নাট্যকার মন্মথ রায়ের বিশিষ্টতা আলােচনা করাে । বাংলা নাটকে মন্মথ রায়ের অবদান আলোচনা করো। মন্মথ রায়ের নাটকগুলির পরিচয় দাও।
👉 রবীন্দ্রোত্তর যুগের বাংলা পৌরাণিক ও একাঙ্ক নাটকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাট্যকার মন্মথ রায় (১৮৯৯-১৯৮৮) । নাট্যসাহিত্য ও রঙ্গ মঞ্চের ইতিহাসে মন্মথ রায় এক বিশিষ্ট স্থানের অধিকারী । নাটকের মধ্য দিয়েই তার জীবনবােধ নানারূপে উৎসারিত হয়েছে । মঞনাট্য, চিত্রনাট্য, বেতার নাট্য ও রেকর্ড নাট্য — সর্বপ্রকার নাটক রচনাতেই তিনি তার নাট্য প্রতিভার সার্থক প্রয়োগ করে বাংলা নাট্যজগতের স্বনামধন্য নেতা হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন । বাংলা একাঙ্ক নাটকের শ্রেষ্ঠ রচয়িতা মন্মথ রায় । তিনি প্রায় আড়াই শত একাঙ্ক নাটক রচনা করেন । যার মধ্যে দিয়ে তার জীবনের গভীরতার সুদূর প্রসার ঘটে । তার প্রথম একাঙ্ক নাটক ‘মুক্তির ডাক’ (১৯২৩) নাটকটির মধ্য দিয়েই বাংলা একাঙ্ক নাটকের যাত্রা শুরু হয় । এরপর তিনি রচনা করেন রাজপুরী, বিদ্যুৎপর্ণা, বহুরূপী, সেমীরেমি, দেবাসুর, উল্কাপাত, অসাধারণ, টোটো, কাজলরেখা, ইত্যাদি । মন্মথ রায়ের ‘মুক্তির ডাক’ নাটকটি তীব্র ঘাত-প্রতিঘাতে পূর্ণ । মন্মথ রায়ের পূর্ণাঙ্গ নাটকের মধ্যে বিখ্যাত নাটক গুলি হল- ‘চাঁদ সদাগর’ (১৯২৭), ‘কারাগার’ (১৯৩০), ‘অশােক’ (১৯৩৩), ‘মীরকাশিম’ (১৯৩৮), ‘মমতাময়ী হাসপাতাল’ (১৯৫২), ‘ধর্মঘট’ (১৯৫৩), ‘অমৃত অতীত’ (১৯৬০) ইত্যাদি ।
‘কারাগার’(১৯৩০) নাটকটিকে তার শ্রেষ্ঠ নাটকরূপে অভিহিত করা হয় । পুরাণ কাহিনি অনুসারে জানা যায় সিংহাসন বজায় রাখার জন্য কংস সীমাহীন অত্যাচার চালাতেন, আর কংসের সেই অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য শ্রীকৃষ্ণ কারাগারে জন্মগ্রহণ করেন । পৌরাণিক রুপকার্থের আড়ালে নাটকের মূল বিষয়টি হল ইংরেজ শাসনাধীন সমগ্র ভারতবর্ষই হল কারাগার, অত্যাচারী কংস হল ইংরেজ শাসক আর কৃষ্ণ হল ভারতীয় বিপ্লবীর প্রতীক । পৌরাণিক ভাবনার মধ্যে যুগচেতনার সুতীব্র প্রকাশ ঘটেছে—পুরাণকথা স্বদেশভাবনায় পূর্ণতা লাভ করেছে ।
তাঁর রচিত পূর্ণাঙ্গ নাটক ধর্মঘট, পথে বিপথে, চাষির প্রেম, আজব দেশ—বিভিন্ন সাময়িক পত্র পত্রিকায় (১৯৫২-১৯৫৩) প্রকাশিত হয় । শ্রমিক জীবনের পটভূমিকা নিয়ে লেখা হয়েছে ‘ধর্মঘট’ । মধ্যবিত্তদের জীবন যাত্রার রূপ ধরা পড়েছে ‘পথে বিপথে’ নাটকে, কৃষকদের জীবন কাহিনী নিয়ে রচিত ‘চাষির প্রেম’, ব্যাঙ্গাত্মক গণজীবনের কাহিনী নিয়ে রচিত ‘আজব দেশ’ । ঐতিহাসিক নাটক ‘মীরকাশিম’ (১৯৩৮) বাংলার ইতিহাসের মহানায়ক মীরকাশিমের জীবন ও ভাবনাচিন্তার ওপর আধারিত ।
( বিষয় সংযুক্তি👉 নাট্যকার মন্মথ রায়, বাংলা নাটকে মন্মথ রায়ের অবদান, মন্মথ রায়ের নাটক, কারাগার নাটক, মুক্তির ডাক, বাংলা একাঙ্ক নাটকের স্রষ্টা, )
আরো দেখে রাখতে পারো👇👇👇
নাট্যসাহিত্যে উৎপল দত্তের অবদান
নাট্যসাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের অবদান
নাট্যসাহিত্যে গিরিশচন্দ্র ঘোষের অবদান
নাট্যসাহিত্যে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের অবদান
নাট্যসাহিত্যে দীনবন্ধু মিত্র-র অবদান
নাট্যসাহিত্যে মধুসূদন দত্ত-র অবদান
বাংলা নাটকে অমৃতলাল বসুর অবদান
বাংলা কাব্যে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত-র অবদান
বাংলা কাব্যে কবি-মাইকেল মধুসূদন দত্তর অবদান
বাংলা কাব্য-সাহিত্যে বুদ্ধদেব বসুর অবদান
বাংলা কাব্যে কবি মোহিতলাল মজুমদারের অবদান
বাংলা কাব্য-সাহিত্যে কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত-র অবদান
বাংলা কাব্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান
গীতিকবিতার ভোরের পাখি কাকে বলে হয় ? বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান আলোচনা করো ।
বাংলা কাব্য সাহিত্যে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অবদান
বাংলা কাব্যে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান
বাংলা কাব্যে বিষ্ণু দে-র অবদান আলোচনা
আধুনিক বাংলা কবিতায় কবি জীবনানন্দ দাশের অবদান
গদ্যের বিকাশে বিদ্যাসাগরের অবদান
প্রবন্ধ সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান
প্রবন্ধ সাহিত্যে প্রমথ চৌধুরীর অবদান
প্রবন্ধ সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান
কথাসাহিত্যে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান
কথাসাহিত্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান
কথাসাহিত্যে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান
উপন্যাস সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান
বাংলা ছোটগল্পে রবীন্দ্রনাথের অবদান