থাকলে সেই ক্রিয়াপদকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে।
বাক্যে প্রয়োগ: (ক) শ্রেয়া তনুশ্রীকে বইটা দিল।
(খ) মাস্টারমশাই আমাদেরকে গল্প বললেন।
৭: ক্রিয়াবিভক্তি কাকে বলে ? কত প্রকার ও কী কী ?
উ: যে বিভক্তি ধাতু বা ক্রিয়ামূলের পরে যুক্ত হয়ে ধাতুকে ক্রিয়াপদে পরিণত করে তাকে ক্রিয়াবিভক্তি বলে।
যেমন- ইয়াছি, এন ইত্যাদি।
ক্রিয়াবিভক্তি তিন প্রকার । যথা- (ক) প্রকারবিভক্তি , (খ) কালবিভক্তি , (গ) পুরুষবিভক্তি।
৮: নীচের বাক্যেগুলির ক্রিয়াপদের প্রকার নির্ণয় করুন:
(ক) দেখেছি তোমাকে ফুলেরই আসরে।
উ: দেখেছি = পুরাঘটিত বর্তমান
(খ) মনটা উদাস হইয়া যাইত ।
উ: যাইত= নিত্যবৃত্ত অতীত
(গ) সে মিথ্যা কথাই বলল।
উ: বলল= সাধারণ অতীত
(ঘ) দেখেছিলাম আলোর নীচে।
উ: দেখেছিলাম = পুরাঘটিত অতীত
৯: ক্রিয়ার ভাব কাকে বলে? কত প্রকার ও কী কী উদাহরণসহ লিখুন।
উ: বাক্যে উপস্থিত সমাপিকা ক্রিয়ার যে বিশেষ অবস্থার দ্বারা ক্রিয়াপদের কর্তা বা কর্ত্রী সম্পর্কীয় তথ্য প্রকাশ পায় তাকে ক্রিয়ার ভাব বা Mood বলে।
ক্রিয়ার ভাব দুই প্রকার। যথা-
(ক) নির্দেশক ভাব= সূর্য পূর্বদিকে ওঠে।
(খ) অনুঞ্জা ভাব= ভগবান তোমার মঙ্গল করুন।
১০: উদাহরণ দিন: নিত্য অতীত, নিত্যবৃত্ত অতীত, পুরাঘটিত বর্তমান, নিত্য বর্তমান।
উ: নিত্য অতীত = সুমন লোকটিকে সাহায্য করিল।
নিত্যবৃত্ত অতীত = আমরা এই মাঠে ফুটবল খেলতাম।
পুরাঘটিত বর্তমান = রবীন্দ্রনাথ গীতাঞ্জলি রচনা করিয়াছেন।
নিত্য বর্তমান = রাম বিদ্যালয়ে যায় ।
………………………..
ধাতু ও ক্রিয়ার আলচনার PDF টি ডাউনলোড করে নাও 👇👇👇
প্রস্তুতির জন্য 👇 পরীক্ষাগুলি দিতে পারোঃ👇
১। সাহিত্যের ইতিহাস প্রাচীন ও মধ্যযুগ) MCQ
৪। কারক অ-কারক SAQ Practice SET
৫। শব্দভাণ্ডার MCQ Practice SET
৬। কাব্যসাহিত্যের ইতিহাস (আধুনিক যুগ) MCQ
৭। ধ্বনি ও বর্ণ MCQ practice SET
৮। মঙ্গলকাব্যের ইতিহাস SAQ SET
আরো দেখে রাখতে পারো👇👇👇
বাংলা কাব্যে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-র অবদান
বাংলা কাব্যে কবি-মাইকেল মধুসূদন দত্তর অবদান
বাংলা কাব্য-সাহিত্যে বুদ্ধদেব বসুর অবদান
বাংলা কাব্যে কবি মোহিতলাল মজুমদারের অবদান
বাংলা কাব্য-সাহিত্যে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত-র অবদান
বাংলা কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান
গীতিকবিতার ভোরের পাখি কাকে বলে হয় ? বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান আলোচনা করো ।
বাংলা কাব্য সাহিত্যে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অবদান
বাংলা কাব্যে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান
বাংলা কাব্যে বিষ্ণু দে-র অবদান আলোচনা
আধুনিক বাংলা কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের অবদান
গদ্যের বিকাশে বিদ্যাসাগরের অবদান
প্রবন্ধ সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান
প্রবন্ধ সাহিত্যে প্রমথ চৌধুরীর অবদান