You are currently viewing ‘দ্বীপান্তরের বন্দিনী’/ কাজী নজরুল ইসলাম – কবিতার প্রশ্নোত্তর PDF

‘দ্বীপান্তরের বন্দিনী’/ কাজী নজরুল ইসলাম – কবিতার প্রশ্নোত্তর PDF

‘দ্বীপান্তরের বন্দিনী’/ কাজী নজরুল ইসলাম  কবিতার প্রশ্নোত্তর

১)’ দ্বীপান্তরের বন্দিনী’ কবিতায় কবির যে স্বদেশপ্রেমের প্রকাশ ঘটেছে তা আলােচনা করাে ।

উত্তর : কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘ফণীমনসা’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া ‘দ্বীপান্তরের বন্দিনী’ কবিতায় কবির পরাধীন ভারত জননীর স্বদেশপ্রেমের অসাধারণ প্রকাশ লক্ষ করা যায় । আলোচ্য কবিতায় কবি  মুক্ত ভারতের স্বপ্ন দেখেছেন এবং তুলে ধরেছেন ইংরেজ-শাসিত ভারতের করুণ রূপটি । 

     ∆ ব্রিটিশ শাসিত পরাধীনতার দুঃখ কবিকে ব্যথিত করেছে । জন্মভূমির সাথে একাত্ম হয়ে কবি উপলব্ধি করেছেন  পরাধীন ভারতমাতার ক্রন্দন ধ্বনি ।  ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তে ভারতবর্ষের স্বাধীনতার যে ভরাডুবি দেখা দিয়েছিল, তার জন্যে কবির  যে বিলাপ তা এই কবিতায় তীব্র স্বরে বর্ণিত হয়েছে । কবি নজরুল ইসলাম ছিলেন বিপ্লব-সমর্থক বিদ্রোহী কবি । তিনি স্বাধীনতার জন্যে আবেদন-নিবেদন নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না । তিনি নরমপন্থী নীতিতে বিশ্বাসীদের ‘শৌখিন পূজারী’  বলে ব্যঙ্গ করেছেন । কবির বিশ্বাস ব্রিটিশ সাম্রাজ্য কে ভেঙে ফেলতে সশস্ত্র বিদ্রোহের প্রয়োজন । কিন্তু ব্রিটিশ শাসকরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কারাগারে বন্দী করে অমানবিক নির্যাতন করত । তাই কবি বলেছেন 

“সিংহেরে ভয়ে রাখে পিঞ্জরে,

ব্যাঘ্রেরে হানে  অগ্নিশেল ।”

এই কবিতায় কবির বীর বিপ্লবীদের প্রতি শ্রদ্ধা, সহানুভূতি ও সমর্থন  ছত্রে ছত্রে প্রকাশিত হয়েছে ।  ব্রিটিশ শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে কবি প্রত্যক্ষ করেছেন স্বাধীনতার স্বপ্ন । 

শাঁখ বাজিয়ে কবি স্বাধীনতাকে বরণ করতে বলেছেন । কবির মতে স্বাধীনতা আর দূরাগত স্বপ্ন নয় ‘দ্বীপান্তরের ঘানিতে’ শুরু হয়ে গেছে যুগান্তরের ঘূর্ণিপাক ।  যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে দেশের বর্তমান পরাধীনতার বিনাশ হয়ে নতুন যুগের সূচনা হবে বলে কবি মনে করেন।

………………………………………

২) “হায় শৌখিন পূজারি ” –‘শৌখিন পূজারি’ কে ? তাঁকে কেন ‘শৌখিন’ বলা হয়েছে ? 

উত্তর : ‘দ্বীপান্তরের বন্দিনী’ কবিতায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম  স্বাধীনতা সংগ্রামী বা শখের দেশপ্রেমিকদের ‘শৌখিন পূজারি’ বলে অভিহিত করেছেন । 

     ∆ স্বাধীনতা আন্দোলনকারীদের মধ্যে কিছু এমন ব্যক্তি ছিলেন যারা  নিজেকে দেশবাসীর কাছে প্রকৃত দেশপ্রেমিক হিসেবে পরিচয় জাহির করে । কিন্তু তারা প্রকৃতপক্ষে ছিল মুখোশধারী নকল দেশপ্রেমিক । কবির ভাষায় এরাই হলেন শখের দেশপ্রেমিক । সকল পূজারী যেমন প্রকৃত বন্দনা করে না, তেমনই সকল দেশপ্রেমিকও দেশের মঙ্গল কামনা করে না । ভগবানের বন্দনার পিছনে যেমন  লুকিয়ে থাকে তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধি সাধনার বাসনা, তেমনই দেশের মঙ্গল কামনাও তাদের কাছে লোক দেখানো । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে সেই সব ব্যক্তি যেমন স্বার্থান্বেষী, সুযােগসন্ধানী তেমনই শখের  দেশপ্রেমিকরাও তাই । এরা প্রকৃত অর্থে শিকল ভাঙার জন্যে আন্দোলনকারীদের দলে যোগ দিলেও তাদের পথ অনুসরণ করেননি । তাদের মধ্যে সব সময়ই নিজ স্বার্থসিদ্ধির মনোভাব দেখা গেছে । এরা কখনই দেশের ও দশের মঙ্গলের জন্য প্রাণ বিসর্জন দিতে এগিয়ে আসত না । কবির মতে আন্দোলনের নামে ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠা ও নিজের আখের গোছানোর মানসিকতা সম্পন্ন  আন্দোলনকারীদের প্রয়োজন নেই । ব্রিটিশ শাসকের এরূপ অত্যাচারী  স্বরূপকে  বোঝাতে উক্ত মন্তব্যটি করেছিল । একই সাথে কবি বলতে চেয়েছেন, এই নরম-মনোভাবাপন্ন বিলাসী আন্দোলন কখনই ভারতবর্ষকে তার কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা এনে দিতে পারবে না।

………………………………………

৩) “আইন যেখানে ন্যায়ের শাসক, সত্য বলিলে বন্দী হই” –  অংশটির মধ্য দিয়ে  কবির কোন মনােভাব প্রতিফলিত হয়েছে ?

