You are currently viewing ঔপন্যাসিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

ঔপন্যাসিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

ঔপন্যাসিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদানঃ- 

বাংলা সাহিত্যের এক বিচিত্র প্রতিভাধর সাহিত্যিক হলেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর প্রকৃত নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় । ‘বিচিত্রা’ পত্রিকা প্রকাশিত ‘অতসীমামী’ গল্পের মাধ্যমে তিনি সাহিত্যের আঙিনায় প্রবেশ করেন । তিনি সেকালের সমাজ চিত্র অঙ্কন করতে গিয়ে দরিদ্র, নিপীড়িত মানুষের জীবন চিত্রকে অপূর্ব দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন । 

তাঁর রচিত উপন্যাস গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল — ‘দিবারাত্রির কাব্য’ (১৯৩৫) , ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ (১৯৩৬) , ‘পদ্মানদীর মাঝি’ (১৯৩৬) , ‘অমৃতস্য পুত্ৰাঃ’ (১৯৩৮) , ‘সহরতলী’ ( ১ম পর্ব ১৯৪০ ও ২য় পর্ব ১৯৪১) , ‘প্রতিবিম্ব’ (১৯৪৩) , ‘অহিংসা’ (১৯৪৮) , ‘চতুষ্কোণ’ (১৯৪৮) , ‘সোনার চেয়ে দামী’ (১৯৫১) , ‘আরোগ্য’ (১৯৫৩) , ‘হলুদ নদী সবুজ বন’ (১৯৫৬) ইত্যাদি ।

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘দিবারাত্রির কাব্য’ মূলত কাব্যধর্মী উপন্যাস । এই উপন্যাসে মানুষের অবচেতন মনের দিকটি দেখানো হয়েছে । এটি প্রেমভিত্তিক নরনারীর জীবনের জটিল হৃদয় সম্পর্কের চিত্র ।

‘পুতুলনাচের ইতিকথা’য় পল্লীজীবনের বর্ণনা রয়েছে । গাওদিয়া গ্রামের জীবনের জটিল ও সমস্যাপূর্ণ চিত্রণ এখানে পাওয়া যায় । পল্লীজীবনচিত্রণে রোমান্সের মায়াকে পরিহার করে দুঃখ বেদনা দারিদ্র্যক্লিষ্ট সাধারণ জীবনের কথা লেখক তুলে ধরেছেন । 

‘পদ্মানদীর মাঝি’ উপন্যাসে পদ্মাকেন্দ্রিক জেলে সমাজের সংগ্রামী জীবনের বর্ণনা রয়েছে । এখানে বৃত্তিজীবী মানুষের জীবন ও সমাজকে নিপুণ দক্ষতায় তিনি অঙ্কন করেছেন । এরমধ্যে কল্পনার রং নেই , আছে শুধু বাস্তব সমাজ বাস্তব জীবন । পূর্ব বাংলার আঞ্চলিক জনজীবনের ছবি এই উপন্যাসে রয়েছে । 

‘সহরতলী’তে পুঁজিপতি ও মেহনতী মানুষের দ্বন্দ্ব ফুটে উঠেছে । জননী’ উপন্যাস মাতৃত্বের মর্যাদা প্রতিপন্ন করে । ‘অমৃতস্য পুত্রাঃ’ এক নৈরাশ্যময় সমাজ ও জীবনের ছবি । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্ববর্তী সময়ে সমগ্র দেশে যে সমস্যাসংকট কালো বিকারগ্রস্ত অন্ধকার নেমে এসেছিল উপন্যাসে সেই কথা রূপ পেয়েছে । ‘চতুষ্কোণ’ উপন্যাসে যৌনকল্পনা ও মনস্তাত্ত্বিক বিকার ও জটিলতার ছবি সার্থক শিল্পরূপ প্রকাশ পেয়েছে । 

পরিশেষে একথা বলা যায় যে , বিষয় বা আঙ্গিকের দিক থেকে না হলেও অসামান্য গদ্যশৈলীর গুণে পরবর্তী সময়ের বাংলা ঔপন্যাসিকদের সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করতে পেরেছিলেন ।

আরো দেখে রাখতে পারো👇👇👇

বাংলা কাব্যে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে কবি-মাইকেল মধুসূদন দত্তর অবদান

বাংলা কাব্য-সাহিত্যে বুদ্ধদেব বসুর অবদান

বাংলা কাব্যে কবি মোহিতলাল মজুমদারের অবদান

বাংলা কাব্য-সাহিত্যে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান

গীতিকবিতার ভোরের পাখি কাকে বলে হয় ? বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান আলোচনা করো ।

বাংলা কাব্য সাহিত্যে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা কাব্যে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা কাব্যে বিষ্ণু দে-র অবদান আলোচনা

আধুনিক বাংলা কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের অবদান

গদ্যের বিকাশে বিদ্যাসাগরের অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে প্রমথ চৌধুরীর অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান

Leave a Reply