উত্তর :  নজরুল ইসলামের লেখা ‘দ্বীপান্তরের বন্দিনী’ কবিতাটি ‘ফণীমনসা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ।  সমকালীন ঘটনাই যে, সব লেখক-কবির রচনায় বিষয় হবে এমন কোনাে নিয়ম নেই । কারণ

একই ঘটনা সকলকে  নাড়া নাও দিতে পারে । তবে জোরপূর্বক কোনাে কবি যদি তাঁর রচনায় সমকালকে তুলে

ধরার চেষ্টা করেন, সে-রচনা শিল্পসম্মত নাও হতে পারে । যেমন কেউ প্রত্যক্ষ দারিদ্র্য উপলব্ধি না করে

কঠিন দারিদ্র্য, বাস্তবকে অনুভব করতে পারে না । তেমনই প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি না থাকলে

কবির লেখা ভাব-ভাষা অপরূপ হয়ে উঠতে পারে না ।

     ∆  নজরুল ইসলাম  বাস্তবিক এমন কবি, যিনি সমকালকে তুলে ধরবার জন্য কল্পনালােকে বিচরণ করেননি ।  ‘দ্বীপান্তরের বন্দিনী’ এইরকমই  একটি কবিতা, যা সমকালীন কবির

প্রত্যক্ষ-অভিজ্ঞতার অপরূপ-অদ্ভুত কোলাজ । 

এই কবিতায় কবি নজরুল ইসলাম বলেছেন, আইন এমন একটি  নিয়ম কিংবা সমাজ ও দেশের একধরনের বিধি যা সবসময় মানবসমাজের কল্যাণার্থে রচিত হয় । এই আইনের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত ন্যায় বা ন্যায়ের শাসক, যুক্তি ও

নীতির সুবিচারের কথা ভাবতে হয় । অর্থাৎ আইন কোনােভাবেই পক্ষপাত-দোষে দুষ্ট নয়, তা সবার জন্য সমান । তাই সেক্ষেত্রে কেউ সত্য কথা বললে  কোনাে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত নয় ।  কারণ সত্য কে সর্বদা মানা উচিত । কিন্তু ন্যায়ের শাসক সুবিচার না করে কবিকে বন্দি করে । ব্রিটিশ-শাসকগােষ্ঠীর

নানারকম অত্যাচারের অবসানে স্বাধীনতার স্বপ্ন তাই তাকে বারবার আন্দোলিত করেছে ।  যুগান্তরের ধর্মরাজের  আবির্ভাব কবি যেন মনের চোখ দিয়ে প্রত্যক্ষ করেছেন –

                    “পদ্মে রেখেছে চরণ-পদ্ম 

                             যুগান্তরের ধর্মরাজ “

আর তাঁকে  আহ্বানের জন্যই আকুল হয়ে উঠেছেন । যে দ্বীপান্তর স্বাধীনতার স্বপ্নকেও নির্বাসিত করেছিল, সেখানেই ‘যুগান্তরের ঘূর্ণিপাক’ ।  অর্থাৎ কবি দিনবদলের সম্ভাবনা প্রত্যক্ষ করেছেন ।কবির ভাষায় 

                    “দ্বীপান্তরের ঘানিতে লেগেছে

                                যুগান্তরের ঘূর্ণিপাক।।

…………………………………………

আরো দেখে রাখতে পারো👇👇👇

নাট্যসাহিত্যে উৎপল দত্তের অবদান

বাংলা নাটকে অমৃতলাল বসুর অবদান

বাংলা নাটকে মন্মথ রায়ের অবদান

নাট্যসাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের অবদান

নাট্যসাহিত্যে গিরিশচন্দ্র ঘোষের অবদান

নাট্যসাহিত্যে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের অবদান

নাট্যসাহিত্যে দীনবন্ধু মিত্র-র অবদান

নাট্যসাহিত্যে মধুসূদন দত্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে কবি-মাইকেল মধুসূদন দত্তর অবদান

বাংলা কাব্য-সাহিত্যে বুদ্ধদেব বসুর অবদান

বাংলা কাব্যে কবি মোহিতলাল মজুমদারের অবদান

বাংলা কাব্য-সাহিত্যে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত-র অবদান

বাংলা কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান

গীতিকবিতার ভোরের পাখি কাকে বলে হয় ? বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান আলোচনা করো ।

বাংলা কাব্য সাহিত্যে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা কাব্যে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা কাব্যে বিষ্ণু দে-র অবদান আলোচনা

আধুনিক বাংলা কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের অবদান

গদ্যের বিকাশে বিদ্যাসাগরের অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে প্রমথ চৌধুরীর অবদান

প্রবন্ধ সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান

কথাসাহিত্যে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

কথাসাহিত্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

কথাসাহিত্যে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান

উপন্যাস সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান

বাংলা ছোটগল্পে রবীন্দ্রনাথের অবদান

বাংলা উপন্যাসে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অবদান

বাংলা সাহিত্যে রাজশেখর বসু(পরশুরাম)-এর অবদান আলোচনা করো।

Leave a Reply